২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি কমিটি শূন্য ৩ মাসের বেশি সময়

-

লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কমিটি শূন্য রয়েছে। ফলে দলীয় কোনো কর্মকাণ্ড এখানে নেই বলেই চলে। কোনো কর্মসূচি না থাকায় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। গত ৯ এপ্রিল কেন্দ্র থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিটি বাতিল করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলা কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি করার কথা থাকলেও প্রায় চার মাসেও তা সম্ভব হয়নি। দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রার্থীরা কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ তথা দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয় এক নেতা এ প্রতিবেদকে জানান।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৮ আক্টোবর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে সভাপতি ও সাহাবুদ্দীন সাবুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পরপর সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা হয়নি। দলীয় যুগ্ম মহাসচিব ২০১৫ সালের ৯ আগস্ট চিঠির মাধ্যমে ওই বছরের ৩০ সেপ্টম্বরের মধ্যে সম্মেলনের নির্দেশ দিলেও তা হয়নি। এর পরও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কয়েক বার সম্মেলন করার তাগাদা থাকলেও তা করতে পারেনি জেলা বিএনপি। এমনি এক প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
স্থানীয় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির বিরোধ ও গ্রুপিং চলছে কমিটি গঠনের শুরু থেকে। দীর্ঘ দিন থেকে জেলা বিএনপি এক দিকে সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী অন্য দিকে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান হাসিব। উভয় গ্রুপ নিজেদের আধিপত্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর জন্য বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথক পৃথকভাবে পালন করে আসছে। আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও এ্যানী চৌধুরী গ্রুপ শহরের বড় পোলের দক্ষিণ পাড়ে জেলা বিএনপির অফিসে ও এ্যানী চৌধুরীর বাড়িতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে সভা-সমাবেশ করে আসছে। একই সময় অপর গ্রুপ সাহাবুদ্দিন সাবুর নেতৃত্বে তার বাড়ি উত্তর তেমুহনী ও প্রেস ক্লাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করে। বিরোধ এতটাই প্রকাশ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের ছায়াও দেখতে পারে না।
এর ফলে তৃণমূল পর্যায়ে পর্যন্ত এ গ্রুপিং ছড়িয়ে পড়েছে।
কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তৃণমূল নেতা উপজেলা বিএপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ নুরুল আলম বুলবুল জানান, আমরা চাই যত সম্ভব তাড়াতাড়ি জেলা কমিটি হওয়া দরকার এবং মাঠপর্যায়ে যাদের সম্পর্ক আছে এমন নেতাদের দিয়ে কমিটি হওয়া জরুরি। অচলাবস্থা কাটানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শিগগিরই নতুন কমিটি দেবেন এটাই আশা করছি। সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী আ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, আমারা আশা করি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অচিরেই কমিটি ঘোষণা করবেন। এতে তৃণমূলের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে এবং আগের চেয়ে অনেক বেশি গতিশীল হবে।
অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ জানান, মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা হতাশ, কোনো কর্মসূচি পালন করা যায় না। কোনো কর্মকাণ্ড নেই, আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। সাবেক কমিটি জেলা সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিভাগীয় কর্মকাণ্ড ও ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করার ব্যাপারে ব্যস্ত রয়েছেন। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমান জেলা কমিটি ঘোষণা দেবেন।


আরো সংবাদ



premium cement