২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জমজমাট বাণিজ্যমেলা

নারীদের দৃষ্টি ফার্নিচার ও রান্নাসামগ্রীর স্টলে

-

জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এক মাসব্যাপী এই মেলা ইতোমধ্যে মাঝপথে চলে এসেছে। দর্শনার্থী ও ক্রেতার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। তবে এই ঢলটা নামে দুপুরের পর থেকে। মূলত বিক্রিটা বিকেলেই বেশি। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারই দর্শনার্থী এবং ক্রেতার উপস্থিতি অধিক দেখা যায়। মেলায় নারীদের নজর ফার্নিচার, অর্নামেন্ট ও রান্নাঘরের আসবাবপত্রের প্রতি। তারা মেলা মাঠে প্রবেশ করেই ওই সব স্টলে আগে পা রাখেন।
ঘর সাজানোর বিভিন্ন ফার্নিচারের প্যাভেলিয়নকে সাজানো হয়েছে ক্রেতাদের নজর আকৃষ্ট করার জন্য। প্রতি বছরের মতো এবারো এসব ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভেলিয়নে ক্রেতাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ছাড়ও দেয়া হয়েছে। আবার মেলায় এসে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শোরুম থেকেও পণ্য নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে এই সব ফার্নিচার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন ডিজাইনের পণ্য তৈরি করে। আবার ক্রেতাদের অনেকেই এই মেলায় নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় মেলার জন্য অপেক্ষা করেন।
এ ছাড়া এবারের মেলায় ঐতিহ্যবাহী কারু ও হস্তশিল্পের প্রতি ঝুঁকছেন লোকজন। শুধু যে দেখছেন তা নয়, সাধ্যমতো কিনছেনও তারা। এতে করে স্থানীয় উদ্যোক্তারাও উৎসাহিত হচ্ছেন। বাঁশ, কাঠ, খড় আর পাটসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপকরণে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন প্যাভেলিয়ন নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছেন শতরঞ্জির প্যাভেলিয়ন কারুপণ্য। এই কারুপণ্যের প্রধান কার্যালয় রংপুরের গুপ্তপাড়ায়। প্রতিবারই বাণিজ্যমেলায় অংশ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্য দিয়ে দেশ ও বিদেশের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পকে।
ঘুরে দেখা যায়, নানা জাতের শতরঞ্জির কার্পেট, ওয়ালম্যাট, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, জামা, ব্যাগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে এসব পণ্য। ক্রেতাদের আরো বেশি আকর্ষণ করতে ছাড়ও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফ্লোর ম্যাট দু’টি কিনলে দেখা হচ্ছে একটি ফ্রি। আবার অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে রয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় বলে জানান সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর আশিকুর রহমান রোমেল। তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেশি সাড়া পাচ্ছি।
জুয়েলারি সামগ্রীর স্টলের বিক্রয় কর্মী সালমা ও সুমন জানান, মেলার প্রথম সপ্তাহ ছিল মন্দা। ক্রেতা-দর্শনার্থীও তেমন ছিল না। মেলা দেরিতে শুরু হওয়ায় জমতে সময় লাগছে। তবে গত শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। শুক্র ও শনিবার বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। অন্য দিনগুলোয় ক্রেতা তেমন না থাকলেও বিক্রি ভালোই হয়েছে। আশা করছি সামনে আরো ভালো বিক্রি হবে।
এবারের বাণিজ্যমেলায় দর্শনার্থীদের আগ্রহের আকর্ষণ ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়ন। সব বয়সী দর্শনার্থী প্যাভিলয়ন থেকে জেনে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া নানা ইতিহাস। আন্তর্জাতিক নেতাদের সাথে বঙ্গবন্ধুর বৈঠক, ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশের বাণিজ্যনীতি, তৎকালীন সব অর্থনৈতিক চুক্তি ও খবরের কাগজে প্রকাশিত দলিল প্রদর্শিত হচ্ছে প্যাভিলিয়নটিতে। প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টরিও। সব মিলিয়ে তরুণ দর্শনার্থীরা মেলায় ঢুকে প্যাভিলিয়নটি ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এ ব্যাপারে তারাই সঠিক আগ্রহী শিশু-বৃদ্ধরাও মেলায় এসে জেনে নিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কিত তথ্যাদি। কোনো কোনো দর্শনার্থী দুর্লভ এসব দলিল ধারণ করছে নিজের মোবাইলে। আবার কেউবা সময় বন্দী করছে সেলফিতে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আয়োজনে মাসব্যাপী এবারের মেলা শুরু হয়েছে ৯ জানুয়ারি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এ মেলার পর্দা নামবে। মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের সংখ্যা ৬০৫টি। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন ১১০টি, মিনি প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ স্টলের সংখ্যা ৪১২টি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকছে। মেলার মাঠে প্রবেশ করতে প্রাপ্ত বয়স্কদের ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ২০ টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement