২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওসমানীনগরে তাজিয়া মিছিলে সংঘর্ষ : নিহত ১

-

সিলেটের ওসমানীনগরে আশুরার তাজিয়া মিছিল মাজারে নিয়ে যাওয়ার পথে এক পক্ষের তাজিয়ায় অপর পক্ষের তাজিয়া লেগে যাওয়ার জের ধরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অপর দু’জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম আবদুল খালিক (৪৭)। তিনি উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের করনসি দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে। আহত দু’জন হলেনÑ নিহতের ভাতিজা আনোয়ার মিয়া (২৫) ও গ্রামের মৃত ছমরু মিয়ার ছেলে হিরন মিয়া (৩৫)।
জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের নিজ করনসি দক্ষিণপাড়া গ্রামে তাজিয়া নিয়ে নিজ করনসি মাইজগাঁওয়ের পাঞ্জাতনের (কটাইর মোকাম) মোকামে যাওয়ার পথে এক পক্ষের তাজিয়ার সাথে অপর পক্ষের তাজিয়ার ধাক্কা লেগে গেলে আবদুল খালিক ও আবদুর রশিদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। দু’জনের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তখন আনোয়ার ও হিরন নামের দু’জন আহত হন। বিষয়টি জানতে পেরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মধ্যস্থতা করলে সংঘর্ষ থেমে যায়। সংঘষের্র কিছুক্ষণ পর বাড়িতে গিয়ে আবদুল খালিক মারা যান। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। তা ছাড়া এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে গত মঙ্গলবার বাদ আসর নিজ করনসি গ্রামে নামাজে জানাজা শেষে নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়নি।

নিহতের ছেলে সুমন মিয়া জানান, মাজারে তাজিয়া নিয়ে যাওয়ার সময় ওরা আমাদের মারধর করে। এই ঘটনায় আমার বাবা মারা গেছেন। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
প্রতিপক্ষ জামাল মিয়া (২৬) জানান, তাজিয়া নিয়ে লোকজন মাজারে যাওয়ার পথে একটি তাজিয়ার সাথে অন্য একটি তাজিয়া লেগে যায়। এ সময় আনোয়ার মিয়া আমাদের গালমন্দ করেন। তার গালমন্দ শুনে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি শেষ হয়ে গেলে বাড়িতে গিয়ে আবদুল খালিক স্ট্রোক করে মারা যান। তারা এখন এটাকে হত্যাকাণ্ড বলে আমাদের ফাঁসাতে চাইছে। তিনি আগেও একবার স্ট্রোক করেছিলেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ জাহান আলী জানান, তাজিয়া নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে ঠিক, তবে আবদুল খালিক সংঘর্ষে মারা গছেন না স্বাভাবিক অবস্থায় মারা গেছেন এটা বলা যাচ্ছে না।

গোয়ালাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক জানান, করনসি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবদুল খালিক নামের একজন মারা গেছেন। আমি এখন তার জানাজায় আছি, পরে কথা বলব।
ওসমানীনগর থানার ওসি এস এম আল মামুন বলেন, থানার অফিসার মৃত ব্যক্তির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পেয়েছি তিনি মধ্যস্থতায় ছিলেন। হয়তো ঝগড়া থামাতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যেতে পারেন। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে কী কারণে তিনি মারা গেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement