২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাধারণ হাজীদের মতো থাকতে হবে তাদের হজে বেসরকারি এজেন্সি মালিকদের স্টিকার দেবে না সৌদি আরব

-

বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকেরা মক্কা-মদিনায় এতদিন অফিসিয়াল ভিসা (স্টিকার) ব্যবহার করলেও আসন্ন হজে সেটি পাবেন না বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। মক্কাস্থ দক্ষিণ এশীয় মোয়াল্লেম সংস্থা- মোয়াচ্ছাছার বরাত দিয়ে বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত রোববার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। এদিকে এ নির্দেশনায় দেশের হজ এজেন্সি মালিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, এর ফলে এজেন্সি মালিকদের সাধারণ হাজীদের মতো ভিসা নিতে হবে। ফলে মক্কায় গিয়ে তাদের পাসপোর্ট স্থানীয় মোয়াল্লেমের কাছে জমা রাখতে হবে। এতে তাদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত হবে। তাদের অধীনে নিয়ে যাওয়া সাধারণ হাজীরা মক্কা-মদিনা ও জেদ্দায় কোনো সমস্যায় পড়লে তারা কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না।
তাছাড়া সাধারণ হজযাত্রী হওয়ায় তাদেরকেও এক হাজার ৮৯ রিয়াল বা সাড়ে ২৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে। এতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়তে হবে তাদের।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন এক লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী। সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজীরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গেলেও বেসরকারি হাজীরা এ বছর মোট ৫৯৯টি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে যাবেন। এ জন্য গাইড ও মোনাজ্জেম যাবেন মোট চার হাজার ৫৮৮ জন।
২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে মোনাজ্জেমরা (এজেন্সি মালিক বা তাদের প্রতিনিধি) হজের আগে ও হজের সময় অফিসিয়াল ভিসা (স্টিকার) নিয়ে সৌদিতে যেতেন। এতে তাদের পাসপোর্ট সৌদির মোয়াল্লেম অফিসে জমা রাখা হয় হতো না। তারা পাসপোর্ট সাথে নিয়েই ঘুরতে পারতেন। এতে তারা মক্কা-মদিনায় চলাচলে সুবিধা পেতেন। তাদের কোনো হাজী সমস্যায় পড়লে তারা দ্রুত ছুটে যেতে পারতেন। কিন্তু সাধারণ হজযাত্রীরা জেদ্দায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় মোয়াল্লেম অফিসে তাদের পাসপোর্ট জমা রাখা হয়। এদিকে গত ১৯ মার্চ মক্কাস্থ দক্ষিণ এশীয় মোয়াল্লেম সংস্থা (মোয়াচ্ছাছা) বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়কে এক চিঠিতে জানিয়েছে আসন্ন হজে বেসরকারি এজেন্সি মালিকেরা আর অফিসিয়াল ভিসা ব্যবহার করতে পারবেন না। তাদেরকে সাধারণ হাজীদের মতো ভিসা গ্রহণ করতে হবে। মোয়াচ্ছাছা এক মাসেরও বেশি আগে বিষয়টি ধর্মমন্ত্রণালয়কে জানালেও ধর্মমন্ত্রণালয় গত ২৮ এপ্রিল এজেন্সি মালিকদের জানিয়েছে। আর এ খবরে এজেন্সি মালিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা জানিয়েছেন, সাধারণ ভিসায় সৌদি গেলে হজের সময় তাদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হবে। হাজীরা কোনো সমস্যায় পড়লে তখন সমাধান করা কঠিন হয়ে যাবে। তাছাড়া তাদের অতিরিক্ত সাড়ে ২৪ হাজার টাকাও ব্যয় করতে হবে। এ ব্যাপারে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাবের নবনির্বাচিত সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, স্টিকার ভিসা ছাড়া মক্কা-মদিনায় এজেন্সি মালিকরা সমস্যায় পড়বেন। এ জন্য আমরা এ বিষয়টি যাতে রহিত করা হয় সেজন্য আমাদের ধর্মমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সৌদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি সরকার প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় পরীক্ষা করে থাকে। এ বিষয়টি এ বছর নতুন সংযোজন করেছে তারা। এটি সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য হবে। কিন্তু তারপরও অসুবিধার কথা জানিয়ে আমরা সৌদিকে আমাদের জন্য হলেও এ পদ্ধতি বাতিলের আহ্বান জানাবো। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো: আব্দুল্লাহ ও ধর্মসচিব মো: আনিছুর রহমান বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় এ ব্যাপারে তাদের মন্তব্য জানা যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement