২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রদ্ধা জানাতে এসে কাঁদলেন আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে, চাইলেন দোয়া

আইয়ুব বাচ্চু (ইনসেটে ছেলে আহনাফ তাজোয়ার) - সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু যখন মারা যান, তখন স্ত্রী এবং দুই সন্তান ছিলেন দেশের বাইরে। শুক্রবার রাতে দেশে হাসপাতালের মর্গে বাবার লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন একমাত্র ছেলে আহনাফ তাজোয়ার। শনিবার দুপুরে ব্যান্ড লিজেন্টের লাশ নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামে। সেখানে বাবার জন্য সবার জন্য দোয়া চেয়ে তাজোয়ার বলেন, ‘সবার কাছে আমার একটাই চাওয়া, আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। তার যেন বেহেশত নসিব হয়। আর তাকে নিয়ে কারও মনে কোনো ক্ষোভ থাকলে মাফ করে দেবেন।’ 

এর আগে  শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের পূর্ব মাদারবাড়িতে আইয়ুব বাচ্চুর নানার বাড়িতে তাজোয়ার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। সেখানে আইয়ুব বাচ্চুর সাথে সবার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার বাবা হয়তো আপনাদের জন্য সর্বোচ্চটা দিতে পারেননি। কিন্তু তিনি আপনাদের অফুরন্ত ভালোবাসা দিয়েছেন। তিনি অনেক করেছেন। আপনাদের কাছে শেষ কথা, আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

তাজোয়ার কথা বলার আগে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর মেয়ে ফাইরুজ সাফরাকে সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তিনি বলেছেন, ‘কিছু বলার মতো অবস্থা আমার নেই। প্লিজ, আমাদের একটু সহযোগিতা করুন। আমরা অবশ্যই কথা বলব।’

ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর লাশ শনিবার সকালে আকাশপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর লাশ নিয়ে যাওয়া ইউএস বাংলার উড়োজাহাজটি অবতরণ করে। বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর লাশ গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীন। আইয়ুব বাচ্চুর লাশের সাথে ঢাকা থেকে গেছেন তার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর স্বজনেরা।

শুক্রবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজোয়ার কানাডা থেকে আর মেয়ে ফাইরুজ সাফরা রাত দেড়টায় অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। এরপর বিমানবন্দর থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। যোখানে শব হিমঘরে আইয়ুব বাচ্চুর লাশ রাখা হয়। এ সময় তাদের সাথে আরও ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার। বাবার লাশ দেখে ছেলেমেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এলআরবির ব্যবস্থাপক শামীম জানিয়েছেন, বিমানবন্দর থেকে আইয়ুব বাচ্চুর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম শহরের পূর্ব মাদারবাড়িতে। সেখানে নানার বাড়িতে বড় হয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু। শনিবার বাদ আসর এখানে জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে তার চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদের মাঠে এই শিল্পীর লাশ রাখা হয়েছে। দুপুর থেকে এখানে তার প্রতি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। সন্ধ্যায় তাকে চৈতন্য গলি কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করার কথা।

গত বৃহস্পতিবার সকালে না-ফেরার দেশে চলে যান আইয়ুব বাচ্চু। শুক্রবার বাদ জুমা জাতীয় ঈদগাহে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে লাশ নেওয়া হয় তার গানের স্টুডিও মগবাজারে ‘এবি কিচেনে’। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর লাশ নেওয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানে তৃতীয় জানাজা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার লাশ রাখা হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

 


আরো সংবাদ



premium cement