২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘ড্রিমলাইনার’ যুক্ত হচ্ছে বিমানের বহরে

-

চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ ‘ড্রিমলাইনার’ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হচ্ছে আগামী ২০ আগস্ট। ওয়াইফাই সুবিধাসম্বলিত অত্যাধুনিক উড়োজাহাজে বসেই যাত্রীরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে থাকা তাদের প্রিয়জনের সাথে টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন। এয়ারক্রাফটের নিচে লাগানো ক্যামেরায় দেখতে পাবেন চারপাশের নয়নাভিরাম দৃশ্যে। মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সিয়াটল ফ্যাক্টরি থেকে বিমান কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এ উড়োজাহাজটি বুঝে নেবেন। এর আগে বিমানের একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছবেন। এই বিমানে ভ্রমন করতে একজন যাত্রীর জন্য ভাড়া কত টাকা হবে সে ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিমান কর্তৃপক্ষ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজ নয়া দিগন্তকে ড্রিমলাইনার আসার নানা তথ্য জানিয়ে বলেন, ২০০৮ সালে বোয়িংয়ের সাথে সম্পাদিত ২.১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তির আওতায় ১০টি উড়োজাহাজ ডেলিভারি পাওয়ার কথা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের। ইতোমধ্যে ছয়টি উড়োজাহাজ বহরে এসে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি বোয়িং-৭৭৭-৩০০-ইআর ও দু’টি ৭৩৭-৮০০। সবগুলোই ব্র্যান্ড নিউ। বাকি চারটি রয়েছে ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ডেলিভারির অপেক্ষায় থাকা চারটি ড্রিমলাইনের প্রথমটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমেরিকার ওয়াশিংটনে সিয়াটলের বোয়িং ফ্যাক্টরিতে এর অ্যাসেম্বলি ও চেঞ্জিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫ জুলাই আমেরিকা থেকে উড়ে সেটি যাবে লন্ডনের সানবড়ো এয়ার শো’তে। যেখানে সারা বিশ্বের সব স্টেকহোল্ডারদের সামনে বোয়িংয়ের প্রডাক্ট হিসেবে বাংলাদেশ বিমানের ড্রিমলাইনাকে প্রদর্শন করা হবে। ১৬ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সানবড়ো এয়ার শো’ শেষে এটি আবার ফিরে যাবে সিয়াটলের বোয়িং কোম্পানিতে। এ সময়ে বাংলাদেশ বিমানের অগ্রবর্তী দল আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিয়াটলে পৌঁছবেন। তারা উড়োজাহাজের যান্ত্রিক, কারিগরি অপারেশনের খুঁটিনাটি বিষয় ও ডকুমেন্টশন কোম্পানির লোকজনের কাছ থেকে বুঝে নেবেন। ২০ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফট হস্তান্তর করা হবে। এরপরই ড্রিমলাইনার সরাসরি চলে আসবে ঢাকায়। ঢাকায় আসার পর সিভিল এভিয়েশন থেকে রেজিস্টেশন, কাস্টমস ও অন্য ডকুমেন্টশন ছাড়াও যেসব আনুষ্ঠানিকতা আছে সেগুলো সম্পন্ন করে আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ড্রিমলাইনারকে উদ্বোধন করানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বিমানের পক্ষ থেকে। এরপরই সেপ্টেম্বর মাসের পয়লা তারিখে প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট হিসেবে পরিচালিত হবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর (বিজি-০৮৪) রুটে ফ্লাইট চলাচল। ওই দিন সকাল ৮.২৫ মিনিটে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ফ্লাইটটি ছেড়ে যাবে। সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় ২টা ৪০ মিনিটে অবতরণ করবে। বহরে ড্রিমলাইনার যুক্ত করার মাধ্যমে বিমান এক নবযুগে প্রবেশ করেছে জানিয়ে শাকিল মেরাজ এ প্রতিবেদককে বলেন, এই বিমানটি হচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ। যে উড়োজাহাজে রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফিট উচ্চতায় ওয়াইফাই সুবিধা। উড়োজাহাজে বসেই যাত্রীরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে থাকা প্রিয়জনের সাথে টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন। একই সাথে বিশ্বের খ্যাতনামা সিএনএন, বিবিসিসহ ৯টি টিভি চ্যানেল লাইভ দেখতে পাবেন। এ ছাড়া শতশত মুভি, অডিও সিলেকশন করে দেখতে পাবেন, ভিডিও গেমস খেলতে পারবেন। এই বিমান বহরে যুক্ত আছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি থ্রি ডি একটিভেটেড ফ্লাইট ম্যাপ। যার সাহায্য যাত্রীরা জানতে পারবেন বিমানের গতিপথের অবস্থান। প্লেনের নিচে ক্যামেরা সংযোজিত থাকছে। সেটি দিয়ে রিয়েল ভিউটা দেখতে পাবেন যাত্রীরা। ককপিট হবে পেপারলেস। যেখানে কোনো হার্ড কপি ম্যানুয়েল থাকবে না। একটি আইপ্যাড অথবা ল্যাপটপের সাহায্যে পাইলট এয়ারক্রাফট পরিচালনা করবেন। ককপিটে যেটি আছে সেটি অন্য কোনো এয়ারক্রাফটে নেই। সেটি হচ্ছে এইচ আপ ডিসপ্লে (এইচইউডি)। যার মাধ্যমে পাইলট তার আশপাশে কী হচ্ছে সবকিছুর চিত্র তার স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। এটি ২০ পার্সেন্ট জ্বালানি সাশ্রয়ী উড়োজাহাজ এবং কার্বন নিঃসরণ হওয়ায় সারা বিশ্বে এটি পরিবেশবান্ধব হিসেবে পরিচিত। একই সাথে এই এয়ারক্রাফটের অনন্য বৈশিষ্ট হচ্ছেÑ যাত্রীরা ৪০ হাজার ফিট উচ্চতায় ভ্রমণ করলেও তাদের দীর্ঘপথের ভ্রমণ শেষেও কোনো ধরনের ক্লান্তি আসবে না। শরীর থাকবে ঝরঝরে তরতাজা।
এক প্রশ্নের জবাবে শাকিল মেরাজ বলেন, ২৭১টি সিটের মধ্যে বিজনেস ক্লাসের সিট রয়েছে ২৪টি। সিটগুলোর সুইচ টিপলেই এটা হয়ে যাবে ‘ফ্লাট বেড’। পুরো বিছানার মতো। মোট কথা আকাশপথে বিমান ভ্রমনে নতুনমাত্রা যোগ হচ্ছে এই ড্রিমলাইনার। ড্রিমলাইনার দিয়েই বাংলাদেশ বিমান তার রি-ব্রান্ডিং করতে চায়। ইমেজকে উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার সাথে তাল মিলিয়ে বিমানের এ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ সংযুক্তি নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি আরো বলেন, উদ্বোধনী দিন সকালে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ফ্লাইট। একই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এটা দিয়ে প্রাথমিকভাবে সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট চলবে। নভেম্বর মাসে বহরে দ্বিতীয় এয়ারক্রাফট ড্রিমলাইনার যুক্ত হলে তখন ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা রুটে সপ্তাহে ছয় দিন ফ্লাইট চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজে একজন যাত্রীর ভাড়া কত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ ভাড়া নির্ধারণ চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে অবশ্যই অন্য উড়োজাহাজ থেকে এর ভাড়া বেশি হবে। কারণ, এখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস খাদে, নিহত ৪৫, বাঁচল একটি শিশু ইসরাইলের রাফা অভিযান পরিকল্পনা স্থগিত এগিয়ে নিয়ে গিয়েও জেতাতে পারলেন না ত্রিস্তান

সকল