২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফিজিওথেরাপি কাউন্সিল ও কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

জাতীয় প্রেস কাবে সম্মিলিত ফিজিওথেরাপি পরিষদের সংবাদ সম্মেলন: নয়া দিগন্ত -

ফিজিওথেরাপি কাউন্সিল ও কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস কাবে ফিজিওথেরাপির শিক্ষক, ছাত্র, পেশাজীবী, ফিজিওথেরাপির সেবা গ্রহণকারীরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
এতে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন অধ্যাপক ডা: এম এন আলম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মুখপাত্র ডা: দলিলুর রহমান।
মূল বক্তৃতায় ডা: এম এন আলম স্বাস্থ্য সেবায় ফিজিওথেরাপি পেশার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বিভিন্ন কারণে প্রতিবন্ধিত্বের মতো জীবন-যাপন করছেন এমন প্রায় দুই কোটি মানুষকে কর্মক্ষম করে তোলা সম্ভব। প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে, ডায়াবেটিসে, স্থ’ূলতায়, উচ্চ রক্তচাপে, হৃদরোগে অথবা স্ট্রোকজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। এ ছাড়া বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আধিক্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন রোগÑ যেমন চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু ভাইরাসের আক্রমণে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। শিশুদের জন্মগত ত্রুটির কারণে অক্ষম জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই জনগোষ্ঠীর মানুষকে ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে কর্মক্ষম করে তুলতে পারা যায় সহজেই।
তিনি বলেন, এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ফিজিওথেরাপি পেশাজীবী তৈরির জন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই, এই পেশাজীবীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেই কোনো সরকারি কাউন্সিল। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী অভিজ্ঞতাহীন হাতুড়ে ডাক্তারদের হাতে অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। রোগীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের জীবনও হুমকীর সম্মুখীন। আইন না থাকার ফলে যেমন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান ইচ্ছামতো ফিজিওথেরাপি কোর্স পরিচালনা করছে। আবার যে কেউ ফিজিওথেরাপিস্ট সেজে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সরকারি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপির নামে চলছে ‘হিট থেরাপি’। আমাদের অবিরাম দাবির মুখে সরকার প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফিজিওথেরাপি কাউন্সিল গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে চিকিৎসকদের একটি অংশের বাধার কারণে আর অগ্রসর হতে পারেনি। পরবর্তীতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাউন্সিল গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে রিহ্যাব কাউন্সিল নামে আইন তৈরি করার নতুন উদ্যোগ নেয়ার কারণে নানা জটিলতায় আর অগ্রসর হতে পারেনি এই প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মহাখালীতে ফিজিওথেরাপি কলেজের জন্য সোয়া পাঁচ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার পরও এ পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি। পরে এখানে বস্তি বসিয়ে দেয়া হয়। বস্তিবাসীদের একজন কোর্টে রিট করে দিলে সে রিটেরও নিষ্পত্তি করা হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু ফিজিওথেরাপি কলেজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই। ফিজিওথেরাপিস্টরা জনস্বার্থে ফিজিওথেরাপি কাউন্সিল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডা: এম এন আলম, ডা: নজরুল ইসলাম, ডা: ফরিদ উদ্দিন, ডা: খাইরুল ইসলাম প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement