জামালপুরে ৫টি আসনে প্রার্থী ২৮, ২টি আসনে বিএনপির প্রার্থী শূন্য

রাত পোহালেই আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটগ্রহণ চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে জামালপুরের পাঁচটি আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ জন প্রার্থী। তবে জামালপুর-১ ও জামালপুর-৪ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশে এবার নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েছেন জামালপুর-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত ও জামালপুর-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম।

এদিকে মিল্লাতের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় ওই আসনে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গণফোরামের ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হককে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে জামালপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এ ছাত্তার এবং জামালপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আল মাহমুদ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িঁয়েছেন।

জানা গেছে, জামালপুরের পাঁচটি আসনে এবার মোট ১৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৫০ হাজার ২৬৪ এবং নারী ভোটার ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫ জন।

এবার জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে জামালপুর-৫ আসনে। এ আসনে ভোটার ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার রয়েছে ৯২ হাজার ৭২৯ জন। ইতোমধ্যে সাতটি উপজেলার সাতজন সহকারী রিটানিং কর্মকর্তাদের কাছে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করেছেন জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা। সহকারী রিটানিং কর্মকর্তারা পাঁচটি আসনের ৫৮১টি ভোটকেন্দ্রে আজ শনিবার ওইসব নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করবেন।

পাঁচটি আসনে রয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার ৫৮১ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৩ হাজার ২৩৫ জন এবং পোলিং অফিসার ৬ হাজার ৪৭০ জন। পাঁচটি আসনে ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি আসনে দুই জন করে মোট ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে- দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ১১২ জন র‌্যাব সদস্য (প্রতি আসনে দুইটি করে র‌্যাবের টহল দল থাকবে), বিজিবি ২০১ জন এবং সেনা সদস্য সাত প্লাটুন (তিন শতাধিক)।

জামালপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। তারা হলেন-আবুল কালাম আজাদ (আওয়ামী লীগ/নৌকা প্রতীক), সিরাজুল হক(গণফোরাম/উদীয়মান সূর্য প্রতীক), জাহাঙ্গীর আলম (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি/কাঁঠাল প্রতীক), মোঃ সুরুজ্জামান (ন্যাপ/কুড়েঘর প্রতীক) ও আব্দুল মজিদ (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ/ হাতপাখা প্রতীক)।

এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৮০১ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৫ জন। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯২ হাজার ৮০৭ জন এবং নারী ভোটার ৯৫ হাজার ৮০৬ জন। বকশীগঞ্জ উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৭ হাজার ৯৯৪ জন এবং নারী ভোটার ৭৯ হাজার ৬৭৯ জন। এ আসনে ১২০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। মোট ভোট কক্ষ থাকবে ৬৩১টি। এর মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৬৯টি ভোট কেন্দ্রে ৩২৬টি ভোট কক্ষ এবং বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৫১টি ভোট কেন্দ্রে ৩০৫টি ভোট কক্ষ থাকবে।

জামালপুর-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন- ফরিদুল হক খান (আওয়ামী লীগ/নৌকা প্রতীক), এ. ই. সুলতান মাহমুদ বাবু (বিএনপি/ধানের শীষ প্রতীক), মনজুরুল আহসান খান (সিপিবি/কাস্তে প্রতীক) এবং মিনহাজ উদ্দিন (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ/ হাতপাখা প্রতীক)।
এ আসনে ভোটার দুই লাখ ২১ হাজার ১৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ১১ হাজার ৩২০ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৯ হাজার ৮৬৬ জন। এ আসনে ৮৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। মোট ভোট কক্ষ থাকবে ৪৭১টি।

জামালপুর-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন প্রার্থী। তারা হলেন- মির্জা আজম (আওয়ামী লীগ/নৌকা প্রতীক), মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল (বিএনপি/ধানের শীষ প্রতীক), মুনজুর আহাদ হেলাল (জাতীয় পার্টি/লাঙ্গল প্রতীক), শিবলুল বারী রাজু (সিপিবি/কাস্তে প্রতীক), আব্দুল হাকিম শান্তি (জাকের পার্টি/গোলাপ ফুল প্রতীক) এবং বোরহান উদ্দিন (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ/ হাতপাখা প্রতীক )।
এ আসনে ভোটার চার লাখ ২৫ হাজার ১৮৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ১৩ হাজার ১৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১২ হাজার ১৭৪ জন।

মাদারগঞ্জ উপজেলায় ভোটার এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৪ হাজার ৪০১ জন এবং নারী ভোটার ৯৩ হাজার ২৪২ জন। মেলান্দহ উপজেলায় ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৩ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ১৮ হাজার ৯৩২ জন। এ আসনে ১৩৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোট কক্ষ থাকবে ৮০৫টি। এর মধ্যে মাদারগঞ্জ উপজেলায় ৫২টি ভোট কেন্দ্রে ৩৫০টি ভোট কক্ষ এবং মেলান্দহ উপজেলায় ৮৭টি ভোট কেন্দ্রে ৪৫৫টি ভোট কক্ষ থাকবে।

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন- মুরাদ হাসান (আওয়ামী লীগ/নৌকা প্রতীক), মুখলেছুর রহমান বস্তু (জাপা/লাঙল প্রতীক), সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল (বিএনএফ/টেলিভিশন প্রতীক) এবং আলী আকবর (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ/ হাতপাখা প্রতীক)। এ আসনে ভোটার দুই লাখ ৫২ হাজার ৭৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ২৫ হাজার ৬৯৫ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ২৭ হাজার ৫৩ জন। এ আসনে মোট ৮৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। মোট ভোট কক্ষ থাকবে ৪৬০টি।

জামালপুর-৫ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নয়জন প্রার্থী। তারা হলেন- মোজাফফর হোসেন (আ.লীগ/নৌকা প্রতীক), শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন (বিএনপি/ধানের শীষ প্রতীক), শেখ মো. আক্কাছ আলী (সিপিবি/কাস্তে প্রতীক), বাবর আলী খান (জাতীয় পার্টি-জেপি/বাইসাইকেল প্রতীক), আব্দুল করিম সরকার (বিএনএফ/টেলিভিশন প্রতীক), সৈয়দ ইউনুছ আহাম্মেদ (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ/ হাতপাখা প্রতীক), আল-আমীন জু-রহমান (বাংলাদেশ মুসলিম লিগ/হারিকেন প্রতীক), বেলাল উদ্দিন (খেলাফত আন্দোলন/বটগাছ প্রতীক) এবং নজরুল ইসলাম আকন্দ (জাকের পার্টি/গোলাপ ফুল প্রতীক)।

এ আসনে ভোটার চার লাখ ৬৯ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৪৩৪ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৪০ হাজার ৪৯৭ জন। এ আসনে মোট ১৫০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। মোট ভোট কক্ষ থাকবে ৮৬৮টি।

এদিকে নির্বাচন প্রসঙ্গে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।