১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শনিবার মায়ের কবরের পাশে আইয়ুব বাচ্চুর দাফন 

শনিবার মায়ের কবরের পাশে আইয়ুব বাচ্চুর দাফন  - সংগৃহীত

দেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম জানাজা শুক্রবার জুমার নামাজের পর অনুষ্ঠিত হবে। হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এ জানাজা হবে। আর শনিবার তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। তিনি জানান, আইয়ুব বাচ্চুর সন্তানরা দেশের বাইরে আছেন। তারা কাল শুক্রবার দেশে আসবেন। পরদিন বাচ্চুকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এদিকে, জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শহিদ মিনারে আইয়ুব বাচ্চুর লাশ সবাই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস (ইন্না…রাজিউন) ত্যাগ করেন জনপ্রিয় ব্যান্ডদল এলআরবির এই অগ্রপথিক। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট দেশের জনপ্রিয় এই শিল্পী চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় আইয়ুব বাচ্চুর। সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আইয়ুব বাচ্চুকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন। আইয়ুব বাচ্চুর বহুদিনের ঘনিষ্ঠ সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার মইনুদ্দিন রাশেদ জানিয়েছেন তার সহকারী সকালে মগবাজারের বাসায় গিয়ে তাকে সকালে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

এল. আর. বি পরিবার থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি

পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে রংপুরে একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাচ্চু। বুধবার রাত থেকেই তিন অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে তাকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হন স্বজন ও রাশেদ। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আনুমানিক সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন : মাত্র ৬০০ টাকা নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু
নয়া দিগন্ত অনলাইন ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ২১:১০

অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কেঁটেছে রুপালি গিটারের কিংবদন্তী আইয়ুব বাচ্চুর জীবন। নিজের গানের কথা দিয়ে শ্রোতাদের হৃদয় নাড়িয়ে দেওয়া এই শিল্পী চলে গেলেন বড্ড অকালে। 

আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম চট্টগ্রামে ১৯৬২ সালে। রক সংগীতকে যখন জীবনের ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে গ্রহণ করেন তখন তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। ঢাকায় এসে খ্যাতির চূড়ায় আরোহণ করলেও জীবনের নানা চড়াই পার হতে হয়েছে তাকে। বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎকারে ‘এবি’ হয়ে ওঠার গল্প বলেছেন তিনি।

২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার সন্তানেরা ছোটবেলা থেকে আমার মুখে একটা গল্প শুনে অভ্যস্ত। এই ঢাকা শহরে ১৯৮৩ সালের শেষের দিকে মাত্র ৬০০ টাকা নিয়ে এসেছিলাম। উঠেছিলাম এলিফ্যান্ট রোডের একটি হোটেলে।

ঢাকা শহরে আমি যখন ৬০০ টাকা নিয়ে আসি, তখন এখানে আমার অনেক আত্মীয়স্বজন থাকতেন। আমি কারও কাছেই যাইনি। বিপদে কারও মুখাপেক্ষীও হইনি। নিজেকে গড়ে তুলেছি। কাজে হাত দিয়েছি। কাজের পর কাজ করেছি। এখনো করেই যাচ্ছি। দিনরাত্রি কাজ করে একটা অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি।

আমার কাছে ওই ৬০০ টাকা ছিল ৬ কোটি টাকার মতোই। সামনে অনেক পথ খোলা ছিল। সবকিছু পাশ কাটিয়ে গেছি। চলার পথে এমন কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচয় ছিল, যাদের নাম শুনলে আতঙ্কিত হতে হতো। শুধু তা-ই নয়, আমার পরিচিত অনেকে মাদকসেবনও করত। চাইলে আমিও হয়তো বখে যেতে পারতাম। কিন্তু মিউজিকই ছিল আমার ধ্যানজ্ঞান। আমি সেই লক্ষ্যে ছুটে গেছি।

১০ বছর লেগেছে আমার সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে। এই ১০ বছরে আমি ভেসে যেতে পারতাম। হয়তো আমার কোনো পাত্তাই পাওয়া যেত না। কিন্তু আমি ভাসিনি। আশপাশে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। অনেক ধরনের লাইফস্টাইলের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। কিন্তু যে লাইফস্টাইল আমার পরিচিত না, যেটার সঙ্গে আমার পরিবার একমত না—এ ধরনের লাইফস্টাইল থেকে নিজেকে সংবরণ করেছি। কারণ, আমার মা কষ্ট পেলে দেশ কষ্ট পাবে। আত্মীয়স্বজনেরা মন ছোট করবেন। দেশ কষ্ট পেলে দুনিয়া কষ্ট পাবে। এ জন্যই নিজেকে সংবরণ করেছি। আমি বলতে চাই, লোভ সংবরণ করা খুব দরকার।

এ বছরের ১৬ আগস্ট নিজের শেষ জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তার ঠিক এক বছর আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জীবন-মৃত্যু নিয়ে নিজের উপলব্ধির কথা বলেছিলেন।

‘চোখ মেললেই জীবন। চোখ বন্ধ করলেই আর জীবন নেই। জীবনের রংটাই এরকম। আমাদের সবার ক্ষেত্রে বিষয়টি একইরকম। জীবন সে তো তার মতো করেই চলবে। কাউকে বলে কয়ে চলবে না। আমরা কেউ জানি না ঠিক পর মুহূর্তে কী হতে যাচ্ছে।’

যে মানুষটি চিরদিন ব্যক্তিগত খ্যাতি বা চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে থেকে পারিবারিক মূল্যবোধ আঁকড়ে ধরে জীবন যাপন করেছেন, সব সময় দেশের কথা বলতেন সেদিন জন্মদিন হলেও মৃত্যুর ভাবনাটাই যেন আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তাকে। অনুপ্রেরণার কথা জিজ্ঞাসা করতেই বলেছিলেন, ‘আগের মতো এখন অনেক কিছুই আমাকে আর অনুপ্রাণিত করে না।

এখন বেঁচে থাকাটা আমার ভক্ত-শ্রোতাদের জন্য, যারা আমাকে ভালোবাসেন। যারা আমার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভেজেন। যারা প্রচণ্ড রোদে পুড়ে আমার জন্যে অপেক্ষা করেন। যারা আমার প্রতি স্নেহ-মমতা প্রকাশ করেন। এখন নতুন কোন স্বপ্ন দেখি না যার জন্য আমাকে বেঁচে থাকতেই হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement
ইরানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পাশ্চাত্যের দেশগুলো সিদ্ধিরগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকাসহ ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় গাজায় মানবিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ : রাশিয়া পিকআপচালককে হত্যা করে রেললাইনে লাশ ফেল গেল দুর্বৃত্তরা এক মাস না যেতেই ভেঙে গেলো রাজকীয় বিয়ে! ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭ নোয়াখালীতে মেলায় সংর্ঘষ নিহত ১ কবরস্থান থেকে বৃদ্ধার বস্তাবন্দি লাশের রহস্য উন্মোচন : পুত্রবধূ ও নাতনি গ্রেফতার মিরসরাইয়ে বজ্রপাতে কৃষকের তিন গরুর মৃত্যু

সকল