২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্নীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করেছে : আইনমন্ত্রী

-

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এ দেশে আর দুর্নীতি হতে দেয়া যায় না। কারণ দুর্নীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে আঘাত করেছে। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে। দুর্নীতি সামাজিক অবক্ষয় ও সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতির কারণে অনেক পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সে পেশার আদর্শ ও নৈতিকতা। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের দুর্নীতি দমন করতে হবে।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘দুর্নীতি বিরোধী অভিযান ও নেতৃত্বের সাফল্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফোরামের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, মেজর জেনারেল (অব:) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক সচিব মো: নাসির উদ্দিন, কলামিস্ট ড. মিল্টন বিশ্বাস সুভাষ সিংহ রায় প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে দেশে দুর্নীতের মাত্রা চরম আকার ধারণ করে। ওই সময়ে বাংলাদেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। ফলে বিশ^ব্যাপী বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত হয়। এ অবস্থায় ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা জনগণের বিপুল ভোটে সরকারের দায়িত্ব পেলে তিনি এই দুর্নাম ঘোঁচানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। দুর্নীতিবিরোধী অস্ত্র নামে খ্যাত তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেন। এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প গ্রহণ করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে সক্রিয় করান এবং দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করান। শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার ফলে দুর্নীতির পথগুলো ক্রমে সঙ্কোচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য সর্বক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে কারণ সব কিছু ডিজিটাল হলে দুর্নীতি এমনিতেই কমতে থাকবে। তাই সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো যাতে তাদের সব কিছু ডিজিটালাইজড করে সে ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেরও দৃষ্টি দেয়া উচিত।
মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও থাকতে হবে, যা শেখ হাসিনার সরকার দেখাচ্ছেন। জনগণের মন-মানসিকতা দুর্নীতি প্রতিরোধে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই মানুষের মনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুধু জ্ঞান দিয়ে কাজ হবে না। এ জন্য মানুষকে যুক্ত করতে হবে, নতুবা কোনো কাজেই সাফল্য আসবে না। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কৌশলী হতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, দুর্নীতি দমনে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন করতে হবে এবং এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ এ আইন অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বস্তরে স্বচ্ছতা আনয়ন, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও দুর্নীতি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রদানে সরকারি তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলা যেতে পারে। সেই সাথে ছবিযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও স্বাক্ষর যুক্ত ডাটাবেসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিয়ে সম্ভব নয়, এ জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা, দেশপ্রেম এবং তারুণ্যের অঙ্গীকার। প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমি দুর্নীতি করব না, অন্যকে দুর্নীতি করতে দেবো না।


আরো সংবাদ



premium cement