১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

  নুসরাত হত্যা মামলার বিচার আদালতে ন্যায় বিচার চাইলেন আ’লীগ নেতা রুহুল আমিন

-

সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামিরা সোমবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এ সময় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদানকারী আসামিরা পিবিআই হেফাজতে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাদের ওপর চরম শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের আদ্যোপান্ত আদালতের সামনে তুলে ধরে সাফাই সাক্ষী দিবে না জানিয়ে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
দুপুরে ১৬ আসামির উপস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে হত্যা মামলার বাদি নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহ আলমকে ফের জেরা করেন আসামি হাফেজ আব্দুল কাদেরের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু। এরপর আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য পিপি হাফেজ আহামদকে আদেশ দেন।
এ সময় পিপি মামলার আসামি সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিনের অপরাধ বর্ণনা করে তার কাছে বক্তব্য জানতে চান। এ পর্যায়ে বিচারক মামুনুর রশিদ আসামির কাঠগড়ায় থাকা রুহুল আমিনকে উদ্দেশ করে বলেন, মামলার বিচার কাজ শুরু থেকে আপনার সাথে আমার সবচেয়ে বেশি চোখাচুখি হয়েছে। আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে প্রশ্ন করতে পারিনি। আজকে প্রশ্ন করার জন্য আইন আমাকে সে ক্ষমতা দিয়েছে। আমি আপনাকে প্রশ্ন করব আপনি নিরেট উত্তর দিবেন। তখন বিচারক প্রশ্ন করেন সহ-সভাপতি হিসেবে আপনি ২৭ মার্চের ঘটনায় সিরাজ উদদৌলার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কী জানেন? উত্তরে রুহুল বলেন, ওই দিনের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা আছে জেনে তাকে পুলিশে সোপর্দ করি।
এরপর পিপির প্রশ্নের জবাবে আসামি রুহুল আদালতকে বলেন, আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। ঘটনার সাথে আমার ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই। মামলার বাদি নোমান, নুসরাতের মা, বাবা, ভাইসহ ৮৭ জন সাক্ষীর মধ্যে কেউ আমার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেননি।

আমি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি হলেও মাদরাসায় আমার তেমন আসা যাওয়া ছিল না। গত ২৭ মে নুসরাতকে যৌন হয়রানির বিষয়টি জানতে পেরে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে পুলিশে সোপর্দ করি। আমি সব সময় নুসরাতের পক্ষেই ছিলাম। সিরাজের পক্ষে বিপক্ষে মানব বন্ধনের সময় আমি উপজেলা নির্বাচনে ব্যস্ত থাকায় সেদিকে তেমন নজর দিতে পারিনি। তবে নুসরাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় আমি তার পরিবারকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা করি।

আপনি রাজনীতির বাইরে কী করেন আদালত জানতে চাইলে জবাবে বলেন আমি ব্যবসায়ী। কী ব্যবসায় করেন প্রশ্নের জবাবে আমি ঠিকাদারি ব্যবসায় করি। তিনি আদালতকে আরো বলেন, আমি আমেরিকার সিটিজেন প্রাপ্ত। এ ঘটনায় আমাকে আসামি করায় আমার গ্রিনকার্ড বাতিল হয়ে যায়। আমি বছরে ২-৩ বার বিদেশে যাই। আমার অসুস্থ বৃদ্ধ মা সেখানে থাকে আমি আর তাকে দেখতে যেতে পারব না বলে আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির আগের কমিটি দ্বারা আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি। সাফাই সাক্ষী দিবে না জানিয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেন। তখন আদালত বলেন, আপনি আমাদের জন্য দোয়া করবেন আমরাও আপনার জন্য দোয়া করব।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল