২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংসদে ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড বিল পাস

-

ইমারত তৈরি বা মেরামতে ঘোষিত পরিমাপ লঙ্ঘন করলে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড বিল-২০১৮’ সংসদে পাস হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। প্রস্তাবিত এই আইনটি প্রণয়ন হলে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের দেশী ও বিদেশী বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা ১৫ দিনের মধ্যে পরীা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৮২ সালের ‘স্ট্যান্ডার্ড অব ওয়েট অ্যান্ড মেজার্স অর্ডিন্যান্স’ সংশোধন ও পরিমার্জন করে ২০০১ সালে নতুনভাবে প্রণয়ন হয়েছিল। এবার সেটি আবারো সংশোধন করা হলো।
বিলে বলা হয়েছে, অনুমোদনবহির্ভূত বস্তু দ্বারা ওজন বা পরিমাপন তৈরি বা উৎপাদন করলে এক লাখ টাকা জরিমানা বা তিন বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। মানদণ্ড ব্যতীত অন্য কোনো ওজন বা পরিমাপক বা সংখ্যমান ব্যবহার করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মান সংস্থাসহ (আইএসও) অন্যান্য সংস্থার নিয়মকানুন এ আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানদণ্ড একক ছাড়া মুখের ভাষায় বা ভিন্নভাবে মূল্য বা চার্জ ঘোষণা করা যাবে না।
বিলে অনুমোদনহীন বাটখারা (ওজন মাপার যন্ত্র) উৎপাদন, ব্যবহার ও পণ্যের ওজনে অনিয়মের সাজা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। আইন লঙ্ঘনের েেত্র আর্থিক শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মানদণ্ডহীন বাটখারা বা পরিমাপক ব্যবহারের শাস্তি অনূর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ডের সাথে অর্থদণ্ড বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে। বিলের বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ওজন বা পরিমাপন সম্পর্কিত মডেল অনুমোদনের সনদ ছাড়া তা বিক্রি, বিতরণ, সরবরাহের জন্য তৈরি করেন তাহলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া ওজন বা পরিমাপন যন্ত্র বিক্রি করলে, উৎপাদন করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া নিবন্ধন সনদ ছাড়া মোড়কজাত পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় এবং এলপিজি, এলএনজি বটলিং, টার্মিনাল, ফিলিং স্টেশন পরিচালনা করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে বিলে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসংবলিত বিবৃতিতে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, শিল্প পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ওজন ও পরিমাপে সঠিকতা কঠোরভাবে মেনে চলার উৎসাহ প্রদান করা যাবে। বাংলাদেশী পণ্য ও সেবার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রত্যয়ন প্রাপ্তি সহজ হবে। আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রেও ওজন ও পরিমাপের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। ফলে প্রস্তাবিত এ আইনের মাধ্যমে দেশে একটি স্ট্যান্ডার্ড ওজন ও পরিমাপ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা কর সম্ভব হবে। এর আগের অধ্যাদেশে ৬৫টি ধারা ছিল। বর্তমান বিলটিতে আটটি ধারা বাড়িয়ে ৭৩টি করা করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement