১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাহিরপুরে রুবেল হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

-

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শিক্ষার্থী রুবেল পুরকাস্থ হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা সম্পর্কে পিতা-পুত্র। আদালত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডও প্রদান করেন।
গতকাল বেলা ১১টায় তাদের এই সাজা ঘোষণা করেন সুনামগঞ্জের দায়রা ও জজ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেনÑ তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের মৃত জোয়াহের আলীর ছেলে মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কালা মিয়া। মামলা থেকে মীর্জা মশ্রব আলী, নাছির উদ্দিন খান, শায়েস্তা মিয়া ও বাবুল মিয়াকে খালাস দেয়া হয়েছে। নিহত রুবেল পুরকাস্থ তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের রণজিৎ পুরকায়স্থের বড় ছেলে এবং বাদাঘাট পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসপি পরীক্ষার্থী।
নিহত রুবেলের বাবা রণজিৎ পুরকায়স্থ এ রায়ে খুশি নয় উল্লেখ করে করে জানান, আমরা ফাঁসির দাবি জানিয়েছিলাম। মামলায় সাতজন আসামি ছিল কিন্তু আদালত তিনজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন। বাকিদের খালাশ দিয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ আগস্ট রাতে তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের রণজিৎ পুরকায়স্থের বড় ছেলে রুবেল মিয়াকে পড়ার টেবিল থেকে কাজের কথা বলে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় প্রতিবেশী মীর্জা হাছন আলীর ছেলে নোমান মিয়া। রাত ২টায় বাহিরে চোর চোর চিৎকার শুনে রণজিৎ ও স্ত্রী উষারানী এগিয়ে গেলে তখন প্রতিবেশী আলীর ছেলে মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কালা মিয়া চোর অপবাদ দিয়ে ছেলে রুবেলকে খুনের হুমকি দিয়ে শাসিয়ে যান। এ সময় রণজিৎ ও তার স্ত্রী রুবেলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুকুরপাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন।
গুরুতর আহত রুবেল তার মা-বাবাসহ অন্যদের জানায়, চোর অপবাদ দিয়ে মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ওপর হামলা করেছে। এক পর্যায়ে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রুবেলকে তাহিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরদিন রুবেলের বাবা রণজিৎ বাদি হয়ে মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কালা মিয়াসহ সাতজনকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তিন পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে তাহিরপুর থানা পুলিশ। গতকাল সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ ও শুনানি শেষে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন বিচারক।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডিশনাল পিপি সোহেল আহমদ সইল মিয়া, বাদি পক্ষের আইনজীবী রবিউল লেইস ও আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জামিনুল হক উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement