২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কখন মনে হয়, সঙ্গী পরকীয়ায় জড়িত?

কখন মনে হয়, সঙ্গী পরকীয়ায় জড়িত - ছবি : সংগ্রহ

এখনকার যুগে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন কাজ। বর্তমান জীবনের ইঁদুরদৌড়ে পেশার কাছে হেরে যায় ভালোবাসা। অনেক সময়ই দেখা যায় পেশাগত জীবন ঠিক রাখতে গিয়ে সম্পর্কে ফাটল ধরে। জল গড়ায় ডিভোর্স পর্যন্ত।

ডেনমার্কে এই নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়। ১৯৮১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত যারা বিয়ে করেছে, তাদের নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়। সমীক্ষা অনুযায়ী অফিসে পুরুষ ও মহিলাদের অনুপাত এর একটি অন্যতম বড় কারণ। অফিসে যদি বিপরীত লিঙ্গের সহকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলেই বাড়িতে শুরু হয় অশান্তি। দিন যত বাড়তে থাকে, পরিস্থিতি খারাপের দিকে এগোতে থাকে।

এক্ষেত্রে বেশি সমস্যা ভোগ করতে হয় মেয়েদের। কারণ তাদের পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় পুরুষ পার্টনাররা এসব সহ্য করতে পারে না। ঝগড়া চরমে ওঠে। দেখা যায়, ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে কর্মরতা মহিলাদের ডিভোর্স বেশি হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে সমস্যা আবার অন্যরকম। যদি কোনো পুরুষের বস হয় কোনো মহিলা, তাহলে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অদ্ভুত মানসিকতা কাজ করে। মহিলাদের তারা খুব একটা সহ্য করতে পারে না। ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এমন হলে ডিভোর্সের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

শিক্ষাগত যোগ্যতাও ডিভোর্সের একটি অন্যতম কারণ। দেখা যায়, কেউ যদি তার সহকর্মীদের থেকে বেশি শিক্ষিত হয়, তার ডিভোর্স হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। তবে এটা কেন হয়, তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। এটি পুরুষ ও মহিলা, দু’জনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

তবে সবচেয়ে বেশি ডিভোর্স হয় সন্দেহবশত। দেখা যায়, অনেকসময় কাজের খাতিরে অনেককে অফিসে অতিরিক্ত সময় থাকতে হয়, ফোনেও অনেকটা সময় কাটে। এখান থেকেই জন্ম নেয় সন্দেহ। সঙ্গী মনে করে, তার বুঝি অন্য কোনো অ্যাফেয়ার চলছে। কিন্তু তা নয়। স্রেফ কাজের খাতিরেই এসব করতে হয়। কিন্তু তা বোঝে ক’জন? তার মানে অবশ্য এই নয় যে শুধু কাজে থাকলেই মানুষ এসব করে। পরকীয়ায় জড়ালেও এসব করে মানুষ। সেই বিচার করতে হবে খুব ধীরে ধীরে, সময় নিয়ে।

মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা
ডা: রুমানা চৌধুরী

বয়ঃসন্ধিকাল বলতে আমরা মূলত কৈশোর অর্থাৎ ১০-১১ বছর বুঝি। এ সময় শরীরের ভেতরে হরমোনগত পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক এবং শারীরিক নানা পরিবর্তন ঘটে। এ সময় আমাদের স্বভাবে ফুটে ওঠে কিছু বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তন। বয়ঃসন্ধিকালে যখন কোনো কিশোর-কিশোরী কোনো মানসিক রোগের শিকার হয়, সেটাকে তার বয়ঃসন্ধিকালের স্বভাবগত পরিবর্তন বলে ধরা হয়।

মানসিক রোগ শুরুর আগে রোগের পূর্বলক্ষণ বা সূচনা শুরু হওয়ায় সময়কে ‘প্রোড্রোমাল ফেজ’ বলে। এই সময়ের মানসিক পরিবর্তনগুলো অনেকসময় বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে মিলে যায়। ফলে যথার্থ সময় মানসিক রোগীকে চিহ্নিত করা মুশকিল হয়। আবার যথার্থ সময়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নিতে পারলে রোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। তাই প্রোডোমাল ফেজের লক্ষণগুলো জানা খুবই দরকার। মানসিক বিশেষজ্ঞরা রোগের লক্ষণ অনুযায়ী মানসিক রোগকে বহুভাগে ভাগ করেছেন। কিন্তু সাদামাটাভাবে আমরা দুই ধরনের রোগী দেখতে পাই।


এদের মধ্যে এক শ্রেণীর রোগী আছেন যারা বুঝতে পারেন যে তাদের কিছু সমস্যা আছে এবং তারা ডাক্তারের পরামর্শ বা সাহায্য চাইতে আসেন। এ ধরনের অসুখ সাধারণত নিউরোসিন শ্রেণীভুক্ত আরেক শ্রেণীর রোগী নিজেদের যেকোনো মানসিক সমস্যা আছে সেটা বুঝতে পারেন না বা স্বীকারও করেন না। বাইর থেকে তাদের আচার-আচরণের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। এ ধরনের অসুস্থতা সাধারণত সাইকোসিস শ্রেণীভুক্ত। এই সাইকোসিসের শুরুতে কিছু রোগে প্রাথমিক পূর্ব লক্ষণ ফুটে ওঠে। যেহেতু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের সূচনা হয় ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে। অতএব সহজেই আমরা একে বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন বলে মেনে নেই। তাই যৌবনের প্রারম্ভে ও যথার্থ সময়ে চিকিৎসা না করার দরুণ পরবর্তীতে তা সেরে উঠতে কখনো কখনো বেশ কয়েক বছর লেগে যায়। তবে চিকিৎসা করতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে রোগ নির্ণয়ও দেরি হতে পারে।

তাই বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখা দরকার এবং কোনোরকম অসঙ্গতি বা অস্বাভাবিক লক্ষ করা গেলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement