২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অর্থনৈতিক অপরাধ দমনে আইন দরকার : র‌্যাব ডিজি

কক্সবাজারে হচ্ছে নতুন ব্যাটালিয়ন
-

চুরি, ডাকাতি, খুন ও অপহরণের মতো ট্র্যাডিশনাল অপরাধ কমেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক ও সাইবার অপরাধ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, এই দুই ধরনের অপরাধকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এর জন্য অস্থায়ীভাবে নতুন আইন করা দরকার। বুধবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় অবস্থিত র‌্যাব প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী পরিষদের নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে র‌্যাব মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় র‌্যাব অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মো: জাহাঙ্গীর আলম, ডিআইজি জামিল আহমেদ, র‌্যাব পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান, সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, ক্র্যাব সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, সহসভাপতি মিজান মালিক, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী ও কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনের আগে কোনো রাজনৈতিক দল যখন ইশতেহার দেয় তখন তা থাকে দলীয় ইশতেহার। আর যখন ওই দল মতায় আসে তখন তা রাষ্ট্রীয় ইশতেহারে পরিণত হয়। নতুন সরকার জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অপসহীন। দুর্নীতির বিষয় র‌্যাবের এখতিয়ারের মধ্যে নেই। অপর তিনটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই র‌্যাব সামনের দিনগুলোতে নতুন কর্মপরিকল্পনা সাজাবে।
তিনি বলেন, আজকাল মানুষ ফ্যাট বা জমি বিক্রি করার পর তা বুঝিয়ে দিচ্ছে না। টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছে না। এসব েেত্র মামলা হলেও তেমন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। জামিনে বেরিয়ে আসার পর ওই অপরাধী বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কারণ, কোনো মামলায় কারো জামিন হয়ে গেলে তাকে আটক বা গ্রেফতার করা যায় না। আবার একটি বিষয় নিয়ে দু’টি মামলা দায়ের করাও সম্ভব না।
বেনজীর আহমেদ বলেন, দুর্নীতির মতো অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ কার খুব একটা সুযোগ নেই। অর্থনৈতিক অপরাধ দমন করতে হলে প্রয়োজনে অস্থায়ী আইন তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া উচিত। আমরা এ দায়িত্ব নিতে চাই। যারা অর্থনৈতিক অপরাধের শিকার, তাদের দিকে তাকালে অনেক কষ্ট লাগে। কেউ কারো টাকা মেরে দিলে বর্তমান আইনে আমরা প্রতারককে ডাকতেও পারি না। আমাদের কাছে যত অভিযোগ আসছে তার ৭০ ভাগই অর্থনৈতিক অপরাধসংক্রান্ত। কিন্তু এসব অপরাধের বিষয়ে আমরা কিছু করতে পারছি না।
মাদক নির্মূলের বিষয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, আমরা গভীরে কাজ করি। চুনোপুটিকে ধরছি না। রাঘব-বোয়ালদের দিকে দৃষ্টি রয়েছে। মাদক নির্মূলকে সামনে রেখেই কক্সবাজারে র‌্যাবের একটি নতুন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। শিগগিরই সেখানে র‌্যাবের নতুন ব্যাটালিয়ন উদ্বোধন করা হবে। র‌্যাব সেখানে ৩-৪ বছর কাজ করতে পারলেই ওই অঞ্চলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে। এরপর সেখানে ট্যুরিজম এবং নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তায় মনোযোগী হবে র‌্যাব।
র‌্যাবের কর্মপরিধি তুলে ধরে ডিজি বলেন, আমরা খাদ্যে ভেজাল নিয়ে কাজছি। ভেজালবিরোধী অভিযান চালানে আগে মানুষ ভুল বুঝত। মানুষের মধ্যে এখন অনেক সচেতনা এসেছে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, গৃহকর্মী নির্যাতনে বিষয়টিকে র‌্যাব খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে। গৃহকর্মীদের জন্য যে আইন হচ্ছে তাকে যেন কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়ে নজর দিতে তিনি সংশিশ্লষ্টদের আহ্বান জানান। র‌্যাব ডিজি আরো বলেন, ইসলামিক স্টেট (আইএস) নিয়ে অনেক বড় ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল যে, এই দেশে আইএস আছে। আর এটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে দেশের অর্থনীতির বড় তি হয়ে যেত। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই হোলে আর্টিজান হামলা হয়েছিল। অনেক কষ্ট করে ওই ষড়যন্ত্র থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি।


আরো সংবাদ



premium cement