বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাসহ ৫ জন বরখাস্ত : আটক ৭
- শার্শা (যশোর) সংবাদদাতা
- ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
বেনাপোল কাস্টম হাউজের লকার ভেঙে বিভিন্ন সময়ে আটককৃত ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার থেকে রোববার তিন দিনের বন্ধের সময় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে দুর্বৃত্তরা কাস্টমের সব সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। লকারের মধ্যে স্বর্ণ, ডলার, টাকা, কষ্টি পাথর ও বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান সম্পদ ছিল বলে কাস্টম সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে লকারের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহাবুল সর্দারসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনো চুরি যাওয়া কোনো মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি থানা পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এখনো পর্যন্ত কাস্টম হাউজের মূল ফটকে দায়িত্বরত অস্ত্রধারী আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তা ছাড়া কাস্টম হাউজ সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হলেও এ হাউজের ভেতরে রয়ে গেছে এনজিও নামে পরিচিত প্রায় ২০০ বহিরাগত যুবক। সরকারি কর্মচারী না হলেও কাস্টম হাউজে এদের অবাধ বিচরণ। কাস্টম হাউজের প্রতিটি টেবিল থেকে এরা অফিসারদের নামে ঘুষের টাকা আদায় করে থাকেন। অফিসারদের সাথে রয়েছে এদের সখ্য। কাস্টম হাউজের সব গোপন তথ্য এদের জানা। রাতের জন্য যেসব বহিরাগতকে এখানে গার্ড হিসেবে রাখা হয়েছে তাদের বেশির ভাগেরই রয়েছে চুরির দুর্নাম। বেনাপোলের বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের এখানে নিয়ে এসেছেন কিছু কাস্টম অফিসার। এরা রাতেও কাস্টম অভ্যন্তরে অবস্থান করে থাকে।
কাস্টম ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল কাস্টমের পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলায় গোপনীয় কক্ষের তালা ভাঙার পর লোহার লকার ভাঙে দুর্বৃত্তরা। লকারের মধ্যে ৩০ কেজির মতো স্বর্ণ, ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার, কোটি টাকার উপরে বাংলাদেশী টাকাসহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান সম্পদ রক্ষিত ছিল। দুর্ধর্ষ এ চুরির রহস্য উদঘাটনের জন্য সোমবার সকালে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে পোর্ট থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি, সিআইডি (ক্রাইম সিন) পিবিআই যৌথভাবে তদন্তসহ লকারে রক্ষিত মালামালের ইনভেন্টির কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ কাজ চলে। ইনভেন্টি শেষে দেখা যায় লকারে অন্যান্য মালামাল ঠিক থাকলেও ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম স্বর্ণ কম পাওয়া যায়, যা দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে দীর্ঘ দিন ধরে এ ভল্টে রাখা জিনিসপত্রের রেজিস্টার খাতায় যা লিপিবদ্ধ করা আছে, তা এখনো সঠিকভাবে দেখায়নি কাস্টম কর্তৃপক্ষ। ফলে চুরি যাওয়া মালামালের যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা-ও সন্তোষ জনক নয়।
যশোর জেলা পুলিশের এডিশনাল এসপি তৌহিদুর রহমান জানান, ইনভেন্টির কাজের পর দেখা গেছে, লকারে অন্যান্য মালামাল ঠিক আছে তবে ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম স্বর্ণ কম পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, কাস্টমের যুগ্ম কমিশনার শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। লকারের দায়িত্বে থাকা পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা