২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছোটবেলায় দুহাত হারালেও সাহস-আগ্রহ হারায়নি স্বর্ণা

পরীক্ষা কেন্দ্রে স্বর্ণা - ছবি : নয়া দিগন্ত

দুই হাতের কনুই পর্যন্ত নেই, তাতে কী! অধম্য সাহস আর চেষ্টা তাকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করতে পারেনি। অন্য সহপাঠীদের সাথে পাল্লা দিয়েই এবার ভোকেশনাল বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে স্বর্ণা।

বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কনুই দিয়ে কলম ঘুরিয়ে পরীক্ষায় খাতায় লিখে চলছে স্বর্ণা।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ডিএস কামিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে চলমান এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে রাজিবপুর ইসলামিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের ওই ছাত্রী।

উপজেলার চরপাড়া গ্রামের দুলাল চন্দ্র সরকারের দুই মেয়ের মধ্যে ছোট স্বর্ণা। ছোটবেলায় বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আক্রান্ত হলে দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে স্বর্ণার। মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অল্প জমি আর ভিটেমাটি হারাতে হয়েছে তার পরিবারকে। অন্যের আশ্রয়ে কোনোমতে দিন পার করা পরিবারকে তার শিক্ষার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরমধ্যেও শিক্ষক হতে স্বপ্নে বিভোর এই স্বর্ণা শত প্রতিবন্ধকতা পেছনে ঠেলে এগিয়ে চলেছে। দু’হাতের কনুই দিয়েই আলোকিত করছে চার পাশ। পাড়ার ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণা।

পরীক্ষা কেন্দ্রের অন্য সব সুস্থ পরীক্ষার্থীর সাথে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বর্ণা রানীও পরীক্ষা দিচ্ছে। অন্য সহপাঠীদের সাথে বসেই কনুই দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখছে সে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় অন্য সহপাঠীদের সাথে পাল্লা দিয়ে অনবরত লিখে চলেছে স্বর্ণা।

পরীক্ষা শেষে কথা হয় স্বর্ণা রানী সরকারের সাথে। স্বর্ণা জানায়, ছোটবেলায় দু’হাত হারিয়ে দুঃসহ মানসিক যন্ত্রণায় সে যখন কাতর তখন তাকে ভরসা দেন তার মা স্বপ্না রানী সরকার। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর স্বর্ণার কবজিতে কলম ধরিয়ে লেখানোর চেষ্টা শুরু করেন মা। কিছুদিন চেষ্টার পর সে কনুই দিয়ে লিখতে শুরু করে। কনুই দিয়ে লিখেই পিইসি পরীক্ষায় ৩.২৫, জেএসসিতে ৪.৬০ এবং এসএসসিতে ৩.৮৯ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

দারিদ্র্যতা আর হাত হারানো এ দুই প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়ালেখা বন্ধ করেনি স্বর্ণা। এএসসি পাস করে স্থানীয় রাজিবপুর ইসলামিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজে ভর্তি হয় স্বর্ণা। বাড়িতে বসেই ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে তার সামান্য টাকা দিয়েই নিজের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছে।

স্বর্ণা জানায়, যারা তার মতো প্রতিবন্ধী তাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে সে। লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হয়ে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়। তবে তার এ আশা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছে স্বর্ণা। দেশের সকল মানুষের কাছে আশীর্বাদ ও সহযোগিতা কামনা করেছে সে।


আরো সংবাদ



premium cement
তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন চান্দিনায় পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যু

সকল