২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈশ্বরগঞ্জে জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সচিবের মামলা

-

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি ইউনিয়নের সচিবের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় তার বিরুদ্ধে পরিষদের সচিব মামলা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী।

জানা গেছে, উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী ৪ নভেম্বর দুপুরে নিজ এলাকার একটি জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা চাওয়ায় তিনি নিজে পরিষদে যান ও সচিবের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে তার সাথে তর্কে লিপ্ত হন সচিব। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আলী পরিষদ ছেড়ে চলে আসেন। কিন্তু ১৩ নভেম্বর জানতে পারেন যে, পরিষদের সচিব তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দান, সবিচকে লাঞ্ছিত ও মারধর, অফিসের কাগজপত্র তছনছ করে ছিড়ে ফেলা ও খুন জখমের হুমকি দিয়েছেন বলে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা ও জন্ম নিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে কিনা সে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা ২০ নভেম্বর এলাকায় গেলে সেখানে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে সচিবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় ইউনিয়নটির বুনিয়াদপুর গ্রামের মঞ্জুরুল হক জানান, তার ছেলে রামিমের (৪) জন্মনিবন্ধন করতে সচিবকে ৮শ’ টাকা দিতে হয়েছে। তারপরও ঘুরতে হয়েছে ১৫ দিন। লক্ষিপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন জানান, তার ছোট বোন জিবুন্নাহারের (১৫) জন্মনিবন্ধন করতে ৫শ’ টাকা দিতে হয়েছে।

একই গ্রামের সাহেদ আলী জানান, তার ছেলে রাকিবুলের (১২) জন্মনিবন্ধন করতে ৫শ’ টাকা দিতে হয়েছে। এখন আরেক ছেলে ফয়সালের (৮) জন্মনিবন্ধন করতে গেলে এক হাজার টাকা দাবি করে। তিনি দরিদ্র হওয়ায় ওই টাকা না দিতে পেরে জন্মনিবন্ধন করাতে পারেননি। তাই ছেলেকে স্কুলে ভর্তিও করাতে পারেননি।

রামচন্দ্রপুর গ্রামের শহিদুল্লাহ জানান, তার ছেলে মেহেদী হাসানের (১০) জন্মনিবন্ধন করাতে গেলে তার কাছে এক হাজার টাকা চায় সচিব। তিনি তিনশ’ টাকার বেশি দিতে পারবেন না বললে তিনশ’ ষাট টাকা দিয়ে নিবন্ধন ফরম আনেন। কিন্তু সেই নিবন্ধনে ইচ্ছা করে ভুল করে মায়ের নাম ও ছেলের নামের স্থলে মেহেদী হাসান লিপিবন্ধ করে দেয়। পরের দিন ভুল সংশোধন করতে গেলে তার কাছ থেকে আরো ২শ’ টাকা নেয়া হয়।

এভাবে সেখানে উপস্থিত আরো অর্ধশতাধিক লোক অভিযোগ করতে থাকেন।

তবে পরিষদের সচিব আব্দুল আউয়াল সরকার নির্ধারিত ফি ব্যতীত অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট সদস্য বার বার ফি জমা না দিয়ে জন্মনিবন্ধন নিয়ে যান বলে তার সাথে বাকবিতন্ডা হয়। পরে ওই সদস্য উত্তেজিত হয়ে তার উপর হামলা করে। বিষয়টি নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে তিনি অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ করছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।


আরো সংবাদ



premium cement