১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তিন সপ্তায় সৌদি থেকে ফিরলেন‌ আড়াই হাজার বাংলাদেশী

-

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে আরো ২১৭ জন বাংলাদেশী ফেরৎ এসেছেন। এদের মধ্যে বুধবার রাত ১১ টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে ১০৩ জন এবং রাত ১টা ১০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০২ বিমান যোগে ১১৪ জন ফিরেছেন। এ নিয়ে গত তিন সপ্তাহে আড়াই হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলেন।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগীতায় বরাবরের মতো বুধবার রাতেও ফেরত আসাদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।

বুধবার রাতে ফেরত আসা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার একই পরিবারের দুই ভাই সুজন মিয়া ও মিন্টু মিয়া। সুজন মিয়া পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র চার মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। আর মিন্টু মিয়া যান ২৩ মাস আগে। মিন্টুর আকামার মেয়াদ পাঁচ মাস থাকলেও সুজনের আকামা তৈরি করে দেয়নি নিযোগকর্তা। কিন্তু দুই সহোদরকেই কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশি আটক করে।

ফেরত আসা নড়াইলের সুজন বিশ্বাস বিমানবন্দরে বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন এজেন্সি ও দালালের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাবে কিনা। সুজন জানান, অফিসে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি চার লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তিন মাস আগে সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোন কাজ পাননি‌। বরং ধরা পড়ে দেশে ফিরতে হল শূন্য হাতে।

টাঙ্গাইলের আরেক ফেরত কর্মী লিটন মাত্র ছয় মাস আগে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ওয়াল্ডিং এর কাজ সৌদি আরব যান। সেখানে গিয়ে কোম্পানিতে কাজ করলেও কোন বেতন দেওয়া হয়নি। এমনকি আকামা তৈরি করে দেয়নি নিয়োগকর্তা। কর্মস্থল থেকে পুলিশ গ্রেফতার করলে নিয়োগকর্তা আর লিটনের কোন দায়িত্ব নেয়নি।

নরসিংন্দীর মন্টু মিয়া, টাঙ্গাইলের কাদের মিয়া, সিরাজগঞ্জের জাহিদুল, সিলেটের নাজমুলসহ আরো অনেকেই এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ফিরেছেন।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, দেশে ফেরত আসা কর্মীদের কথায় স্পষ্ট যে প্রত্যেককে নানা স্বপ্ন দেখিয়েছিল দালাল ও রিক্রটিং এজেন্সি। কিন্তু সৌদি আরবে গিয়ে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েন তারা। অনেকে বেতন পাননি। অনেকে সৌদি আরবে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে ফরত এসেছেন। তারা সবাই এখন ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তাায়। এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

এর আগে ২০১৯ সালে ২৫ হাজার ৭৮৯ বাংলাদেশীকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আড়াই হাজারের বেশি বাংলাদেশী ফিরলেন দেশটি থেকে।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্যের বরাত দিয়ে শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ছয় হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে সাত হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে দুই হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে দুই হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন শূন্য হাতে ফিরেছেন যাদের পরিচয় ডিপোর্টি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল