১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়াতে ঢাবি শিক্ষক সমিতি সময় নিলো এক মাস

-

বাজারে বিক্রি হওয়া অস্বাস্থ্যকর পাস্তুরিত দুধ নিয়ে গবেষণা করে সরকারের একজন সচিবের হুমকিতে পড়ার প্রায় ১৫ দিন পর এবং গবেষণার প্রায় এক মাসের মাথায় গবেষক অধ্যাপক ড. আ ব ম ফারুকের পাশে দাঁড়াল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গত ২৫ জুন পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত দুধসহ বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের ওপর গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর থেকে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। শুধু তাই নয়, নিজ বিভাগ ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগসহ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদভুক্ত চারটি বিভাগই বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ নিয়ে সারা দেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীলসমাজ অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি, মানববন্ধন করে। কিন্তু এত দিন চুপ থাকার পরে গতকাল সংগঠনটি অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতি শুরু থেকেই এ সংক্রান্ত সব তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। গত ১৮ জুলাই সমিতির কার্যকরী পরিষদের এক সভায় অধ্যাপক আ ব ম ফারুককে হেনস্তা করার এ ধরনের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা করা হয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসহ সচেতন মহলের অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগকে সমিতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাবির সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ফারুক কর্তৃক পাস্তুরিত তরল দুধে অ্যান্টিবায়োটিকসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানসমূহের উপস্থিতি বিষয়ক একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব গবেষণা-বিশ্লেষণকে ভুল এবং অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি টেলিভিশনের একটি টক-শোতে অধ্যাপক ফারুকের সাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব যে রূঢ় ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন, তা অনাকাক্সিক্ষত ও শিষ্টাচারবহির্ভূত উল্লেখ করে শিক্ষক সমিতি এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বলে জানানো হয়।
কোনো গবেষণার ফলাফল ভুল অথবা শুদ্ধ, তা পাল্টা গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হয় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, মন্ত্রণালয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে গবেষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার যে হুমকি দিয়েছে, তা যেকোনো গবেষকের গবেষণার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। এ ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন গবেষকদের গবেষণায় নিরুৎসাহিত করবে এবং তাতে জাতির প্রভূত ক্ষতি হবে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে।
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও মানবকল্যাণে শিক্ষকরা সর্বদা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে এসেছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দুধসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদানসমূহ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement