১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রিয় শিল্পীকে বরণ করে নিতে হাজারও মানুষের ঢল

প্রিয় শিল্পীকে দেখতে ভক্তদের ভিড়। - ছবি: সংগৃহীত

শনিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় আইয়ুব বাচ্চুর লাশ। সেখানে ১০টা ৫০ মিনিটে লাশটি গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পরে ১১টা ১০ মিনিটে লাশবাহী গাড়ি দক্ষিণ পূর্ব মাদারবাড়িতে আইয়ুব বাচ্চুর নানার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়।

এদিকে প্রিয় শিল্পীকে একনজর দেখতে দর-দূরান্ত থেকে দক্ষিণ পূর্ব মাদারবাড়িতে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন শিল্পীর নানার বাড়িতে ভীড় না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদ ময়দানে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তার কফিন সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে বলে জানান সিটি মেয়র।

আইয়ুব বাচ্চুকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল ৯টা থেকে লাইন ধরে অপেক্ষা করছে হাজার হাজার ভক্ত। শুরু থেকেই বিশৃঙ্খলা এড়াতে ভক্তদের লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য করে পুলিশ। পুরো এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।

গত (১৮ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান আইয়ুব বাচ্চু। শুক্রবার বাদ জুমা জাতীয় ঈদগাহে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

আজ বিকাল ৩টায় কফিন নিয়ে যাওয়া হবে চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে এক দফা জানাজা হবে, সবাই শ্রদ্ধা জানাবেন এই শিল্পীর প্রতি।

এরপর নগরীর চৈতন্য গলিতে মায়ের কবরের পাশে শায়িত হবেন আজীবন গিটার আর গান নিয়ে মেতে থাকা আইয়ুব বাচ্চু। চৈতন্য গলির বাইশ মহল্লা কবরস্থানে ইতোমধ্যে দাফনের সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।

 

আরো দেখুন : অ্যা শো মাস্ট গো অন : জেমস

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ২০:২০


দেশের কিংবদন্তি ব্যান্ডসংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর সময় তার অন্যতম ঘনিষ্ঠজন ও প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী জেমস ছিলেন বরগুনায় একটি উন্নয়ন কনসার্টে। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকায় যখন সংগীতভক্তদের মধ্যে শোকের গভীর ছায়া তখন জেমস গান করছেন দূরের এক মঞ্চে। গানতো নয় যেনো কান্নার আসর! মঞ্চে উঠে এই ‘নগর বাউল’ ভেজা গলায় বললেন, ‘আজকের… আজকের এই অনুষ্ঠানটা উৎসর্গ করছি… বাংলাদেশের কিংবদন্তি গায়ক আইয়ুব বাচ্চুকে।’

‘আজকে এই অনুষ্ঠানটা করার একদম ইচ্ছা ছিলো না। কিন্তু, বহু বছর আগের একটা গল্প বলি… তখন আমি আর বাচ্চু ভাই একসঙ্গে আড্ডা মারতাম। তখন আমরা হাসতে হাসতে বললাম, আমাদের এই শিল্পীদের একটা প্রবাদ আছে ইংরেজিতে… যে, অ্যা শো মাস্ট গো অন। তো তাই চেষ্টা করবো…।’


কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় জেমসের কণ্ঠরোধ হয়ে আসছিল। এরপর গিটার বাজাতে শুরু করেন।  মুখের এক্সপ্রেশন আঙুলের মধ্য দিয়ে গিটারের তারে আছড়ে পড়ছিল। গিটার থেকে ছিটকে বেরোচ্ছিল কান্না। জেমস কান্না আড়াল করতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন, গিটার আড়াল করতে দেয়নি, ছটি তার কেঁদে যাচ্ছিল... গিটার কাঁদতে জানে... 

এরপর, তিনি কয়েক মিনিট গিটারে তোলেন বেদনার সুর। ‘কবিতা’ গানের কয়েকটি লাইন ভেঙ্গে ভেঙ্গে গাওয়ার পর দর্শকদের কাছে ১০ মিনিটের জন্যে ছুটি চেয়ে নেমে আসেন মঞ্চ থেকে।

বাংলা ব্যান্ড জগতে আইয়ুব বাচ্চুর খুব কাছের মানুষ হিসেবে জেমসের নাম চলে আসে। আইয়ুব বাচ্চুর নাম উচ্চারিত হলে জেমসের নাম উচ্চারিত হয়, জেমসের নাম উচ্চারিত হলে আইয়ুব বাচ্চুর নাম উচ্চারিত হয়। দুজনই একটা সময়ে ছিলেন ফিলিংসে। আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে জেমসের পরিচয় ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে। এরপর দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্ক। এক সঙ্গে করেছেন অনেক কনসার্ট, অনেক অনুষ্ঠান। প্রিয় মানুষ আইয়ুব বাচ্চুর বিদায় যেন মেনে নিতে পারছিলেন না জেমস। 

জেমস বলেন,আমাদের সম্পর্কের এই গভীরতার কথা কখনো বোঝাতে পারব না। কেউ হয়তো জানবেও না যে আমাদের একের হৃদয়ে অপরের জন্য কতটা জায়গা রাখা আছে। আমাদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। 


আরো সংবাদ



premium cement