২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বেনাপোল চেকপোস্টে নিত্য হয়রানি শিশু ও রোগীদের নিয়ে বিপাকে ভারতগামী যাত্রীরা

-

ঈদের লম্বা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বেনাপোল চেকপোস্টে উপচে পড়া ভিড়। হাজার হাজার বাংলাদেশী যাত্রী বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাচ্ছেন। কেউ বেড়াতে, কেউ যাচ্ছেন ডাক্তার দেখাতে আবার অনেকে যাচ্ছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। এদের অধিকাংশই পরিবার-পরিজন নিয়ে যাচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন পুলিশের কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা। রোদ-বৃষ্টিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে শিশু ও রোগী যাত্রীদের নিয়ে বিপাকে পড়ছে সঙ্গীরা। বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে লাইনে দাঁড়িয়ে কাস্টম ইমিগ্রেশন করার নিয়ম থাকলেও সংরক্ষিত এলাকায় বহিরাগতদের যানবাহন থাকায় যাত্রীরা মূল সড়কে দাঁড়িয়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেবার নামে পোর্ট কর্তৃপক্ষ যাত্রীপ্রতি ৪২টাকা ৭০ পয়সার স্থলে ৫০ টাকা আদায় করলেও সেবার কোনো মান বাড়েনি এখানে। হয়রানির শিকার নিত্যদিন।
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার পাসপোর্ট যাত্রী দুই দেশের মধ্যে চলাচল করে থাকে। এবার কোরবানির ঈদের লম্বা ছুটি পাওয়ায় বাংলাদেশীদের ভারতে যাওয়ার পরিমাণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন দ্বিগুণের চেয়ে বেশি যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। কিন্তু শিশু, রোগী ও বয়স্ক যাত্রীদের প্রবেশে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে না। ৮-১৬ আগস্ট এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ৯৫ হাজার যাত্রী ভারত যাতায়াত করেছেন। ভারত থেকে এসেছে কম। কিন্তু চলাচলে যাত্রীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। একজন যাত্রীকে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পৌঁছতে বাংলাদেশ সাইডে ৭ জায়গায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, আমরা লাইনে আছি অথচ আনসার ও পুলিশের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে লাইন ছাড়া টার্মিনালে যাত্রী ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তবে এখানে এসবি পুলিশের উপস্থিতি থাকলে এমন অনিয়ম কিছুটা কম হয়। বেনাপোল ইমিগ্রেশন পার হয়ে দু’দেশের নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় আবারও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। ভারতীয় গেটে ধীর গতিতে পাসপোর্ট চেকিং করায় দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ লাইন আরো বাড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে এসব যাত্রীকে ভারতীয় সীমান্তেও। এতে ছোট শিশু ও রোগীদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।
তবে বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা জানালেন, এখানে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনো যাত্রী যাতে হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য আমরা তদারকি করছি। রোগী ও শিশুর সাথে থাকা যাত্রীদের লাইন ছাড়া প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। ঈদের ছুটির কারণে বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়ার যাত্রী ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৮ দিনে প্রায় ৯৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছে। রোগী ও বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী এ প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমদানি- রফতানিকারকদের হয়রানির কারণে এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্যে যেমন ধস নেমেছে, যাত্রী হয়রানির কারণে পাসপোর্ট যাত্রীরও যাওয়া-আসা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। এ দিকে আনসার বা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তাদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানালেন ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আবুল বাশার।


আরো সংবাদ



premium cement