২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সমকামিতায় বাধ্য করায় খুন হন পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম

-

সমকামিতায় বাধ্য করায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম (৫৪) এক কিশোরের হাতে খুন হন। পুলিশ ইতোমধ্যে ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে সে সোমবার বিকেলে আদালতে এ তথ্য জানিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে এ ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আরো তিনজন আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানান ইফতে খায়ের আলম।
গত ১১ জুন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নুরুল ইসলাম উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এ ছাড়া উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতিও ছিলেন তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পরাজিত হন। শ্রমিক ইউনিয়নের দ্বন্দ্বের কারণে তিনি খুন হন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন কারণ।
পুলিশ জানায়, নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। তবে এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। তিনি তদন্ত শুরু করেন। এরপর গত রোববার নুরুল ইসলামের প্রতিবেশী ওই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করে।
ওই কিশোর আদালতে তার জবানবন্দীতে বলেছে, প্রতিবেশী বলে সে নূরুল ইসলামকে নানা বলে ডাকত। কিন্তু নুরুল ইসলামের সমকামিতার বদ অভ্যাস ছিল। তিনি ওই এলাকার বিভিন্নজনকে এ কাজে ব্যবহার করতেন। নুরুলের ফাঁদে পড়েছিল সে নিজেও। টাকার লোভ দিয়ে প্রায়ই নুরুল তার সাথে সমকামিতায় লিপ্ত হতেন। এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন নুরুল। ফলে ওই কিশোর তার সাথে যেতে বাধ্য হতো।
গত ১০ জুন রাতেও নুরুল ইসলাম ওই কিশোরকে ইটভাটায় নিয়ে যান। সমকামিতার এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম মাটিতে পড়ে যান। তখন ওই কিশোর তার গলা টিপে ধরে। এরপর ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুলের মৃত্যু হয়। এরপর বাড়ি চলে যায় ওই কিশোর। সমকামিতায় বাধ্য করার কারণে তাকে হত্যা করা হয় বলে সে আদালতে জানিয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ওই কিশোর একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর সাথে আর কেউ জড়িত নয়। আদালতে সে এ কথা বলেছে। মামলার তদন্ত শেষ। তাই দ্রুতই আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement