২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
নারায়ণগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার পর লাশে আগুন

ঘাতকরা পূর্বপরিচিত, ফেলে যাওয়া মানিব্যাগ থেকে যুবকের ছবি উদ্ধার

-

নারায়ণগঞ্জে বন্দরের সোনাকান্দায় শনিবার ফ্ল্যাট বাসায় প্রবাসীর স্ত্রী নাঈমা রহমানকে খুন ও লাশে আগুন দেয়ার ঘটনার ক্লু পেয়েছে পুলিশ। খুনিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি মানিব্যাগ ফেলে যায়। ওই মানিব্যাগে এক যুবকের ছবি ও কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। খুনিরা নাঈমা রহমানের পূর্বপরিচিত, এটা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে অনেক তথ্য তারা প্রকাশ করছে না।
এদিকে খুনের ঘটনায় শনিবার রাতে নিহতের ছোট ভাই কামরুল অজ্ঞাতদের আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) অফিসার হারুন অর রশিদ জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
তিনি জানান, আমরা নিহতের মেয়ে আনুশি ও তার মামা কামরুলের সাথে কথা বলেছি। তদন্তকাজ অব্যাহত আছে। আমরা প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য সিআইডি, ডিবি ও পিবিআই মাঠে কাজ করছে। আমরাও আছি। আশা করি হত্যাকারীকে অচিরেই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতের মাথায় পাঁচ থেকে ছয়টি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে লাশে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। উদ্ধার করা মানিব্যাগে এক যুবকের ছবি পাওয়া গেছে। মানিব্যাগ ও সিগারেটের সূত্র ধরে খুনিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

খুনি নিহতের মাথায় বঁটি দিয়ে একাধিক আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করেছে। এর পর আলামত নষ্ট করতেই পরিধেয় কাপড়ে আগুন ধরিয়ে ফ্ল্যাট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়।

যেহেতু নিহতের মেয়ে বেলা পৌনে ২টার দিকে বাসায় ফিরে লাশের গায়ে আগুন জ্বলতে দেখেছে তাই ধারণা করা হচ্ছে বেলা সোয়া ১টার পর যেকোনো সময় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। তা ছাড়া খুনি নিহতের পূর্বপরিচিত, যে কারণে সে খুব সহজেই কেউ বাসায় না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, শনিবার দুপুরে কে বা কারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নাঈমা রহমানকে হত্যা করে লাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার মেয়ে বাসায় ঢুকে মায়ের শরীরে আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরে পুলিশকে জানালে তারা এসে বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।

বন্দর সোনাকান্দা এলাকার সরদার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বঁটি, মানিব্যাগ এবং একটি সিগারেট উদ্ধার করেছে। দিনদুপুরে ফ্ল্যাট বাসায় ঢুকে হত্যাকাণ্ডের কথা ছড়িয়ে পড়লে পুরো সোনাকান্দা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত নাঈমা রহমান থাইল্যান্ড প্রবাসী আনিছুর রহমানের স্ত্রী। তিনি ছেলে নাফিজ রহমান (৮) ও মেয়ে আনুশি রহমানকে (১৫) নিয়ে সোনাকান্দা ত্রিবেণীপুল সংলগ্ন আমিনুল হক মনার মালিকানাধীন মাবিয়া ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করতেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement