২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডেঙ্গুজ্বরের মওসুম কি দীর্ঘায়িত হবে?

-

বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার কোনো লক্ষণ নেই। সরকারের দেয়া হিসাবেই বলা হচ্ছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭০৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত শনিবার জানানো হয়, এ মাসের ১৭ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতলে ভর্তি রোগীর যে সংখ্যা জুলাই মাসের সংখ্যার দ্বিগুণ।
আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এবার ডেঙ্গু মওসুম দীর্ঘায়িত হবে কি না? সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, জুলাই মাসে রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন, যা আগস্ট মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত হয়েছে ৩৩ হাজর ১৫ জন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার কারণে উদ্বেগ অনেক বেশি। কিন্তু ডেঙ্গুর মওসুম দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১৯৫৩ সালের পর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার কারণে বছরের শুরুতে এডিস মশার ঘনত্ব অনেক বেড়েছে। সেটা ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আরো বেড়েছে। ফলে জুন-জুলাইয়ে বাংলাদেশে এডিস মশার একটি বড় কমিউনিটি ডেভেলপ করেছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু ভাইরাস যেহেতু ঢাকায় আগে থেকেই ছিল, সেটা ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ডেঙ্গুর এখন যা পরিস্থিতি, তার থেকে খুব বেশি বাড়বে বলে আমার মনে হয় না। তবে এটি খুব কমে যাবে এটাও বলা যাবে না। ডেঙ্গু না বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি সরকারের নেয়া নানা রকম উদ্যোগ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াকে কারণ মনে করেন।
যদিও সরকারের মশা মারার ওষুধ আনা এবং বিতরণ নিয়ে নানা রকম সমালোচনাও রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে জুলাই মাসের শেষের দিকে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া যেতে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় সবাই ঢাকা থেকে গেছেন, কিংবা তাদের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ডেঙ্গু ছড়িয়েছেÑ এমনটা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বরগুনার বাসিন্দা ময়না আক্তার গত পাঁচ দিন থেকে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এক মাসের মধ্যে ময়না আক্তারের পরিবারের অন্তত দশজন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৭০৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৩৪ জন। আর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪০ জন মারা গেছেন বলে বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে বেশি বলা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement