২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আশরাফ ক্ষমতার মোহমুক্ত ছিলেন

-

রাজনীতিবিদ ও ব্যক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের মরহুম নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ‘অসাধারণত্বের’ কথা স্মরণ করেছেন তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে এক স্মরণসভায় বিগত সরকারের মন্ত্রিসভায় আশরাফের সহকর্মী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, রাজনীতিবিদ হয়, সংসদ সদস্য হয়, মন্ত্রী হয়। কিন্তু একজন সৈয়দ আশরাফ সহজে হয় না। মতায় থেকেও মতার মোহ থেকে তিনি নিজেকে সব সময় মুক্ত রেখেছেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গান-কবিতায় গত সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের ওই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। বিডি নিউজ।
৬৭ বছর বয়সী আশরাফ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ জানুয়ারি থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার সততা ও নির্লোভ মানসিকতার প্রশংসা করছেন প্রতিপ রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
মতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ওই পদ তাকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি বলে মন্তব্য করেন নূর।
নিজেকে কিছুটা আড়ালে রেখে সুচারুভাবে দলকে পরিচালনা করেছেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে তার জনপ্রিয়তা ছিল প্রবাদপ্রতিম। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না।
সৈয়দ আশরাফকে বাংলাদেশের রাজনীতির উজ্জ্বল নত্র হিসেবে বর্ণনা করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মাটির কাছাকাছি থেকেও নিজেকে আকাশের উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারার মতো এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানাই অন্তরের অন্তস্তল থেকে।
আন্দোলনে সংগ্রাম ও দলীয় কর্মকাণ্ডে সৈয়দ আশরাফকে জানার সুযোগ হওয়ার কথা তুলে ধরে এক সময়ে জনপ্রিয় অভিনেতা নূর বলেন, আমার বলতে দ্বিধা নাই, একই সাথে ঈর্ষণীয় ও অনুকরণীয় এ রকম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সমকালীন সময়ে আমি খুব একটা দেখি না।
বিভিন্ন বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকলেও মৃদুভাষী এই মানুষটিকে কখনো পাণ্ডিত্য জাহির করতে দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেন নূর।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা ফেরেশতা নই, শয়তানও নই। আমরা দোষে-গুণে মানুষ। কিন্তু যারা দোষ না করে গুণে এগিয়ে থাকেন তারা মহামানুষ, ভালো গুণের মানুষ। সৈয়দ আশরাফ তেমনি একজন ছিলেন। ফেরেশতাও ছিলেন না, শয়তানও ছিলেন না। তিনি গুণী মানুষ ছিলেন, সাহসী মানুষ ছিলেন, দ মানুষ ছিলেন।
ষাটের দশকের শেষে ছাত্রলীগের একজন নেতা হিসেবে দেখার এবং মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দ আশরাফকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়ার কথা জানিয়ে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, জীবনের সর্বেেত্র নীতিনিষ্ঠ আদর্শ ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে গেছেন আশরাফ।
এক-এগারোর সময় যখন অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিন্দুমাত্র বিভ্রান্ত হননি।
ইনু বলেন, তিনি নীতিবান ছিলেন, নিষ্ঠাবান ছিলেন, আদর্শবান ছিলেন, কুশলী ছিলেন, সজ্জন ছিলেন। মতা ও টাকার পেছনে ছোটেননি কখনো। এসব বিষয় তার কাছ থেকে শেখার আছে আমাদের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন নির্লোভ মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন। যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছিলেন। তিনি নেই। তাকে সামনে রেখে আমাদের সামনের পথ চলতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement