১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাজধানীজুড়ে ফের মাদক কারবারিরা সক্রিয়

-

মাদকবিরোধী অভিযানের শিথিলতায় আবার রাজধানীজুড়ে শুরু হয়েছে মাদকের কেনাবেচা। বিশেষ করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, জুরাইন, হাজারীবাগ ও আনন্দবাজার, লালবাগ, চকবাজার, চানখাঁরপুল, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে অনেকটাই দমে ছিল মাদক কেনাবেচা। গ্রেফতার হয়েছিল বিপুল মাদক কারবারি। আবার অনেকেই বন্দুকযুদ্ধে হতাহত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দিষ্ট সেই অভিযান বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে তারা ঈদ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত রয়েছে। আর এই সুযোগে আবার মাঠে নেমেছে মাদক কারবারিরা। শুধু তা-ই নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিপুল মাদক নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে যা আছে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে। আর এতে করে মোট মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে কারবারিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর কদমতলীর মুরাদপুর, জুরাইন রেলগেট, যাত্রাবাড়ীর কাজলার মোড়, কুতুবখালী, দোলাইরপাড় এলাকায় প্রকাশ্যেই ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল বিক্রি করা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ এলাকায় পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছে। আবার কেউ মাদক বিক্রিতে বাধা দিলে সোর্সরা তাদের কৌশলে মাদক কারবারি বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিচ্ছে। কদমতলী থানার পশ্চিম ও পূর্ব কদমতলীর ওয়াসা বটতলা, সিএনজি স্টেশন, মোহাম্মদবাগ সিএনজি স্টেশন, মোহাম্মদবাগ পানির পাইপ, পোস্তগলা, ওয়াসা পাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা মাদক ব্যবসায়।
যার নেতৃত্ব দিচ্ছে এলাকার পারুল আক্তার পারুলী, খোকন, শাহাবুদ্দিন, মালেকসহ আরো অনেকে। তাদের সহযোগিতা করছে সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী মাকসুদা, আখি, লাভনীসহ কয়েকজন। এলাকাবাসী বলেন, এসব মাদক কারবারিরা পুলিশের সোর্সের সাথে গভীর রাত পর্যন্ত উঠাবসা করে থাকে। এলাকায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। সম্প্রতি সাহাবুদ্দিনের আত্মীয় রনিকে স্থানীয়রা হাতেনাতে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা কামাল আহম্মেদ।
শুধু এই এলাকাই নয়, রাজধানীর প্রায় প্রতিটি থানায় আবারো মাদকের কারবার শুরু করা হয়েছে। দিনে রাতে অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হোরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য। এ কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করছে থানা পুলিশের কিছু সোর্স, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। মাসুম নামে এক রিকশাচালক জানান, আগে গাঁজার পুঁটলা পাওয়া যেত ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এখন একটি স্টিকও পেতে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এখন একটি স্টিক কিনতে ১০০ টাকা লাগে। তাও পুলিশের ভয়ে দিতেও চায় না।
রাজধানীর লালবাগ থানার শহীদনগর, আমলীগোলা, আমলীগোলা বালুরঘাট, নবাবগঞ্জ পার্ক, কিল্লার মোড়, বাঁশপট্টি, লবণ কারখানা, কামরাঙ্গীর চরের বড় গ্রাম, রসুলপুর, হাসান নগর, আলী নগর, খোলা মোড়া, কমিল্লাপাড়া, হুজুরপাড়া, কয়লার ঘাট, লবণ ফ্যাক্টরি, চকবাজারের বিভিন্ন এলাকায় আবারো মাদক ব্যবসায় চলছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আর এসব এলাকায় লালবাগের মাদক সম্রাট বাদল ওরফে সুকানি বাদল মাদক সরবরাহ করছেন। তার স্ত্রী সাথী ও নাজিরা নানা কৌশলে মাদক খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চারুকলার পাশে প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি ও সেবন করা হচ্ছে। পার্কের বিভিন্ন গেটে আনসার সদস্যরা ডিউটি করলেও মাদক কারবারিরা গাঁজার ব্যবসায় করে হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন পেশার লোকজন এসে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবন করে যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement