১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রস্তাবিত বাজেট : প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দোলাচলে ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা

-

ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বেশির ভাগ সংগঠনই প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব বলে অভিহিত করেছে। নিজের পদ ধরে রাখতে বাজেট সম্পর্কে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অনেক নেতা। এসব সংগঠনের বেশির ভাগের নেতৃত্বেই রয়েছেন অনির্বাচিত নেতারা। তাদের অনেকে আবার সরকারের সাথে বিশেষ লিয়াজোঁ করে নিজেদের কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন এক বা একাধিকবার। যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে তাদের বক্তব্যেই। সদ্য প্রস্তাবিত আগামী জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের অপ্রাপ্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন জিয়াউল হক মিজান

হুমকিতে বেসরকারি বিনিয়োগ
জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপিত হওয়ার পর থেকে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কাছে নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে ব্যাংক ঋণ। তাদের আশঙ্কা, আগামী দিনগুলোতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে বিনিয়োগপ্রাপ্তি আরো কঠিন হবে। কারণ, বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ২১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। প্রসঙ্গ টেনে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, এ কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ যাতে বিঘিœত না হয়, সরকারকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাতে প্রতিবন্ধকতা বা বাড়তি চাপ সৃষ্টি না করে, সে বিষয়ে তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা হওয়ার পেছনে উচ্চ সুদ হারকে দায়ী করেন তিনি। বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়ন ও অর্থব্যয় সঠিকভাবে করতে না পারার আশঙ্কা প্রকাশ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং তদারকের মান নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেবে।
পোশাক কারখানায় বাড়তি আয়কর
আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের ওপর বাড়তি করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সাধারণ পোশাক কারখানার করহার ১৫ শতাংশ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে উভয় ক্ষেত্রেই ১২ শতাংশ একক আয়কর হার নির্ধারিত রয়েছে। এ প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন রফতানি বাণিজ্যে ৮২ শতাংশ অবদান রক্ষাকারী তৈরী পোশাক শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা। বাজেট বক্তৃতায় পরিবেশসম্মত ভবন সনদ (গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন) আছে, এমন সবুজ কারখানার আয়কর হার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। যদিও বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তৈরী পোশাক খাত গুরুত্ব¡পূর্ণ অবদান রাখছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে তৈরী পোশাক খাতের গুরুত্ব¡ বিবেচনা করে এ খাতকে বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হয়।
অর্থমন্ত্রীর এমন প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজিএমইএ সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাজেট প্রস্তাবনায় করপোরেট কর হার ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং সবুজ শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে, যেখানে আমাদের অনুরোধ ছিল করপোরেট করহার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের জন্য। আমরা মনে করি, করপোরেট করহার বাড়ানোর ফলে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন। সরকারের কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ, পোশাক শিল্পে করপোরেট করহার ১০ শতাংশ নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন।
হয়রানির মূলে ভ্যাট
মূল্য সংযোজন করকে হয়রানির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বলে অভিহিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে রফতানিমুখী শিল্পের জন্য এটি সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গ টেনে বিজিএমইএ সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাক শিল্পের জন্য সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হলো ভ্যাট। ভ্যাট থাকলেই হয়রানি হবে। তাই রফতানি খাতকে সম্পূর্ণভাবে ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানান তিনি। দেশের সম্ভাবনাময় তৈরী পোশাক শিল্প খাতকে করের খাত হিসেবে না দেখে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত হিসেবে বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, পোশাক শিল্প থেকে আমাদের একান্ত অনুরোধ ছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের সঙ্কটময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে পোশাক রফতানির ওপর উৎসে কর আগামী তিন বছরের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হোক। তবে এ বিষয়ে বাজেট প্রস্তাবনায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না থাকায় বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩ (বিবি) ধারায় রফতানির উৎস কর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ শতাংশ হারে নির্ধারিত হয়েছে। প্রতি বছরই বাজেট ঘোষণায় উৎসে কর ১ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীকালে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ের সাথে আলোচনা করে তা কমিয়ে আনি। তিনি বলেন, রফতানির ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রত্যক্ষ রফতানিকারকদের কাছ থেকে উৎসে কর কাটা হচ্ছে। সেই সাথে একই রফতানি এলসির বিপরীতে প্রচ্ছন্ন রফতানিকারকদের যেমন সুতা, কাপড় ও এক্সেসরিজ সরবরাহকারীদের থেকেও একই হারে উৎসে কর কর্তন করা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, রফতানি সংশ্লিষ্ট স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট মওকুফসহ রিটার্ন দাখিল করা থেকে অব্যাহতি প্রদান করার জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এ ছাড়াও বিগত পাঁচ-ছয় বছরের যে ভ্যাট দাবি করা হচ্ছে, তাও মওকুফ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে ঘোষিত বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আবার, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির ওপর প্রদত্ত মূসক প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করার লক্ষ্যে ১০০ শতাংশ মূসক অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাবও রেখেছিলাম। কিন্তু সে ব্যাপারেও কোনো নির্দেশনা নেই। তিনি বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা, কর্মসংস্থান, রফতানি ও জাতীয় স্বার্থে পোশাক শিল্পের সক্ষমতা ধরে রাখা ও এর সুরক্ষার জন্য রফতানি বিলের উপর ০.২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প শুল্ক কর্তন করা হতে তৈরী পোশাক শিল্পকে অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ ব্যাপারেও বাজেটে কিছু বলা হয়নি। অথচ ডেফার্ড পেমেন্টে রফতানির ক্ষেত্রে রফতানিকারকেরা তিন-চার মাস পর পেমেন্ট পেয়ে থাকেন। তার ওপর আরো ০.২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প শুল্ক কর্তন করা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
আতঙ্কের নাম ব্যাংক লুট
ব্যাংকের টাকা লুটপাটকারী ও ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, কারা ব্যাংকিং খাতের জনগণের আমানত তসরুফ করছেন, সেই তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যাংকে লুটপাট করছেন, সেসব লুটেরা ও ডাকাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেখতে চাই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সংগঠনের দুই সহসভাপতিসহ পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাধারণত দু’টি কারণে ব্যবসায়ীরা ঋণখেলাপি হয় জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, একটি হলোÑ সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হয়ে খেলাপি হয়ে যান, অন্যটি ইচ্ছাকৃত। কেউ কেউ ব্যাংকের টাকা মনিপলিশন করে লুটপাট করে। তাদের জন্য এফবিসসিআই অ্যাডভোকেসি করে না। তিনি আরো বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক সাফল্য আজ বিশ্বদরবারে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু ব্যাংকিং খাত নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে ব্যাংকিং খাতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে, যা আমাদের পলিসির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
প্রশংসার প্রতিযোগিতা
বাজেটের আগে ব্যবসায়ীদের শতাধিক সংগঠনের সাথে বৈঠক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। লিখিত বাজেট প্রস্তাবনা নেয়া হয়েছে তিন শতাধিক সংগঠন থেকে। এনবিআর পরামর্শক কমিটির নামে ব্যবসায়ীদের সাথে একাধিক বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের অনেক চাওয়াই উপেক্ষিত হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দলীয় সুবিধাভোগীরা ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্বে থাকায় তাদের মাধ্যমে সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া আসছে না। সংগঠনগুলোর বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফুটে উঠেছে দেউলিয়াত্বের এমন অনেক চিত্র। নিজেদের নানান দাবি এবং অভিযোগ-অনুযোগ উত্থাপন করলেও প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব বলেই অভিহিত করেন বেশির ভাগ ব্যবসায়ী নেতা। বিজিএমইএ সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমানের মতে, নতুন বাজেট সময় উপযোগী ও ব্যবসাবান্ধব। এই বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ও বিনিয়োগ বাড়বে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, শুধু পোশাক শিল্পের ওপর ভিত্তি করে বাজেট হবে না। নতুন বাজেটে পোশাক শিল্পের জন্য সুখবরও নেই, খারাপ খবরও নেই। আমরা আশা করছি, যেসব সমস্যা আছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে।
বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল দৃঢ়চেতা, সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে দেশ অবকাঠামোসহ আর্থসামাজিক প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আশাতীত সাফল্য অর্জন করেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং চলতি অর্থবছর শেষে ৭.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। মাথাপিছু আয় হয়েছে ১৭৫২ মার্কিন ডলার। রিজার্ভ ৩২.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৮৩৫৩ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে ২৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। এলএনজি টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে এবং দীর্ঘ দিন পরে শিল্পে গ্যাস সংযোগের ঘোষণা উদ্যোক্তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণার সঞ্চার করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। মেট্রোরেল প্রকল্প, ঢাকা-জয়দেবপুর চার লেন এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সেপ্রেসওয়ের কাজ জোরেশোরে চলছে। ইতোমধ্যে কিছু চার লেন মহাসড়কের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৭৬টিরই প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।’
বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের অনেক কিছুই আছে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো। আবার যে দিকগুলোতে ব্যবসায়ীদের আপত্তির সুযোগ আছে, সেগুলো নিয়ে আমরা সরকারে উচ্চ মহলের সাথে বসে আলোচনা করে ঠিক করে নেয়ার চেষ্টা করব। তাই এই বাজেটকে ভালো-খারাপ বলে মন্তব্য করেতে চাই না। অন্যদের মতো গরিব মারার বাজেট কিংবা উচ্চাভিলাষী বাজেটও আমরা বলতে চাই না। আমরা অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের নেতৃবৃন্দের সাথে আরো আলোচনা করে আমাদের যেসব প্রস্তাব বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি, সেগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করব। আমরা আশা করি, এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাবো।
ব্যবসায়ীদের ১০ দফা
প্রস্তাবিত বাজেটে সংশোধনের জন্য ১০ দফা দাবি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন করে আরো কী দাবি দেয়া যায়, সেগুলো নিয়েও আলোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমরা অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের নেতৃবৃন্দের সাথে আরো আলোচনা করে আমাদের যেসব প্রস্তাব বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি, সেগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করব। আমরা আশা করি, এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাবো। এফবিসিসিআই’র দেয়া ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছেÑ ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতেও তালিকাভুক্ত এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি করপোরেট হার ২.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। পোশাক শিল্পের করপোরেট কর ১২ শতাংশ ও সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে আগের মতো ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা। তৈরী পোশাক শিল্পের উৎপাদন সংশ্লিষ্ট পণ্য সরবরাহের সাথে সংযুক্ত খাতে ভ্যাট প্রত্যাহার করা। পোশাক, চামড়া, হিমায়িত খাদ্যসহ সব রফতানি খাতের ক্ষেত্রে উৎসে কর .৭০ শতাংশ বহাল রাখা। করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ টাকা করা। আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম মূসক ও ব্যবসায়ীপর্যায়ে মূসক আগের মতো ৪ শতাংশ বহাল রাখা। যেসব কোম্পানি শুধু ই-কমার্স কোম্পানি হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের ক্ষেত্রে লাভ-লোকসান নির্বিশেষে মোট প্রাপ্তির ০.৩ শতাংশের পরিবর্তে ০.১ শতাংশ কর নির্ধারণ করা। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির অবচয়ের হার আগের অবস্থায় রাখার পাশাপাশি শুল্কমূল্য নির্ধারণে ট্রেড ডিসকাউন্ট সুবিধা প্রদান। দেশের শিল্প রক্ষায় আমদানিকৃত প্যাকেজিং সামগ্রীর ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা এবং অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবার ওপর ধার্য করা মূসক প্রত্যাহার প্রভৃতি।


আরো সংবাদ



premium cement
মুন্সীগঞ্জে ২ পক্ষের হামলা পাল্টাহামলায় আহত ৭ শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে বড়াল বন্ধ সেচ কার্যক্রম ও নৌপথে ব্যবসা সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্যকে নষ্ট করতে দেবো না : নাছিম দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জি এম কাদেরের আইআরজিসিকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন দেখেন না সাবেক ব্রিটিশ গোয়েন্দা প্রধান বেতাগীতে সরকারি চাল দামি প্যাকেটজাত করে বিক্রি কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন ওমরাহ ভিসার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের হুঁশিয়ারি বিভিন্ন স্থানে বাংলা বর্ষবরণ কাশ্মিরে নৌকাডুবিতে ৪ জনের মৃত্যু উজিরপুরে মাদক মামলায় জামিনে এসে সাংবাদিকের ওপর হামলা

সকল