২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেরানীগঞ্জের অবৈধ কারখানাগুলোয় র্যাবের টানা অভিযান

-

নকল পণ্য ও কসমেটিক সামগ্রী তৈরির অভিযোগে কেরানীগঞ্জে ছয়টি অবৈধ কারখানায় তালা মেরেছে র্যাব। এ সময় ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া ছাড়াও কারখানা মালিকদের ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আট কোটি টাকা মূল্যের প্রসাধনী সামগ্রী জব্দ করে তা ধ্বংস করা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর দৈনিক নয়া দিগন্তে ‘কেরানীগঞ্জের অলিগলিতে মিলে দামি ব্র্যান্ডের পণ্য’ শীর্ষক এক খবর ছাপা হয়। এর পর থেকেই প্রশাসন এসব নকল পণ্যের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করে। দুই দিন ধরে ওই সব কারখানায় অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল ছাড়াও নামী-দামি কোম্পানির নানা পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। শিশু খাদ্যসহ নামী-দামি কোম্পানির নানা পণ্য নকল উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব পণ্য চকবাজারের কয়েকটি মার্কেটের দোকানে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ী ছাড়াও গ্রামগঞ্জের দোকানিরা তা কিনে নিচ্ছেন। স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে ভোক্তাদের মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলছে ওই সব সিন্ডিকেট সদস্যরা। তার মধ্যে কসমেটিকস আইটেম বেশি। এসব নিয়ে গত ৩ নভেম্বর নয়া দিগন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়। তাই গত দুই দিনে বিভিন্ন নকল কসমেটিকস কারখানায় অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। এ সময় জিঞ্জিরা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা, ১৮ লাখ টাকা জরিমানা, ছয়টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা এ ছাড়া আট কোটি টাকা মূল্যের প্রসাধনী জব্দ করে, তা ধ্বংস করা হয়। এ দিকে আতাসুর এলাকার তরিকুলের কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকার নকল বেবি কসমেটিকস সামগ্রী আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচজনকে। চুলা জ্বালিয়ে জনসন বেবি লোশন তৈরি করা হচ্ছে। দেড় ঘণ্টা পর চুলা থেকে নামিয়ে সেগুলোতে সুগন্ধি মিশিয়ে বাজারের জনসন বেবি লোশনের হুবহু নকল বোতলে ঢুকানো হচ্ছে। এগুলো প্রথমে রাজধানীর চকবাজারে এবং সেখান থেকে চলে যায় দেশের সব জায়গায়। জনসন বেবি লোশনের পাশাপাশি এখানে জনসন বেবি অয়েল, অলিভ অয়েল, কুমারিকা হেয়ার অয়েল, ডাবর আমলা তেলসহ মোট ২৬টি বিদেশী পণ্যের নকল মালামাল উদ্ধার করা হয়। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, র্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের সমন্বয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জে নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত নামী-দামি বিভিন্ন কোম্পানির নামে নি¤œ মানের, ভেজাল ও নকল প্রসাধনী তৈরি এবং মোড়কজাত করে বাজারজাত করার দায়ে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা ও সিলগালা করাসহ ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। এ ছাড়া প্রায় আট কোটি টাকা মূল্যের প্রসাধনী জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। কারখানাগুলোতে দেশী-বিদেশী নামী-দামি ব্র্যান্ডের নামে প্রায় ২৬ ধরনের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী তৈরি হচ্ছিল; যা বেশির ভাগ শিশুদের জন্য তৈরি।
আটককৃত ব্যক্তিদের কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement