১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`
ভারতীয় নজির

ব্যাংকঋণ পরিশোধে ব্যবসা বিক্রি

-

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবিশাস্য মনে হলেও কেবল ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার জন্য দীর্ঘ দিনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দিয়েছেন ভারতীয় ধনকুবের অনিল আম্বানি। ভারতের এ টাইকুন মুম্বাইয়ে তার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবসায় ২০০ কোটি ডলারে বিক্রি করে দিয়েছেন দেশটির আরেক শিল্পপতি গৌতম আদানির কাছে। ঋণ সঙ্কটের পাশাপাশি সম্প্রতি ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি দাঁসুর সাথে অংশীদারিত্ব সম্পর্ক নিয়েও সমালোচনার মুখে রয়েছেন আম্বানি। ৩৬টি যুদ্ধবিমান তৈরি ও রণাবেণে সহায়তার ল্েয ২০১৬ সালে তার কোম্পানি কিভাবে দাঁসুর সাথে ২২০ কোটি ডলারে চুক্তিবদ্ধ হলো, সে বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, গত সপ্তাহে এক ঘোষণার মাধ্যমে রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারসের (রিলায়েন্স ইনফ্রা) মুম্বাই সিটি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসায় আদানি ট্রান্সমিশনের কাছে বিক্রির কথা জানান অনিল আম্বানি। এ সময় তিনি বলেন, এ ব্যবসায় বিক্রি থেকে মোট ২৭০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে (১৮ হাজার ৮০০ কোটি রুপি), যা ফ্যাগশিপ ব্যবসার ঋণ কমাতে সহায়ক হবে। জুনের শেষ নাগাদ রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার কোটি রুপি, যা সম্প্রতি খেলাপি ঋণের তালিকায় চলে গেছে।
গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আম্বানি বলেন, রিলায়েন্স ইনফ্রার সামগ্রিক ঋণ ২২ হাজার কোটি রুপি, যা কমে সাড়ে ৭ হাজার কোটি রুপিতে দাঁড়াবে। অর্থাৎ একটি একক লেনদেনের মাধ্যমেই ৬৫ শতাংশ ঋণ কমে যাবে। এর সুবাদে কোম্পানিটির সুদ বাবদ বার্ষিক ব্যয় দুই হাজার ৬০০ কোটি রুপি থেকে কমে ৮০০ কোটি রুপি হবে।
২০১৬ সালে ভারতে নতুন দেউলিয়াত্ব আইন কার্যকরের পর দেশটির ব্যবসায়িক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ঋণ পরিশোধের ল্েয আম্বানির এ সম্পদ বিক্রির উদ্যোগকে এরই একটি অংশ হিসেবে দেখছেন পর্যবেকরা। দেশটির অনেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানই এখন বাধ্যতামূলক দেউলিয়াত্ব প্রক্রিয়া এড়িয়ে যেতে বড় আকারের সম্পদগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, দেউলিয়া কোম্পানি থেকে এর কন্ট্রোলিং শেয়ারহোল্ডারদের তাৎণিকভাবে অপসারণ করা হবে এবং পরবর্তী ৯ মাসের মধ্যে কোনো ক্রেতা পাওয়া না গেলে কোম্পানিটি বন্ধ করে দেয়া হবে।
জানা গেছে, আম্বানির মালিকানায় থাকা ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিকম কোম্পানি রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের কোর টেলিযোগাযোগ সম্পদও বিক্রির চেষ্টা করছেন আম্বানি। কোম্পানিটিকে ঋণ প্রদানকারী চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও এরিকসন নতুন আইনের আওতায় মামলা করার পর এ সম্পদ বিক্রির তোড়জোড় করছেন আম্বানি।
এ দিকে মুম্বাইয়ের বিদ্যুৎ ব্যবসায় বিক্রি করে দিলেও রিলায়েন্স ইনফ্রার হাতে বিদ্যুৎকেন্দ্র, প্রকৌশল ও নির্মাণ ব্যবসার মতো বেশ কিছু সম্পদ থাকবে। আম্বানি জানিয়েছেন, এ ব্যবসায় বিক্রির ফলে আগামী বছর থেকে রিলায়েন্স ইনফ্রা একেবারে ঋণমুক্ত হবে এবং শক্তিশালী ঋণমান অর্জিত হবে। গত মাসে নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ভারতীয় ঋণমান সংস্থাগুলো কোম্পানিটির ঋণমান কমিয়ে দেয়। চলতি বছরের এ পর্যন্ত রিলায়েন্স ইনফ্রার শেয়ারদর ২৪ শতাংশ কমে গেছে, অবশ্য তা সত্ত্বেও আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের সবচেয়ে মূল্যবান ব্যবসায় হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে বিভাগটি।


আরো সংবাদ



premium cement