২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ রাশিয়ার - সংগৃহীত

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, বিশ্বের দেশগুলোর বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রবণতা থেকে বোঝা যায়, অবরোধ আরোপের জন্য সারাক্ষণ অজুহাতের সন্ধানে থাকে ওয়াশিংটন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রকে নিছক অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে আমেরিকা।  

জাখারোভা মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের খেলা আমেরিকাই আগে শুরু করেছে এবং মস্কো এর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। তুরস্ক, চীন, ইরান, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রবণা দেখলে মনে হয়, মার্কিন সরকার একটি প্রকৃত বাণিজ্যিক যুদ্ধ শুরু করতে চায়।

জাখারোভা বলেন, মস্কো বিশ্বাস করে, ক্রিমিয়া উপত্যকা নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে তার সব ছিল মিথ্যা ও বানোয়াট। নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আমেরিকার আসলে একটি অজুহাতের প্রয়োজন ছিল এবং তারা তা পেয়ে গেছে।

২০১৪ সালের ১৭ মার্চ ইউক্রেনের তৎকালীন প্রজাতন্ত্র ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত এক গণভোটে সেখানকার ৯৬.৮ শতাংশ জনগণ রাশিয়ায় যোগ দেয়ার পক্ষে রায় দেন। ওই রায়ের জের ধরে ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করে নেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ওই ঘটনার পর আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং রাশিয়ার সীমান্তের কাছে সামরিক তৎপরতা জোরদার করে। তবে পাশ্চাত্যের এসব তৎপরতা সত্ত্বেও রাশিয়া তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ পর্যন্ত কয়েকবার ক্রিমিয়া উপদ্বীপ সফর করেছেন।

পাকিস্তানকে সুখোই-৩৫ দিচ্ছে রাশিয়া

১৩ আগস্ট ২০১৮

এবার পাকিস্তানকে সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান সুখোই-৩৫ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর সাথে ভারত যৌথ উদ্যোগে ফিফথ জেনারেশন এয়ারক্রাফট তৈরি করতে চায়নি বলে রাশিয়া ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পাকিস্তানকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ান বিশেষজ্ঞরা দেশটিকে ভারতের বিষয়ে উৎসাহিত হওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সে কারণে রাশিয়া এখন ভারতের চেয়ে পাকিস্তানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

রাশিয়ার 'সেন্টার ফর এনালাইসিস অব স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড টেকনোলজি' এর কর্ণধার জানান, ‘ভারতকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে না, তবে এই মুহূর্তে পাকিস্তানকে সুখোই বিমান না দেয়া হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাজার ধরে ফেলবে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, এমনকি তুরস্কের মতো দেশ।’

২০০৭ সালে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে যৌথভাবে এয়ারক্রাফট তৈরি করার চুক্তি হয়। কিন্তু চলতি বছর জুলাইতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, রাশিয়া একাই ওই প্রজেক্ট চালাক। প্রয়োজনে শেষের দিকে ভারত যোগ দেবে। ভারত এভাবে মুখ ঘুরিয়ে নেয়ায় অসন্তুষ্ট রাশিয়া।

ওই বিশেষজ্ঞ আরো জানান, ‘এর আগে ভারতের স্বার্থে পাকিস্তানের সাথে অনেক লোভনীয় চুক্তি বাতিল করেছে রাশিয়া। কিন্তু এবার নিজেদের আর্থিক উন্নতির দিকে নজর দেয়া উচিত।

পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানকে রাশিয়ার কাছাকাছি আসতে দেখা যাচ্ছে। কারণ ৯/১১ এর পর থেকে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কে কিছুটা ছেদ পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের।

ইরানকে ইউরেনিয়াম দিচ্ছে রাশিয়া
টাইমস অব ইসরাইল ও স্পুটনিক নিউজ, ১৩ আগস্ট ২০১৮

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের সম্পর্কে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তেহরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বহাল করেছে ওয়াশিংটন। তার মধ্যেই দেশটিকে আবারো পরমাণু অস্ত্র তৈরির রসদ দিচ্ছে রাশিয়া।

ইরানের আণবিক শক্তি কমিশনের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি জানিয়েছেন- তেহরানের সাথে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণু চুক্তির আওতায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম শিগগিরই সরবরাহ করা হবে। সমৃদ্ধ করার জন্য এ ইউরেনিয়াম মস্কোয় পাঠানো হয়েছিল।  এসব ইউরেনিয়াম তেহরানের পারমাণু চুল্লিতে ব্যবহৃত হবে।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্ব শক্তির সাথে জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) বা ইরান পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। চুক্তি অনুযায়ী তেহরান মধ্য-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পরিত্যাগ ও ইউরেনিয়ামের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে সম্মত হয়। গত এপ্রিলে ইরান সতর্ক করে দিয়ে জানায়, যদি যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তারা কৌশলগতভাবে উচ্চ-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে তারা ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারত।

কামালভান্দি বলেন, ‘আমরা যখন পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করি, তখন আমরা ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি উৎপাদন বন্ধ করে দিই। দিয়ে প্রায় দশ কিস্তিতে তা রাশিয়ায় মজুদ করি। প্রায় সাত মাস আগে আমরা সেখান থেকে প্রথম কিস্তি ফেরত পেয়েছি। আর দ্বিতীয় কিস্তি ইরানে পৌঁছানোর অপেক্ষায় রয়েছে। এসব কিস্তির যে কোনোটি এক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়। আর তেহরান পারমাণু চুল্লির জন্য আমাদের কাছে সাত-আট বছরের ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ জ্বালানি রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী বাইরে থেকে জ্বালানি সরবরাহের শর্তে ইরান ইউরেনিয়াম উৎপাদন বন্ধ রেখেছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। কামালভান্দি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি সক্রিয় থাকলে, অন্য পক্ষগুলো আমাদের কাছে জ্বালানি বিক্রি করবে। আর চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে আমরা নিজেদের জন্য নির্বিঘ্নে ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করব।

চলতি বছরের মে মাসে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশ ও সংস্থা চুক্তিটি বহাল রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করা অন্য দেশগুলো হচ্ছে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।


আরো সংবাদ



premium cement