২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কালিদাস বড়াল হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামি খালাস

-

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কালিদাস বড়াল হত্যা মামলায় নি¤œ আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজন এবং যাবজ্জীবন সাজার তিন আসামিসহ ৬ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আসামিদের করা আপিল ও মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেন।
২০০০ সালের ২০ আগস্ট বাগেরহাট শহরের সাধনা মোড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কালিদাস বড়ালকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় বাগেরহাটসহ সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পর বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলার রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আসামিদের মধ্যে নয়জন ওই রায়ে বেকসুর খালাস পান।
আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট গতকাল যে রায় দিয়েছেন, তাতে চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে সাঈদুল ইসলাম ওরফে সাঈদ ফকির, ঘোলা গ্রামের আবদুল হক কাজীর ছেলে সাইফুর রহমান ওরফে বাবলু কাজীর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখা হয়েছে।
আর বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া চিতলমারী উপজেলার রহমতপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর দুই ছেলে আলমগীর সিদ্দিকী ও নাছির সিদ্দিকী এবং কলাতলা গ্রামের সোনা মিঞা সরদারের ছেলে স্বপন খালাস পেয়েছেন। তাদের মধ্যে আলমগীর সিদ্দিকী জেলে, বাকিরা পলাতক। জজ আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তিন আসামির সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছেন।
এরা হলেন : চিতলমারীর রহমতপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর আরেক ছেলে শওকত সিদ্দিকী, সদর উপজেলার চরগাঁ গ্রামের হাশেম মোল্লার ছেলে বাবলু মোল্লা এবং একই উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে মানিক। তাদের মধ্যে শওকত সিদ্দিকী জেলে, বাকি দু’জন পলাতক।
আলমগীর সিদ্দিকী ও শওকত সিদ্দিকীর পে হাইকোর্টে আপিল শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও জি এম বাবুল আক্তার। রাষ্ট্রপে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মান্নান মোহন। কালিদাস বড়ালের স্ত্রী হ্যাপি বড়ালের রিভিশন আবেদনের পে শুনানি করেন নকিব সাইফুল ইসলাম। পলাতক আসামিদের পে ছিলেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী হাসনা বেগম।
হাইকোর্টের রায়ের পর খালাস পাওয়া শওকত সিদ্দিকীর আইনজীবী জি এম বাবুল আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আলমগীর সিদ্দিকী ও শওকত সিদ্দিকীর করা আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট তাদের খালাস দিয়েছেন। তবে জজ আদালতে নয় আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে কালিদাস বড়ালের স্ত্রী হ্যাপি বড়ালের করা রিভিশন আবেদনটি হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন।
২০০০ সালে কালিদাস বড়াল খুন হওয়ার পরদিন তার স্ত্রী হ্যাপি বাগেরহাট মডেল থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর বাগেরহাট থানার তখনকার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম ২২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
তাদের মধ্যে অছিকার রহমান নামে অপর এক আসামির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ও গণপিটুনিতে আব্দুর রশিদ ওরফে তাপু ওরফে মামুন, জুয়েল শিকদার ওরফে রাসেল, কবির ডাকুয়া ও তুষার মোল্লা নামে চার আসামির মৃত্যু হয়। জীবিত ১৭ আসামির বিচার শেষে ২০১৩ সালের ৫ জুন রায় ঘোষণা করেন বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ এস এম সোলায়মান। পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে নয়জনকে মামলার অভিযোগ থেকে খালাস দেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement