২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

”অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকায় গণধোলাই খেলেন যুবলীগ সভাপতি” : এবার দল থেকেই অব্যাহতি

হাত বাঁধা অবস্থায় যুবলীগ সভাপতি - ছবি : সংগৃহীত

গত কাল ২৬.১০.১৮ নয়দিগন্তের অনলাইন সংস্করণে ”অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকায় গণধোলাই খেলেন যুবলীগ সভাপতি” শিরনামে সংবাদপ্রকাশের পর দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় শেরপুরের নালিতাবাড়ী যুবলীগ সভাপতিকে।

দুই সন্তানের জননীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে গণধোলাইয়ের পর বেধে রাখার ঘটনায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অভিযোগে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে যুবলীগ নেতা শাহীনুর ইসলাম মিলনকে। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নালিতাবাড়ী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানায়, গত ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে নালিতাবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহীনুর ইসলাম মিলন (৩২) মরিচপুরান ইউনিয়নস্থ ভোগাইরপাড় গ্রামে ঢাকায় কর্মরত জনৈক ব্যক্তির স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ায়। এসময় আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা এলাকাবাসী মিলনকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দেয় এবং হাত বেধে বাড়ির আঙ্গিনায় বসিয়ে রাখে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মধ্যরাতে আশপাশের শত শত উৎসুক মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় জমায়। পরে সঠিক বিচারের আশ্বাসে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আটক মিলনকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর সাথে মিলনের বেশ কিছুদিন যাবত পরকীয়া চলে আসছিল বলে জানান এলাকাবাসী।

এদিকে এ ঘটনার ছবিসহ নয়দিগন্তের অনলাইন সংস্করন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে ২৬ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সংগঠনটির কার্যালয়ে জরুরি সভা আহবান করা হয়। সভায় ১২ ইউনিয়ন যুবলীগের নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে শাহীনুর ইসলাম মিলনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহাতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, মিলন একাধিক অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। কিছুদিন আগে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল গোপনে কিনে তা বিক্রির অভিযোগ উঠে। এছাড়াও কিছুদিন আগে মিলনসহ একাধিক যুবক মাদকদ্রব্যসহ বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটকের ঘটনাও ঘটেছে।

 

শেষ হলো খ্রীষ্টভক্তদের দুই দিনব্যাপী ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব
আব্দুল মোমেন, নালিতাবাড়ী (শেরপুর)
শুক্রবার দুপুরে সমাপনী খ্রীষ্টযাগের (মূল প্রার্থনা) মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বারমারী সাধু লিওর খ্রীষ্টান ধর্মপল্ল¬ীতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপি ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব।
‘ত্যাগ, সেবা ও প্রেমের রাণী ফাতেমা রাণী, মা মারিয়া’ এই মূল সুরে ২১তম এ তীর্থ উৎসবে যোগ দিয়েছেন প্রায় ২০ হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক খ্রীষ্টভক্ত।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় পূণর্মিলন ও পাপ স্বীকার এবং ৪টায় রাজশাহী ক্যাথলিক খ্রীষ্ট ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও এর পবিত্র খ্রীষ্টযাগের মধ্যদিয়ে তীর্থ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে রাত ৮টায় আলোক শোভাযাত্রা, আরাধ্য সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান ও রাত ১২টায় নিশি জাগরণের মধ্যদিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খ্রীষ্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। এসময় প্রায় ১ কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার প্রতিকৃতির সামনে সমবেত হয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা জানিয়ে অকৃপন সাহায্য প্রার্থনা করেন ক্যাথলিক ভক্তরা। শুক্রবার সকাল ৮টায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম ও বেলা ১২টায় মহা খ্রিষ্টযোগের মধ্যদিয়ে দুই দিনব্যাপি তীর্থ উৎসবের সমাপ্তি হয়।

এবারের তীর্থযাত্রায় বিশ্ব মানবতার কল্যাণে বিশেষ করে বাংলাদেশের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে দিন দিন তীর্থ উৎসব একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হচ্ছে বলে জানান তীর্থযাত্রার উদ্বোধক।
তীর্থ উৎসবে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসারসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল।

উল্লেখ্য, শেরপুরের ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থানটি পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরনে ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয়। সেই থেকেই ফাতেমা রাণীর করুণা ও দয়া লাভের আশায় বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা এখানে সমবেত হয় নিজেদের পাপ মোচনের জন্য।


আরো সংবাদ



premium cement