২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের পতন অনিবার্য!

যুক্তরাষ্ট্রের পতন অনিবার্য! - সংগৃহীত

ইরানের আইআরজিসি'র কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সুলাইমানি বলেছেন, ইরানের সাথে যুদ্ধ শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের পতন অনিবার্য। যুক্তরাষ্ট্রে তার সব কিছু হারাবে। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করলে এর সমাপ্তিটা কেমন হবে তা আমরা নির্ধারণ করব। সম্প্রতি হামেদানে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেছেন।

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় জেনারেল সুলাইমানি আরো বলেছেন, ট্রাম্প জুয়াড়ির ভাষায় কথা বলেন। ইসলামি ইরানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জবাব পাওয়ার মতো মর্যাদার অধিকারী ট্রাম্প নন।

গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,আমেরিকাকে কখনো আর হুমকি দেবেন না। দিলে এমন পরিণাম ভোগ করবেন, ইতিহাসে যাদের সংখ্যা খুব অল্প।

এর জবাবে কাসেম সুলাইমানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনি ইরানকে ইতিহাসের বিরল পরিণতির হুমকি দিচ্ছেন। আপনি আপনার সামরিক কমান্ডার, রাজনীতিবিদ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছ থেকে জেনে নিন যে, তারা গত কয়েক দশকে কী করতে পেরেছে।

কুদস ফোর্সের প্রধান আফগানিস্তানে মার্কিন অপরাধযজ্ঞের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমেরিকা এক লাখ ১০ হাজার সেনা, হাজার হাজার ট্যাঙ্ক ও সাজোয়া যান, শত শত উন্নত জঙ্গিবিমান ও হেলিকপ্টারসহ ব্যাপক সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে তালেবানের মতো একটি দুর্বল সংগঠনের ওপর হামলা চালিয়েও কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারে নি।

ইরাকে মার্কিন নির্মমতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইরাকে মার্কিনীদের নৃশংসতা মধ্যযুগের পাশবিকতাকেও হার মানিয়েছে। তারা ট্যাঙ্ক নিয়ে ঘরবাড়িতে ঢুকে সেখানকার অধিবাসীদেরকে ট্যাঙ্কের নিচে পিষে মেরেছে। তারাই ইরাকে আবু গারিব বন্দিশিবির গড়ে তুলেছিল। এসব কলঙ্ক কখনোই মুছে যাবে না।

আইআরজিসি'র কুদস ফোর্সের প্রধান আরো বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ৩৩ দিনের যুদ্ধে আমেরিকা ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়েছে। কিন্তু তাদের পরাজয় ঘটেছে। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহযোগিতায় ২ লাখ কোটি ডলার নিয়ে ইয়েমেনে হামলা শুরু করেছে। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকা এমন সময় ইরানকে হুমকি দিচ্ছে যখন তারা লোহিত সাগরকে অনিরাপদ করে তুলেছে এবং বছরের পর বছর ধরে সৌদি আরব নিরাপদ দেশ হিসেবে থাকলেও এখন দেশটিতে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পড়ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাকে মোকাবেলা করার জন্য ইরানের গোটা সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন নেই। আইআরজিসি'র কুদস ফোর্স একাই যথেষ্ট। আমরা সব জায়গায় আছি। কারণ আমরা হলাম শাহাদাৎপিয়াসী জাতি। আমরা অনেক কঠিন পথ ও ঘটনা পাড়ি দিয়ে এসেছি।

সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা দিচ্ছে দখলদার মার্কিন বাহিনী: হিজবুল্লাহ

সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোয়াইদা প্রদেশে ধারাবাহিক হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত ও কয়েক ডজন মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় কড়া নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এবং লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ।

হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে সোয়াইদা প্রদেশে ধারাবাহিক বোমা হামলা এবং গুলিবর্ষণে নিহত ব্যাক্তিদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘাত শুরু হওয়ার পর এটিকে সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে বড় ধরনের বর্বরোচিত হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। চার আত্মঘাতী ব্যক্তি সোয়ইদা প্রদেশে বোমা হামলা চালায় এবং অন্য সন্ত্রাসীরা ছোট ছোট গ্রাম ও আবাসিক এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে বহু বেসামারিক ব্যক্তিকে হত্যা করে। হামলায় ২৪৬ জন নিহত হয়েছে বলে সিরিয়ার কথিত মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে, সন্ত্রাসী হামলা প্রমাণ করেছে যে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বাহিনী নিজেদের অসৎ এবং আগ্রাসী লক্ষ্য অর্জনের জন্য দায়েশের মতো উগ্র ও হিংস্র সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করছে। এছাড়া, হিজবুল্লাহ দামেস্ক-বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সহযোগিতার নিন্দা জানিয়েছে। সিরিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধযজ্ঞে দখলদার মার্কিন বাহিনী সন্ত্রাসীদেরকে সামরিক ও অন্যান্য সহযোগিতা দিচ্ছে বলেও সংগঠনটি তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গতকাল বুধবার সিরিয়া বিষয়ে রাশিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি আলেক্সান্ডার লেভরেন্তিভের সঙ্গে বৈঠকে তার দেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দেয়ার কাজে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলোর নিন্দা জানান।

হরমুজে ইরানের হাতে সবার নিরাপত্তা

মধ্যপ্রাচ্যের হরমুজ প্রণালী দিয়ে চলাচল করা সব দেশের জাহাজের নিরাপত্তা ইরানের হাতে। ইরান তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই কেবল সেখান থেকে জাহাজ চলাচল করতে পারে। শুক্রবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান সমন্বয়কারী রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুল্লাহ সাইয়ারি এ মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, ইরান নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই কেবল হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল রফতানি অব্যাহত থাকবে। তবে ইরান শুধু নিজের জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না। সব দেশের জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। ইরানের নৌবাহিনী পারস্য উপসগার, হরমুজ প্রণালী, এর পূর্বাঞ্চল, ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ এবং ওমান সাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছে। ইরান বারবারই এ কথা ঘোষণা করেছে যে, পারস্য উপসাগরে বিদেশি সেনা উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। আঞ্চলিক দেশগুলো সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম।

ইরান এর আগে হুমকি দিয়ে বলেছে, ইরানকে তেল বিক্রি করতে দেয়া না হলে হরমুজ প্রণালী দিয়ে অন্যরাও তেল বিক্রি করতে পারবে না।


আরো সংবাদ



premium cement