২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
জেনুইন ট্যুরিস্টকে অফলোড করার সুযোগ নেই : ওসি

শাহজালাল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে বিদেশগামীরা নজরদারিতে

-

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্যুরিস্ট, ভিজিট এবং স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানো যাত্রীর ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন ডেস্কে কর্তব্যরত কিছু অদক্ষ কর্মকর্তার কারণে প্রায় সময় বৈধ যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীদের আচার আচরণে কোনো ধরনের সন্দেহ হলেই সাথে সাথে তাকে অফলোড করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিমানবন্দরে ‘লো প্রোফাইল’ যাত্রীদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করার কারণে অবৈধ পন্থায় লোক যাওয়ার হার বিগত সময়ের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদেশগামী যেসব যাত্রী বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করে ইমিগ্রেশনের আটটি পৃথক লাইনে দাঁড়াচ্ছেন, তখন পেছনে থাকা কর্মকর্তারা সন্দেহজনক যাত্রীদের ওপর নজরদারি শুরু করেন। এ সময় কাউকে সন্দেহ হলেই তাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ডেস্কে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার লাইনে দাঁড়ানো যাত্রী ইমিগ্রেশন কাউন্টারে গিয়ে পাসপোর্ট, ভিসা ও অন্যান্য ডকুমেন্ট দেয়ার পর দেখা যাচ্ছে, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যাত্রীর তথ্যে গরমিল পেলে তাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার টেবিলে যাওয়ার অনুরোধ করছেন। সেখানে যাত্রীর কাছ থেকে সঠিক জবাবে পাওয়ার পরই ‘ওকে’ চিহ্ন দিয়ে অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তবে কিছু কিছু সময় ডেস্কের কর্মকর্তাদের অদক্ষতার কারণে কোনো কোনো দেশের যাত্রীকে ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদেশগামী যেসব যাত্রী বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে ট্যুরিস্ট এবং ভিজিট ভিসার যাত্রীদের সাম্প্রতিক সময়ে ইমিগ্রেশনে বেশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কাউকে কাউকে ঢাকাতেই অফলোড করা হচ্ছে। এরপরও অভিযোগ রয়েছে ইমিগ্রেশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে ট্যুরিস্ট, স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া, এবং ভিজিট ভিসায় দুবাই ছাড়াও অন্যান্য ফ্লাইটে চক্রের পাঠানো যাত্রীরা উঠে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
গতকাল জনশক্তি রফতানিকারক একজন ব্যবসায়ী এ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, মূলত ফকিরাপুল, পল্টন, মতিঝিল, গুলশান ছাড়াও ঢাকার বাইরে সিলেট, চট্টগ্রাম এলাকায় গড়ে ওঠা নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের প্রতারক চক্রের সদস্যরা বায়রার নাম এবং লোগো ব্যবহার করে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ট্যুরিস্ট এবং ভিজিট ভিসার নামে বিদেশ পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর বদনাম হচ্ছে বায়রার। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে ইরাক, দুবাই, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, মালদ্বীপে যাত্রীদের পাঠাচ্ছে তাদের সাথে বিমাবন্দরের কারা জড়িত তাদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। তবে ইদানীং অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে বলে জানান তিনি।
গতকাল রোববার রাত ৭টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের কর্তব্যরত এক শিফটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়া দিগন্তকে বলেন, নজরদারি বাড়ানোর ফলে আগের তুলনায় ট্যুরিস্ট, ভিজিট ও স্টুডেন্ট ভিসার নামে বিদেশগামীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। প্রতিদিন কত যাত্রী অফলোড হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের শিফট হলো তিনটা। কোন শিফটে কতজন অফলোড করা হচ্ছে সেটা আমি বলতে পারব না। কোন দেশের যাত্রী বেশি অফলোড হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুবাই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। ট্যুরিস্ট ভিজিট ভিসার নামে যাত্রীদের কারা পাঠাচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে ওসি এ প্রতিবেদককে বলেন, এর সাথে নিশ্চয়ই কোনো চক্র আছে। আমি যেগুলো দেখি নেগেটিভ সেগুলো অফলোড করে দেই।
মালয়েশিয়া বিমানবন্দর থেকে সন্দেহজনক যাত্রী ফেরত আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা গেছে যাত্রী জেনুইন প্যাসেঞ্জার। কাজ করতে যাচ্ছে। কিন্তু তার রিসিভার আসেনি। তখন মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন তাকে অ্যাকসেপ্ট করে না। মালয়েশিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসায় যায়। আর ভিজিট ভিসায় যেগুলো যাচ্ছে সেগুলো সবই যে অফলোড হবে তা কিন্তু না। যেগুলো একদম লো প্রোফাইল, জব সিকার মনে হবে সেগুলোকে অফলোড করা হয়। যেগুলো জেনুইন ট্যুরিস্ট তাকে তো অফলোড করার কোনো সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে আমরা তার প্রোফাইলটা দেখি। সে বাংলাদেশে কোনো প্রফেশনের সাথে জড়িত, বা তার কোনো মুভমেন্ট আছে না-কি। সবকিছু আমরা আগে তদন্ত করি। বললেই তো আর একজন প্যাসেঞ্জারকে অফলোড করা যায় না। কারণ তার ভিসা ঠিক থাকে, সবকিছু ঠিক থাকে। আমরা মেইনলি দেখি তার প্রোফাইলটা লো কি-না এবং জবসিকার কিনা। এসব দেখে যদি মনে হয় ট্রু (সত্য), তাহলে অফলোড।
এ প্রসঙ্গে ইমিগ্রেশনের একজন কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের ইমিগ্রেশনে কিছু নতুন নতুন কর্মকর্তা এসেছেন। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। কিছুদিন গেলে সবঠিক হয়ে যাবে। তবে আগের থেকে এখন ইমিগ্রেশনে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে নিয়ম তত কঠোর হচ্ছে। যার কারণে অবৈধ পথে লোক যাওয়া কমে গেছে। এ দিকে গতকাল বিমানবন্দর প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক তানভীর হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, বিএমইটির স্মার্ট কার্ড ছাড়া যারাই বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে তাদের বিমানবন্দরে অফলোড করা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩

সকল