১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রত্যেক মুসলিম পরিবারে একজন মাদরাসা শিক্ষিত থাকা উচিত : আল্লামা আহমদ শফী

-

হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, দেশের প্রতিটি মুসলিম পরিবারের উচিত পরিবারের অন্তত একজন ছেলেকে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত করা। মাদরাসা শিক্ষাই একজন ব্যক্তিকে পরিপূর্ণ নীতিবান ও আদর্শিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। ধর্মপ্রাণ বা ধর্মভীরু মানুষ না থাকলে সমাজ তমসাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে। সরকারি স্বীকৃতি অর্জনের পর দেশের কওমি মাদরাসার ছাত্ররা এখন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল স্রোতের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। কওমি মাদরাসা থেকে একটি ছাত্র সনদ নিয়ে বের হলে এক দিকে একটি পরিবারের যেমন আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধিত হবে, তেমনি বৈষয়িক উন্নতিও নিশ্চিত হবে।
তিনি গত মঙ্গলবার রাতে রায়পুরার ঘাঘটিয়া দারুল কুরআন ইসলামিয়া মাদরাসার ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা আনোয়ার হোসেন চিশতী, মাওলানা মেরাজুল হক মাযহারী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দীক, আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী এবং মাওলানা ইলিয়াস শেরপুরী প্রমুখ।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ইসলামী জ্ঞানার্জন এবং ইহ ও পারলৌকিক কামিয়াবির জন্য প্রতিটি মুসলমানেরই পীরের মুরিদ হওয়া প্রয়োজন। এতে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনে যেমন আধ্যাত্মিক উন্নয়ন সাধিত হয়, তেমনি পারিবারিক পর্যায়েও ইসলামের চর্চা বৃদ্ধি পায়। আমাদের মাজহাবি ইমামগণও পীরের মুরিদ ছিলেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও ইমাম মালেক (রহ:) ইমাম জাফর সাদেকের (রহ:) মুরিদ। ইমাম শাফেয়ী (রহ:) ি ছলেন ইমাম মুহাম্মদের (রহ:) মুরিদ এবং ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:) ছিলেন হজরত বিশরের (রহ:) মুরিদ। পীরের মুরিদ হলে একজন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আমল নামাজ, রোজা হজ, জাকাতসহ সব ফরজ সুন্নত এবং নফল বন্দেগি সচেতন থাকতে পারে। সকাল-বিকাল জিকিরের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ করতে পারে। আল্লাহর নৈকট্য লাভে জিকির হচ্ছে একটি উত্তম বন্দেগি। তিনি বলেন, কোরবানির চামড়া ছিল কওমি মাদরাসাগুলোর একটি আর্থিক সংস্থান। কোরবানির চামড়ার টাকা দিয়ে মাদরাসাগুলো দু-তিন মাসের ব্যয় নির্বাহ করতে পারত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই চামড়া মূল্যহীন হয়ে পড়ায় কওমি মাদরাসাগুলো দৈন্যদশার মধ্য দিয়ে চলছে। তিনি দেশের মানুষকে কওমি মাদরাসাগুলোকে একটু বেশি বেশি আর্থিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী বলেন, বাবরি মসজিদ মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় সারা বিশ্বের মুসলমানদেরকে ব্যথিত করেছে। মুসলমানেরা মনে করে বাবরি মসজিদ ভাঙা থেকে শুরু করে রায় পর্যন্ত সবই একসূত্রে বাঁধা। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট যদি বাবরি মসজিদের জায়গায় বাবরি মসজিদ রেখে ৫ একর জায়গা মন্দির নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিতেন, তবে সুপ্রিম কোর্ট তথা হিন্দুদের হিন্দুয়ানী মর্যাদা বৃদ্ধি পেত। এ রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট শুধু এর বিচারিক মর্যাদাই নষ্ট করেনি, প্রকারান্তরে হিন্দুত্বের মর্যাদাও ক্ষুণœ করেছেন। বাবরি মসজিদ ভেঙে হিন্দু মন্দির নির্মাণ করা যে কত বড় জঘন্য ধর্মীয় সন্ত্রাস তা ভারত সময়ান্তে বুঝতে পারবে। মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করা সভ্যতা নয়, বন্যতা। তিনি ভারতীয় মুসলমানদেরকে সহনশীলতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহ্বান জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement