২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টাস্কফোর্স কমিটির জরুরি বৈঠক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি

-

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রস্তুতির কাজ চলছে। এই নিয়ে রোববার দুপুরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে টাস্কফোর্স কমিটির জরুরি বৈঠক বসেছে কক্সবাজারে টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। পরে সাংবাদিকদের চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আলম নেজামী বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা।
গতকাল রোববার দুপুরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে টাস্কফোর্স কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে নুরুল আলম নেজামী বলেন, ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা এরই মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছি। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে হয়তো এ কার্যক্রম আরো বাড়ানো হবে।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত আরআরআরসি শামসুদ্দৌজা নয়ন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম সরওয়ার কামালসহ সেনাবাহিনী ও ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিরা।
এ দিকে রোহিঙ্গারাও ফিরে যেতে আগ্রহী। নানা হুমকি উপেক্ষা করে অনেক রোহিঙ্গা নিজ উদ্যোগে রাখাইন ফিরে যাচ্ছে। গত ৯ আগস্টও ২১ জন রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষ মিয়ানমার ফিরে গেছে। তবে বেশ কিছু রোহিঙ্গা বলছে, মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি এবং তাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের বিচারের নিশ্চয়তা না পেলে তারা ফিরে যেতে রাজি নয়। অপর দিকে ক্যাম্পগুলোতে প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানি দাতাদের নিবৃত করা সম্ভব না হলে ফের হোঁচট খাওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
গত জুলাই মাসের ২৭-২৯ তারিখ মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ মিন্ট থুর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের ডেলিগেশন টিম বাংলাদেশ সফর করেন। টিমের সদস্যরা দুই দিনে কয়েক দফায় ক্যাম্পগুলোতে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান রোহিঙ্গাদের সাথে পৃথক পৃথক আলোচনায় অংশ নেন। মিয়ানমার সফরকারী টিমের সাথে যুক্ত হন আসিয়ানেরÑ আহা সেন্টারের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফিরে কী কী সুবিধা ভোগ করবে, জীবন-জীবিকা কিভাবে নির্বাহ হবে ও অন্যান্য অবস্থার কী পরিবর্তন হয়েছে, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সরকারের পক্ষ থেকে গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ডেলিগেশন টিম। এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের লিফলেটও বিতরণ করা হয়।
সৈয়দুল আমিন নামের এক রোহিঙ্গা নেতা জানান, মিয়ানমার টিমের সাথে আলোচনায় রোহিঙ্গারা নিজ জন্মভূমিতে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে ওঠে। কিন্তু জানমালের নিরাপত্তার অভাবে কেউ মুখ খুলে বলতে পারছেন না। কারণ এর আগে এ ধরনের ফিরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা বেশ কয়েকজন হত্যার শিকার হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর নির্ধারিত সময়ে রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদে প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারেনি। সেই সময় উখিয়ার ঘুমধুম ও টেকনাফের টেকনাফ নাফ নদী তীরে কেরণতলী (নয়াপাড়া) প্রত্যাবাসন ঘাট নির্মাণ হয়েছিল। এর মধ্যে টেকনাফের প্রত্যাবাসন ঘাটে প্যারাবনের ভেতর দিয়ে লম্বা কাঠের জেটি, ৩৩টি আধা সেমি টিনের থাকার ঘর, চারটি শৌচাগার রয়েছে। সেখানে ১৬ আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement