২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিএনপিকে মাইনাস করতে হবে : সরকারি দল

সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনা

খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার : বিএনপি
-

প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে বিএনপির মতো সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তিকে রাজনীতির ময়দান থেকে মাইনাস করতে হবে। লুটপাট, অগ্নিসন্ত্রাস, পুড়িয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। অন্য দিকে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। প্রতিহিংসার কারণে তিনি কারাবন্দী। তারা তার মুক্তির দাবি জানান।
গতকাল সোমবার এই আলোচনায় প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো: ফজলে রাব্বি মিয়া সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় অংশ নেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সরকারি দলের ডা: ইউনুস আলী সরকার, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, মাহফুজুর রহমান, শাহে আলম, মমতাজ বেগম এবং জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার ও বিকল্প ধারার মাহি বি চৌধুরী প্রমুখ।
বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বলেন, আমি একজন আইনজীবী হিসেবে যতদূর জানি, খালেদা জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে, তা জামিনযোগ্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নানা উছিলায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের নামে দায়েরকৃত গায়েবি মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ধনীকে আরো ধনী করবে, গরিবকে আরো গরিব করবে। বাজেট প্রতি বছর বাড়লেও বাস্তবায়ন কমছে। ঘাটতি মেটাতে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়ছে। ফলে বিনিয়োগ বাড়ছে না। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না, কর্মসংস্থান না হলে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে না। শেয়ারবাজার ও ব্যাংক থেকে লুট হচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে কোনো দিকনির্দেশনা নেই বাজেটে।
বিকল্প ধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী বলেন, সারা দেশে নারীর ক্ষমতায় চোখে দেখার মতো। তবে দুর্নীতিতে নারীরা পিছিয়ে আছে, এটা একটা শুভসংবাদ। বিশাল একটি তরুণ প্রজন্ম উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়েছে। উন্নত দেশে এটা পজেটিভ হিসেবে দেখলেও আমাদের দেশে তা নেগেটিভ হিসেবে দেখা হয়।
সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাজেট শুধু বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, দেশের কল্যাণে সরকারের দর্শন ফুটে ওঠে বাজেটে। তবে করের আওতা অবশ্যই সহনীয় মাত্রায় বাড়াতে হবে। অনেক মন্ত্রণালয় বাজেট বরাদ্দ কেন বাস্তবায়ন করতে পারছে না তা খতিয়ে দেখতে হবে। কে কী সমালোচনা করল সেটি দেখলে হবে না। বিএনপি এখন কোথায়, তারা তো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গোটা জাতিকে নিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর বিচার বিভাগের জন্য বাজেট আরো বাড়াতে হবে। বিচারকের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। মামলাজট নিরসনে বিচারকের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে। হাইকোর্টে আরো একশ’ জন বিচারপতি নিয়োগ করা প্রয়োজন।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, বিএনপিসহ কিছু কথিত সুশীলসমাজের ব্যক্তি প্রস্তাবিত বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বাজেট বলেন। কিন্তু টানা ১০ বছর ধরে এমন উচ্চাভিলাষী বাজেট দিয়ে তা বাস্তবায়ন করে বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে স্থাপন করেছে। দেশ আজ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
মমতাজ বেগম বিএনপির সদস্যদের সমালোচনা করে বলেন, দলটির সংরক্ষিত আসনের একজন সদস্য বাইরে থেকে এজেন্ডা নিয়ে সংসদে এসেছে। তার দায়িত্ব জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা, খালেদা-তারেকের গুণগান করা। তিনি বলেন, যারা দেশের জন্য বা ধর্মীয় যুদ্ধে মারা যান তাদেরকে শহীদ বলা হয় কিন্তু জিয়া কোন যুদ্ধে নিহত হয়েছেন যে কারণে তাকে শহীদ বলা হয়। জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, ঋণখেলাপির কারণে আর্থিক খাতে তারল্য সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। এ সঙ্কট নিরসনে বাজেটে কোনো নির্দেশনা নেই। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে করদাতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাজেটের ঘাটতি মোকাবেলায় প্রতিবারই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে। এটা অর্থনীতির জন্য শুভকর নয়। তিনি মোবাইলের ওপর কর না আরোপের দাবি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement