১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ্যাপস বাজারে বাংলাদেশি : অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য অপার সম্ভাবনা

-

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনায় রয়েছে। মোবাইল এ্যাপস ব্যবহার করে আমরা ট্যাক্সি ডাকছি, বাজার করছি, বিভিন্ন বিষয়ে আবেদনের ফরম আমরা এ্যাপস-এর মাধ্যমে পূরণ করছি। ট্রেন, বাস এমনকি সিনেমার টিকেটও এ্যাপসের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে আমার দিনদিন অভ্যস্ত হচ্ছি। আর ফেসবুক, ইউটিউিব তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিলিয়ন ডলারের অ্যাপস বাজারে বাংলাদেশি অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর কম্পিউটার কৌশল বিভাগের উদ্যোগে মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা সংক্রান্ত সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর ।

এদিকে ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর জানান, এই সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য ইতিমধ্যে ৩১ হাজার ৯৩০ জন আইটি প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল তৈরি করেছে সরকার। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে মোবাইল গেইম ও এ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নে স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির ওপর দেশব্যাপী বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ ইতিমধ্যে মোবাইল গেইম ও এ্যাপ্লিকেশন-এর দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প চালু রয়েছে। সুতরাং আমাদের উচিত হবে অ্যাপস ডেভলমেন্টের এই বিশাল মার্কেটকে কাজে লাগানো এবং দেশের নতুন নতুন ডেভেলপারদের জন্য উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। ভবিষ্যতে আমাদের দেশের এই অ্যাপ ডেভলপাররা বিদেশের মার্কেটপ্লেসে জায়গা করে নেবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় করবে।

সেমিনারে অন্যান্য বক্তরা বলেন, দিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় ব্যয় করছি কোন না কোন মোবাইল এপসে- হয় ফেসবুক, নয়তো টুইটার, জিমেইল, ইউটিউব, উবার, চালডাল কিংবা হোয়াটস এপ, ভাইবার ইত্যাদি। সারাবিশ্বে মোবাইল এপ্লিকেশন ইন্ডাস্ট্রি ২০২০ সালে ২০০ বিলিয়ন ডলার মার্কেটে পরিণত হবে। শুধুমাত্র এপল আর গুগলের প্লে স্টোরেই ৬ মিলিয়ন এরও বেশী মোবাইল এপ্লিকেশন রয়েছে।

বিশ্বে মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা ৭ বিলিয়ন এরও বেশী। আমাদের দেশে শুধুমাত্র স্মার্ট ফোন ইউজার ৩ কোটিরও বেশী এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা ২য়। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা প্রতিমাসে গড়ে ৩০টি মোবাইল এপ্লিকেশন ব্যবহার করে। বিশ্বের ১০ শতাংশ মানুষ প্রতি ৪ মিনিটে একবার স্মার্টফোনটি চেক করে যার ৯০ শতাংশ সময় কাটে কোনো না কোনো মোবাইল এপ্লিকেশনে। চতুর্থ শিল্প বিল্পবে যে সকল উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকহারে বিস্তার লাভ করবে বিশেষত আইওটির মত প্রযুক্তিগুলো অনেকটাই নির্ভর করবে মোবাইল এপ্লিকেশনের উপর।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ফিনল্যান্ডের হেনসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল এপস ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট প্রকৌশলী মেজবাহুল ইসলাম এবং ফিনল্যান্ডের হেনসিংকি বিশ^বিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ল স্পেশালিষ্ট ড. শাকিলা-বু-পাশা।

অনুষ্ঠানে আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. রনক আহসানের সঞ্জালনায় সভাপতিত্ব করেন, আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কানাডিয়ান ইউনির্ভাসিটি অফ বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। এছাড়া সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. তমিজ উদ্দীন আহমেদ। 


আরো সংবাদ



premium cement