২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
১০ তলা থেকে পড়ে নির্মাণশ্রমিক আহত

টঙ্গীতে সিটি করপোরেশনের বাধা উপেক্ষা করে চলছে ১২ তলা ভবন নির্মাণ

-

প্রতিবেশী অন্যান্য বাড়ির মালিক ও সিটি করপোরেশনের বাধা উপেক্ষা করে টঙ্গীর বনমালা রোডে প্ল্যানবহির্ভূতভাবে ‘ফেমাস ভবন’ নামে ১২ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ বিধিমালার কোনো তোয়াক্কা না করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণের কারণে সেখানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে ভবনটির পাশের অন্যান্য বাড়ির মালিকরা আতঙ্কে রয়েছেন। ইতোমধ্যে গত মঙ্গলবার ভবনটির ১০ম তলা থেকে নিচে পড়ে শাহাদাত নামে এক নির্মাণশ্রমিক গুরুতর আহত হন। এলাকাবাসী ওই শ্রমিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে ভবন কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই শ্রমিককে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ফলে হতভাগা ওই শ্রমিকের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ বলতে পারছে না।
অন্যান্য বাড়ির মালিকরা জানান, প্রায় ৮ বছর আগের বিলুপ্ত টঙ্গী পৌরসভার নামে ভুয়া প্ল্যানে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চারপাশে কোনো জায়গা না ছেড়ে শুরু থেকেই নির্মাণ বিধিমালার কোনো তোয়াক্কা না করায় পাশের বাড়ির মালিকরা বাধা দেন। তাদের বাধা উপেক্ষা করায় তারা সিটি করপোরেশনে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে নগর কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার জন্য গত ৬ আগস্ট লিখিত নোটিশ দেয়। কিন্তু এর পরও কোনো তোয়াক্কা করেনি ভবন মালিকপক্ষ। ভবনটির পূর্ব পাশের টিনশেড বাড়ির মালিক মনির সরকার, দক্ষিণ পাশের টিনশেড বাড়ির মালিক সুমন মিয়া ও পশ্চিম পাশের বাড়ির মালিক হারুন মিয়া জানান, নির্মাণাধীন ভবনের ওপর থেকে তাদের টিনের চালায় ইট, সুরকি, রডের টুকরো, শাবল, কাঠ, বাঁশ, প্লেনশিটসহ প্রায়ই বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী পড়ায় তারা দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। দুর্ঘটনা প্রতিরোধক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না রাখায় এবং কোনো ধরনের নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ না করায় ভবনের ওপর থেকে কখন তাদের মাথার ওপর কী পড়ে সব সময় তারা এমন আতঙ্কে থাকেন।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্ল্যান বহির্ভূতভাবে বহুতল ভবন নির্মাণের কারণে সেখানে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং এতে জনসাধারণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় ইমারত নির্মাণ আইনবিরোধী এই ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য গত ৬ আগস্ট ভবন মালিক ইব্রাহিমকে নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ অমান্য করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাওয়ায় পাশের বাড়ির মালিকরা বার বার সিটি করপোরেশনে এসে আপত্তি জানাচ্ছেন বলেও তিনি স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে ভবন মালিক ইব্রাহিমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুর্ঘটনার দিন অনেক সাংবাদিক আমার কাছে এসেছিলেন। তারা সব কিছু জেনে গেছেন। আপনি তাদের কাছ থেকে জেনে নিন।’ এমন পরামর্শ দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement