২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল পবিপ্রবি ক্যাম্পাস

-

র্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত ১৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় পবিপ্রবির বিভিন্ন অনুষদের তৃতীয় সেমিস্টারের তিন শতাধিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী টিএসসি চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এতে ক্লাস পরীক্ষাসহ সকল শিক্ষা কার্যক্রম বর্জন রেখে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
পবিপ্রবির শেরেবাংলা হল-১ এর গণরুমে প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের দায়ে গত ২৩ জানুয়ারি তৃতীয় সেমিস্টারের ১৫ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের সাময়িক বহিষ্কার আদেশ দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ আন্দোলনে নামে। আকস্মিক ছাত্র বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে যায়। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল।
এর আগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবিতে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শেরেবাংলা হল-১ এ উপযুক্ত প্রমাণাদি ছাড়াই আমাদের ১৫ জনসহপাঠীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য ১৪ জানুয়ারি হলের নবীনবরণ অনুষ্ঠান থাকায় আমরা নবীন শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানাতে তাদের গণরুমে প্রবেশ করি। এ সময় শিক্ষকরা এসে বাইরে থেকে রুমের দরজা লাগিয়ে দেন এবং কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে সবার ছবি তুলে রাখেন। পরবর্তীতে ২৩ জানুয়ারি ১৫ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের বহিষ্কার আদেশ দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। র্যাগিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় এ ধরনের শাস্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশাহত মর্মে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবিও দিয়েছে। দাবিগুলো হলো, অনতিবিলম্বে এক কার্য দিবসের মধ্যে আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং অভিযুক্তদের দ্রুত একাডেমিক সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে। দাবি না মেনে নিলে তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। অপর দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরাও রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। তারা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে সিনিয়র ভাইদের ওপর আরোপিত মিথ্যা র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রত্যাহার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাবমর্যদা ক্ষুণœ করা এবং গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন। প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের র্যাগিং করা হয়নি মর্মে তারা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃতীয় সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। আমরা এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই, তা না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে যাবো।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে শাস্তি কমবে নাকি একই থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. স্বদেশচন্দ্র সামন্ত স্মারকলিপির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিগগির একাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহ্বান করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement