২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এফআইসিএলের চেয়ারম্যান শামীম গ্রেফতার

-

মানিলন্ডারিংসহ ২৮ মামলার পলাতক আসামি ও ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (এফআইসিএল) চেয়ারম্যান শামীম কবিরকে চার বছর পর গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সিলেট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীম কবির মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে তা আর ফেরত দেয়নি। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ ২৮টি মামলা রয়েছে। সে চার বছর ধরে পলাতক ছিল। ৯ জুলাই সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডি কর্মকর্তা জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড ২০০৬ সালে কুমিল্লার জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেয়। অনুমোদনের পর শামীম কবির ও তার নিকটআত্মীয়সহ স্থানীয় কিছু যুবককে নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট বাজারে একটি অফিস খুলে কার্যক্রম শুরু করে। পরে সংস্থাটি মুন্সিরহাট অফিসের নিবন্ধন সংশোধন করে থানা থেকে জেলা পর্যায়ে এবং আরো পরে চট্টগ্রাম বিভাগের অনুমোদন নিয়ে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাখা অফিসের অনুমোদন নেয়। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করে। এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে দুই হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ দেয়ার কথা ঘোষণা দেয়। বেশি মুনাফার আশায় কেউ কেউ টাকা ধার এনে, জমিজমা বিক্রি করে এই সমিতিতে টাকা রাখতেন। কোনো কোনো সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী পেনশনের টাকা বাসায় না নিয়ে দ্বিগুণ-তিন গুণ করার জন্য ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে জমা রাখেন। বিভিন্ন রকম ছলচাতুরী করে শামীম কবির ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন থানা এলাকায় বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রায় ২৫টি অফিস খুলে আমানত সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রাখে।
সিআইডি কর্মকর্তা জানান, শামীম কবিরসহ মামলার অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। ২০১৩-১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়ে সে কৌশলে আত্মগোপন করে এবং প্রচার করতে থাকে যে, এফআইসিএলের চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। সিআইডিকে শামীম কবিরের দেয়া তথ্য মতে, আত্মসাৎ করা বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে তার নিজ গ্রাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকায় প্রাসাদসম বাড়ি, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, গাজীপুরের কালিগঞ্জ, কক্সবাজার জেলার উখিয়া, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডুসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্লট, ফ্ল্যাটসহ সম্পদ অর্জন করে। ২০১৫ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।


আরো সংবাদ



premium cement