২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আসছে বাজেট : দাবি স্থায়ী কাঠামো

-

সপ্তাহখানেক পরই আসছে নতুন বাজেট। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এ বাজেট নির্বাচনী বাজেট হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই উন্নয়নমূল নানা কর্মসূচির ছড়াছড়ি থাকছে এ বাজেটে। যদিও দেশের অর্থনীতির মূল কারিগর ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা চাচ্ছেন বাজেটের একটি স্থায়ী কাঠামো। বিশেষ করে বিনিয়োগ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক এবং দীর্ঘমেয়াদি ঘোষণা আশা করছেন তারা। তারা চান, করদাতাবান্ধব করনীতি, বিনিয়োগবান্ধব আইন এবং উন্নয়নবান্ধব রাজনীতি। লিখেছেন জিয়াউল হক মিজান

আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সম্প্রতি কিছু সুপারিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। এতে দেশের শিল্পখাতের উন্নয়ন ও বিনিয়োগে সহায়তার জন্য একটি স্থায়ী শুল্ক কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানান তিনি। দেশের ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতি রেখে জাতীয় বাজেটে শিল্প উন্নয়ন ও বিনিয়োগ সহায়ক একটি সহনশীল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সুপারিশ করেন তিনি। এ ছাড়া কর হার কমিয়ে এবং করের আওতা বাড়িয়ে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য কৌশলগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
বিসিআইয়ের মতে, মূসক নিবন্ধিত সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক রেয়াতি হারে উপকরণ আমদানি-সংক্রান্ত একক এসআরো (১৪৮/২০১৬) পণ্য তালিকাভিত্তিক না করে প্রদত্ত শুল্ককর সুবিধাভিত্তিক হওয়া সমীচীন। অন্য দিকে সিকেডি অবস্থায় আমদানিকৃত পণ্যের সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতীত ভ্যাট রেজিস্ট্রার্ড অন্যসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মূসক-৭ বা অনুরূপ কোনো মূসক দলিলে অন্তর্ভুক্ত কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ রেয়াতি হারে সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিসিআই জানিয়েছে, বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক জারিকৃত মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ সংক্রান্ত এসআরো (১২৮-আইন/-/২০১৬/কাস তারিখ ২-৬-২০১৬)-এর অধীনে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ১ শতাংশ শুল্ক প্রদানের মাধ্যমে আমদানির সুযোগ রয়েছে। তবে এ প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত বা তালিকাভুক্ত না থাকায় শিল্প খাতের আবশ্যক সব ধরনের মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ উপরোক্ত রেয়াতি সুবিধা পাচ্ছে না। এ কারণে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের পাশাপাশি মূসক নিবন্ধিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূসক-৭ ফর্মে ঘোষিত অন্যান্য মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রেও রেয়াতি সুবিধা দেয়া হবে প্রজ্ঞাপনে এমন বিধান সংযোজনের অনুরোধ করেছে বিসিআই।
বিসিআইয়ের সুপারিশে বলা হয়েছে, সব ক্ষেত্রে মৌলিক ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী কাঁচামাল ও তৈরি পণ্যের মধ্যে শুল্ক-করহারের পার্থক্য কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ রাখা জরুরি। এ লক্ষ্যে এনবিআরকে শিল্প প্রতিরক্ষণ নীতিমালা প্রণয়নের অনুরোধ করেছে বিসিআই। সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য বিসিআই বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রামকেন্দ্রিক না রেখে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত ও অনুন্নত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ জন্য সংগঠনটি চারটি স্তরে বিশেষ রেয়াতি সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে। শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও পুনরায় শিল্পপণ্য সরবরাহের ওপর ৭ শতাংশ পর্যন্ত উৎসে আয়কর কর্তন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ নিয়ম বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছে বিসিআই। সংগঠনটি জানিয়েছে, স্থানীয় ঋণপত্রের ওপর ৩ শতাংশ, এলসি কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ ও আমদানি পর্যায়ে মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর আদায় করা হয়। বিসিআই এসব উৎসে কর রহিতকরণের সুপারিশ করেছে।
বিসিআই রফতানি খাতে নির্দেশিত শুল্ক ও কর সুবিধা, অন্যান্য আর্থিক সহায়তা এবং বিভিন্ন রেয়াতি ব্যবস্থা-সংক্রান্ত নানা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আগামী বাজেটে যথাযথ বিধান ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ করেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ডলারের বিপরীতে পাউন্ড, ইউরো, রুবলসহ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারজনিত ঝুঁঁকি মোকাবেলার উদ্দেশ্যে রফতানি চালানভিত্তিক পরিশোধিত মূল্যের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রতি মাসে সংশ্লিষ্ট বিদেশী মুদ্রার জন্য নির্ধারিত বিনিময় হার আরোপ করা, রফতানি পণ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত গুণগত মানসনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা নিশ্চিত করা, রফতানি পণ্যে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা, রফতানি বৃদ্ধির সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট সব পণ্যে রেয়াতি হারে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সংযোগ ও সরবরাহের সংস্থান করা, একক ও রফতানিমুখী গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং নারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে খাতভিত্তিক যৌথ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা প্রদান করা, রফতানি পণ্য প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত আমদানিকৃত ও দেশীয় উপকরণের ওপর পরিশোধিত সব শুল্ক ও কর মওকুফ গণ্য করা ও আদায়কৃত কর ফেরত দেয়া, সংশ্লিষ্ট সব রফতানি পণ্যে রেয়াতি হারে অর্থায়ন করা, ফ্যাক্টরিং সার্ভিসকে কার্যকর করা ও রফতানি অর্থায়নের জন্য রেয়াতি হারে মূলধনি ঋণ ও এলসির বিপরীতে ঋণ সুবিধা প্রদান করা ইত্যাদি।
নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবি
এদিকে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে প্লট ও ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন (রিহ্যাব)। গত সপ্তাহে রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী (শাওন), সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া ও আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান। আবাসন খাতকে চাঙ্গা করতে তারা ব্যাংকঋণের সুদহার কমানো এবং নি¤œবিত্তদের ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণ দিতে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া দ্বিতীয়বার প্লট বা ফ্ল্যাট কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিবন্ধন ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি, গেইন ট্যাপ কমানোর দাবি জানান তারা। আবাসন খাতে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবিও জানান তারা।
আসছে বড় অঙ্কের ভর্তুকি
এদিকে গত চার বছর ধরে ভর্তুকিতে বরাদ্দ কমে এলেও এবার বাড়ছে। আসন্ন ২০১৮-১৯ বাজেটে ভর্তুকিতে মোট ৩১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত ওই বরাদ্দ মোট দেশজ উৎপাদনের দেড় শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছর বাজেট ঘোষণার সময় ভর্তুকি খাতে মোট বরাদ্দ দেয়া হয় ২৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ বরাদ্দ অপরিবর্তিত থাকছে। এর আগের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করেই সরকার ভর্তুকি দেয়। ভর্তুকি না দিলে কৃষিপণ্যের দাম আরো বাড়বে। বাড়বে বিদ্যুতের দাম, ব্যাহত হবে রফতানি। এতে করে অর্থনীতির স্বাভাবিক গতিধারা ব্যাহত হবে। দেখা দেবে সামাজিক অসন্তোষ। যদিও অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, ভর্তুকি হচ্ছে এক ধরনের অনুৎপাদনশীল খাত। অর্থনীতির অদক্ষতার কারণেই ভর্তুকি দিতে হয়। এটি যত বেশি হবে, তত আর্থিক চাপ বাড়বে সরকারের ওপর। এ জন্য ভর্তুকি কমিয়ে আনার পরামর্শ দেন তারা।
রফতানি প্রণোদনা সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা
রফতানিকে উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়ে সম্প্রতি সচিবালয়ে অর্থসচিবের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রফতানিতে প্রণোদনা আরো বেশি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন বাজেটে রফতানিতে প্রণোদনা আগের চেয়ে ৫০০ কোটি বাড়িয়ে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ভর্তুকির চাহিদা বাড়ছে কৃষিতেও। চলতি বাজেটে কৃষি উপকরণ (সার) আমদানিতে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এখন জ্বালানি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তেলের দাম বাড়লে সারের দামও বাড়ে। সে জন্য কৃষিতে আরো বেশি ভর্তুকি দিতে হবে। জানা যায়, আসন্ন বাজেটে কৃষিতে বর্তমানের চেয়ে আরো ৫০০ কোটি বাড়িয়ে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে।
এলএনজির জন্য তিন হাজার কোটি
এদিকে আগামী বাজেটে এলএনজির জন্য আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা পৃথক বরাদ্দ থাকছে বলে জানা গেছে। এলএনজি আমদানির প্রথম চালান দেশে এসে পৌঁছেছে এবং খালাসের অপেক্ষায় আছে। চলতি মাসের শেষ দিকে গ্রাহকরা এ গ্যাস ব্যবহার করতে পারবে। যদিও গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের নতুন দাম এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কম দামে যাতে সরবরাহ করা যায়, সে জন্য ভর্তুকি দেয়া হবে। আগামী বাজেটে এলএনজির জন্য আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা পৃথক বরাদ্দ থাকছে। এ ছাড়া এলএনজির দাম সহনীয় রাখতে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করা হতে পারে। শেষ পর্যন্ত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দের প্রস্তাব থাকছে বলে জানা গেছে।
চাল ও আটায় চার হাজার কোটি টাকা
গরিব মানুষকে সাশ্রয়ী দামে খাওয়ানোর জন্য খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি করে সরকার। এ জন্য চাল ও আটায় ভর্তুকি দেয়া হয়। চলতি বাজেটে এ খাতে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। আগামী বাজেটেও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে আগের মতো ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে দেড় হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মূল বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে তা কমে হয় ২৩ হাজার কোটি টাকা।
স্থগিত ভ্যাট আইন ভিন্নরূপে
ব্যবসায়ীদের তীব্র আপত্তির মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে গতবার শেষ মুহূর্তে নতুন ভ্যাট আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। নতুন ভ্যাট আইনে বিশেষ ছাড়ের পরিবর্তে সর্বক্ষেত্রে অভিন্ন বা একই হারে (১৫ শতাংশ) ভ্যাট আরোপের বিধান করা হয়। যদিও প্রতিটি স্তরে রেয়াত বা ক্রেডিট সুবিধা দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নতুন আইন গ্রহণ করেননি। তারা বলেছেন, ওই আইন কার্যকর হলে পণ্যের দাম বাড়বে। চাপ বাড়বে ভোক্তার ওপর। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশীয় শিল্পখাত বিশেষ করে এসএমই শিল্প। এতে করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সঙ্কুচিত হবে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট পাশের আগের দিন জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই বছরের জন্য নতুন ভ্যাট আইনের কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে যে আইনটি আছে তা চলমান রাখার কথা উল্লেখ করেন।
এদিকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় যে অনলাইন প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে গত জানুয়ারিতে একনেক সভায় আলোচ্য প্রকল্পটির মেয়াদ আরো দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়। বিশ্বব্যাংক ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে ৫৫১ কোটি টাকা অর্থায়ন করে। এরই মধ্যে ওই টাকার বেশির ভাগই খরচ হয়ে গেছে। যদিও ওই টাকা কোথায়, কিভাবে খরচ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে ব্যয় আরো ১৫০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আলোচ্য প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় ৭০১ কোটি টাকা। বাড়তি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে। এখন অনলাইন প্রকল্পের যাবতীয় কর্মপদ্ধতি বর্তমান আইনে সংযুক্ত করা হচ্ছে। এ জন্য ১৯৯১ সালের বিদ্যমান ভ্যাট আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর, যা আগামী বাজেটে কার্যকর করা হবে।
১৯৯১ সালের আইন সংশোধন
এদিকে চলমান ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনের প্রধানত নিবন্ধন এবং রিটার্ন জমা দেয়াÑ এই দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আসছে। বিদ্যমান আইনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন এবং মাসিক ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়া হয় সনাতনী পদ্ধতিতে। কিন্তু নতুন আইনকে কেন্দ্র করে নেয়া অনলাইন প্রকল্পে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয় ডিজিটাল বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। ফলে অনলাইনে রিটার্ন ফরম এমনভাবে সাজানো হয় যে, তা বিদ্যমান ভ্যাট আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এখন নতুন আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিবন্ধন কার্যক্রম এবং রিটার্ন ফরম পূরণ পদ্ধতি বর্তমান আইনের সাথে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ জন্য সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান আইনে এই দু’টি ক্ষেত্রে সংশোধনীর মাধ্যমে প্রচলিত আইনকে আধুনিকায়ন করা হবে। এর ফলে ভ্যাটের আওতা বাড়বে, আদায় প্রক্রিয়া সহজ হবে ও রাজস্ব আদায় বাড়বে। ১৯৯১ সালের বিদ্যমান ভ্যাট আইনকে অনলাইনের আওতায় আনা হলে ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন এবং রিটার্ন জমা দিতে পারবে বলেও জানান তারা।


আরো সংবাদ



premium cement
শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া

সকল