২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
৬ মাসের মধ্যে দরপত্র আহ্বানের সম্ভাবনা

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়ে বাস্তবায়নে অগ্রগতি

-

বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়ে বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহ্বানের সম্ভাবনা দেখছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণাধীন পাবলিক পার্টনারশিপ অথরিটির (পিপিপি) মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাসার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পরেই দেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ১৩৬ কিলোমিটার সড়ক রূপান্তর করা হচ্ছে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়েতে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে শুরু করা সমীক্ষা প্রায় শেষ প্রান্তে রয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে বুয়েটের প্রকৌশলী প্রফেসর ড. শামসুল হকের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল এই সমীক্ষার কাজ করে। নতুনভাবে সমীক্ষা সমাপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্পটি অচিরেই আলোর মুখ দেখবে বলে সবার প্রত্যাশা।
জানা গেছে, সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) অংশীদারিত্বে প্রকল্প বাস্তবায়ন নীতির আলোকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে জাপানের মারুবেনি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কয়েক দফা বৈঠকের পরে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমঝোতা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আবুল বাসার। গতকাল বিকেলে তিনি নয়া দিগন্তকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগে মহাসড়কের কক্সবাজার জেলার রিংরোড থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মইজ্যার টেক পর্যন্ত ১৩৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের যে প্রকল্প ছিল তা পরিবর্তন করে মহাসড়কটি উন্নীত করা হয়ে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়েতে (প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক)।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়ে প্রকল্পে নিয়োজিত প্রজেক্ট ডিরেক্টর প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউৎ এই মহাসড়ককে এক্সেস কন্ট্রোলড হাওয়েতে রূপান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়েতে দুই পাশে যুক্ত হবে ইমার্জেন্সি লেইন।
সর্বশেষ তৃতীয় দফায় সংশোধিত পিপিতে শুধু চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রাথমিক ব্যয় ১২ হাজার ৯০০ কোটি ধরে চার লেনে উন্নীতকরণ প্রজেক্ট প্রোফাইলটি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৫ মে নয়া দিগন্তে ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প প্রোফাইল পরিকল্পনা কমিশনে’ শিরোনামে সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
জানা গেছে, এডিবির অর্থায়নে সর্বপ্রথম ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সুইডিস কনসালট্যান্ট (ঐওঋঅই) নামে একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজের সর্বপ্রথম সার্ভে কাজ সমাপ্ত করে। বিদেশী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সার্ভের কাজ সম্পন্নের পরে প্রথম দফায় এই মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২২৫ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল (প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য, বিদ্যুৎ, সাবমেরিন ক্যাবল, অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সরানো বা স্থাপন করা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের পর নিয়মানুযায়ী চার বছরের মেরামত সংরক্ষণ ব্যয় ছাড়া) ১০ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা।
২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চার লেনে উন্নীতকরণের ঘোষণা দেয়ার পর পরই দ্বিতীয়পর্যায়ে এই প্রকল্পের পিপি সংশোধন করে সড়কের দৈর্ঘ্য কমিয়ে তৎকালীন সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ১৩৬ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ১৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা ধরে প্রজেক্ট প্রোফাইল প্রণনয়ন করে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে এক্সেস কন্ট্রোলড হাইওয়ে প্রকল্পে নিয়োজিত প্রজেক্ট ডিরেক্টর প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউৎ-এর সাথে গতকাল সন্ধ্যায় মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, বর্তমানে এই মহাসড়ক চার লেনের সাথে আনুষঙ্গিক বিষয় যুক্ত হয়ে এখন এই মহাসড়ক রূপান্তরিত হবে এক্সেস কন্ট্রোল হাইওয়েতে। কাজেই এই প্রকল্পে নতুন অনেক কিছু যুক্ত হবে সে কারণে সমীক্ষা শেষে প্রজেক্ট প্রফাইল তৈরি চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রকল্প ব্যয় কত হবে তা জানা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বুয়েটের প্রকৌশলী প্রফেসর ড. শামসুল হক গতকাল সন্ধ্যায় নয়া দিগন্তকে বলেন, সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে রয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জাইকা তাদের মাতারবাড়ী প্রজেক্টের সাথে রিলেটেড এই মহাসড়কের চকোরিয়া থেকে পটিয়া পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থায় সড়ক উন্নয়নের কাজ করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement