২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে সড়ক পরিবহন আইনে যেন কাটাছেঁড়া না হয় : ইলিয়াস কাঞ্চন

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন ইলিয়াস কাঞ্চন - নয়া দিগন্ত

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর সংশোধনের উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহবান জানিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করুন। কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে এই আইনে যেন কোনো কাটাছেঁড়া না করা হয়। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, শুনতে যা পাচ্ছি এই আইন নাকি বাস্তবায়নের আগেই সংশোধন করা হবে। আইনে যতটুকু পেয়েছি তার উপর ছুরি-কাঁচি চালানো হলে আইনটি কতটুকু জনকল্যাণে কাজে লাগবে সেটাই ভাবতে হচ্ছে। আগামী ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস এবং জাহানারা কাঞ্চনের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি পুরো অক্টোবর মাস জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেন।

নিসচা’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, একথা কারো অজানা নয় যে, অনেক যুদ্ধ করে, অনেক ত্যাগ-তীতিক্ষার পর এই আইনটি আমরা পেয়েছি। আপনারা জানেন ২০১২ সাল থেকে এই আইনটি পাশ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছিল। কিন্তু একটা গোষ্ঠীর কারণে সেটি করা যাচ্ছিল না। যখনই সরকার উদ্যোগী হয়েছে তখনই তারা জুজুর ভয় দেখিয়ে, কখনও কখনও জনগণকে জিম্মি করে বাধা দিয়ে আসছিল। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি। জনগণের পাশে থেকে ক্রমান্বয়ে আমরা দাবি জানিয়ে আসছিলাম।

তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি গতবছর কোমলমতী শিক্ষার্থীদের রাজপথে নেমে আসা, পুরো দেশের মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়ায় প্রতীয়মান নিরাপদ সড়ক চাই গণমানুষের আশা-আকাঙ্খার মূর্তপ্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। যার প্রেক্ষিতে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং জনমানুষের কাঙ্খিত চাওয়ায় যে আইন তৈরি হয়েছে তাকে আবার কাটাছেঁড়ার কথা ভাবাটা কতটুকু যুক্তিসংগত আপনাদের মাধ্যমে আমি প্রশ্ন রাখলাম।

তিনি বলেন, আমি কারো প্রতিপক্ষ না। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় আমাকে চালকদের প্রতিপক্ষ বানানোর একটা অপচেষ্টা। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই আমি কারো প্রতিপক্ষ নই। প্রত্যেকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে নিসচা’র মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ট্রাফিক আইন মানতে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মোড়ে ক্যাম্পেইন ও পালিত কর্মসূচির আলোকে সমস্যা চিহ্নিত করে সরকারের কাছে তুলে ধরা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান ও শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে কি কি সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে তা চিহ্নিত করা এবং স্কুলের সামনের সমস্যা চিহ্নিত করে তা প্রতিকারে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হওয়া, বিদ্যমান চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান, পিটিআইয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, সেমিনারের আয়োজন, র‌্যালী এবং বাস টার্মিনালসমূহে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা। সেই সাথে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে ও বাস টার্মিনাল ছাত্রীদের মাঝে সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিসচা’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও প্রধান প্রশিক্ষক সৈয়দ এহসান উল হক কামাল। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন নাসিম রুমি। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক মিরাজুল মইন জয়।
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নিসচা’র উপদেষ্টা এএইচএম নোমান, যুগ্ম মহাসচিব সাদেক হোসেন বাবুল ও লায়ন গনি মিয়া বাবুল, দপ্তর সম্পাদক ফিরোজ আলম মিলন, প্রচার সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, সহ-প্রচার সম্পাদক সাফায়েত সাকিব, অ্যাডভোকেট রাবেয়া সুলতানা, এহসান জুয়েল, মঞ্জু, নুরে আলম, সিউলি আক্তার, রাইসিন গাজী, আনজুমান আরা তন্বি প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement