১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঘটতে পারে বড় রেল দুর্ঘটনা, যাত্রীরা পার হন দোয়া-দরুদ পড়ে

- ছবি : নয়া দিগন্ত

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথের মেয়াদ উত্তীর্ণ ঠাকুরাকোনা ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকায় যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় যাত্রী সাধারণ ভীষণভাবে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, বিগত ১৯২৭ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকার কর্তৃক ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করে। এই রেলপথের নেত্রকোনা সদর উপজেলার পূর্বাংশে ঠাকুরাকোনা কংস নদীর উপর একটি এবং মোহনগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় অপর একটি নদীর উপর রেল সেতু নির্মাণ করা হয়ে ছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদার বাহিনী যাতে রেল পথে সৈন্য ও গোলাবারুদ পরিবহন করতে না পারে সে জন্য ঠাকুরাকোনা রেল সেতুটি উড়িয়ে দেয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ডিনামাইট বোমা মারায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এতে রেল চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে।

স্বাধীনতার পর রেলসেতটিু সংস্কার করে রেল চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও রেল সেতুটি পুনর্নির্মাণ না করে দায়সারাভাবে সংস্কারের মাধ্যমে রেল চলাচল অব্যাহত রাখা হয়েছে। অনেক আগে থেকেই সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পিলারের ইট খসে পড়ে স্লিপারে ফাটল ও নাট, বল্টু উঠে নড়বড়ে হয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও কর্তৃপক্ষ তা দেখেও না দেখার ভান করায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাত্রী সাধারনকে চলাচল করতে হচ্ছে।

এমতাবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেলপথে এই সেতুটি পাড়ি দেয়ার সময় আতঙ্কিত যাত্রীরা দোয়া-দরূদ পড়তে থাকেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার আবেদন-নিবেদন করার পরেও নীরব রয়েছেন। যে কোন সময় এই রেল সেতুটি মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জীবনহানির আশঙ্কায় যাত্রীরা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

এই রেলপথে নিয়মিত চলাচলকারী মোহনগঞ্জের তেঁতুলিয়া গ্রামের মাস্টার সৈয়দ আব্দুল হক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৈমুর রেজা বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদে নিয়মিত আমাদের এই রেলপথে চলাচল করতে হয়। যখন এই সেতুর উপর ট্রেন উঠে তখন ভীষণ কাঁপন শুরু হয়। ভয়ে আত্মা ধরফর করতে থাকে। তখন দোয়া-দরূদ পড়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। সাম্প্রতিককালের ট্রেন দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীরা আরো শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

নেত্রকোনা বড় স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোঃ রফিক উদ্দিন রেলসেতু ঝুকিপূর্ণের কথা স্বীকার করে বলেন, ঠাকুরাকোনা রেলসেতুটি দীর্ঘদিনধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। রেলসেতু সংস্কার ও নিমার্ণ করার বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব রেলের প্রকৌশল বিভাগের। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমাদের কি আর করার আছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল