বাংলাদেশ গভীর সঙ্কটকাল পার করছে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৬ জুন ২০১৯, ০০:০০
‘বিদ্যমান পরিস্থিতি : ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গভীর সঙ্কটকাল পার করছে। বর্তমানে দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনের ন্যূনতম বিশ^াসযোগ্যতাকে পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের মর্যাদা ও কার্যকারিতা ধ্বংস হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনও চরম তামাশা ও অর্থহীন হয়ে পড়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গতকাল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত মতবিনিময়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, ব্রতীর শারমিন মুরশিদ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, নারীনেত্রী ফরিদা আকতার, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম, বাসদ (মার্কসবাদী) এর মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, অ্যাড. হাসনাত কাইউম, ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের ড. মীর্যা মাসুদ হাসান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ড. তানজিমউদ্দিন খান, সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকার সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দীন পলাশ, নাগরিক আন্দোলনের ইফতেখারউদ্দিন বাবু, বাংলাদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
অলোচকরা বলেন, জনগণের বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ভোটাধিকার আজ অস্বীকৃত। যে আওয়ামী লীগ একসময় ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে আজ তারা মানুষের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। এটা ঐত্যিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। গত ৩০ ডিসেম্বর মহানির্বাচনী তামাশা আর জালিয়াতির মধ্যে ভোটাধিকার হরণ করে জনগণকে আরো একবার অপমান করা হয়েছে।
৩০ ডিসেম্বরের পর যে সংসদ গঠিত হলো তার কোনো রাজনৈতিক বৈধতা নেই। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সংসদ সদস্যদের সংসদে যাওয়ার মধ্য দিয়েও নৈতিক দিক থেকে এ সংসদ বৈধ হবে না। এসব রাজনৈতিক ডিগবাজিকেও দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। তারা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের পর রাষ্ট্রের ন্যূনতম ভারসাম্য নষ্ট করে নিরঙ্কুশ একদলীয় চরম কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসন আরো জোরদার হয়েছে; দমনমূলক শাসন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে; রাষ্ট্রব্যবস্থাকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে।
তারা বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগকেও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছেন যে, দলীয় সরকারের অধীনে এখানে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। ৩০ ডিসেম্বরের পর দেশে যে বিপজ্জনক রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে বিদ্যমান সংসদ বাতিল করে নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। মতবিনিময় সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা