২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

চীনকে চোর বললো ট্রাম্প, ট্রাম্পকে বোকা বললো চীন

চীনকে চোর বললো ট্রাম্প, ট্রাম্পকে বোকা বললো চীন - সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিদ্রুপ করে চীনা গণমাধ্যম লিখেছে, ‘জ্ঞানীরা সেতু গড়ে, আর বোকারা গড়ে দেয়াল’। চীনা পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্প আরোপের যে ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, তার প্রেক্ষীতেই চীনের এমন কটাক্ষ।

৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের উপর এই শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব চুরিরও অভিযোগ তুলে।

এর জবাবে চীন জানায়, তারাও যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের ৬৫৯টি মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় শেয়ার বাজারেও পতন ঘটেছে।

আমেরিকান প্রযুক্তি ও মেধাস্বত্বের অন্যায় পাচার রোধ করতে এই শুল্ক আরোপ আবশ্যকীয় উল্লেখ করে ট্রাম্প জানিয়েছে, এতে আমেরিকান চাকরি রক্ষা পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া একটি সম্পাদকীয়তে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের নিরসনে বাজারকে আরও উন্মুক্ত করাই সঠিক পন্থা উল্লেখ করে লিখেছে, “জ্ঞানীরা সেতু গড়ে, আর বোকারা গড়ে দেয়াল।”

ইংরেজি ভাষার চীনা দৈনিক দ্য গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করছেন ট্রাম্প, তিনি ভোটারদের কাছে এমন আবেদন তৈরি করতে চান যেনো তিনি তাদের জন্যই যুদ্ধ করছেন।

চীন ঘোষণা করেছে, কৃষি পণ্য, গাড়ি এবং সামুদ্রিক পণ্যের মতো ৩৪ বিলিয়ন মূল্যের মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক কার্যকর হবে ৬ জুলাই থেকে। বাকি পণ্যগুলোর উপর শুল্ক কার্যকরের বিষয়টি পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে জিনহুয়া।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বার্ষিক বাণিজ্যে ৩৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের ৮০০ চীনা পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কার্যকর হবে ৬ জুলাই থেকে।

বাকি ১৬ বিলিয়ন মূল্যের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করবেন, এবং তা পরবর্তীতে কার্যকর হতে পারে বলেও জানিয়েছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, যেন যুদ্ধের দামামা বাজছে
রয়টার্স ও পার্সটুডে

আবারও বাজছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের দামামা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার শুল্কারোপ করেছেন। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মেধাস্বত্ত্ব চুরির অভিযোগ তুলে আরোপিত এই শুল্ক আগামী ৬ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। 

এই বার্তা সংস্থাটি বলছে, নতুন এই মার্কিন সিদ্ধান্তের কারণে চীনের ৮০০-এর বেশি প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের ওপর এর প্রভাব পড়বে। আর এরই পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫৯টি পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক বসিয়েছে চীন। এসব পণ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, চীনের কয়েকশ’ পণ্যের ওপর মার্কিন সরকার নতুন করে শুল্ক আরোপ করার পর চীন এই পাল্টা ব্যবস্থা নিলো।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সয়াবিনের মতো তিন হাজার চারশ’ কোটি ডলার মূল্যের কৃষিপণ্য আমদানির ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তারা জানাচ্ছে, আগামী ৬ জুলাই থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন যেসব পণ্য আমদানি করে তার মধ্যে আর্থিক মূল্যে সয়াবিন হচ্ছে প্রধান।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন যে এক হাজার ছয়শ’ কোটি ডলারের অপরিশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও কিছু পরিশোধিত তেল আমদানি করে সেসব পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক কবে থেকে বাস্তবায়ন করা হবে সেটির তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পাঁচ হাজার কোটি ডলারের পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক বসান। চীনের এক হাজার তিনশ’ রকমের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক বসানোর জন্য চলতি বছরের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল।

এর জবাবে গেলো এপ্রিল মাসে চীন ১০৬টি মার্কিন পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ হারে শুল্ক বসায়। ওই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমান কেনার ওপরও শুল্ক আরোপ করার কথা বলা হয়েছিল। তবে নতুন তালিকায় বিমান কেনার ওপর শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়নি।

ট্রাম্পকে শিক্ষা দিতে চায় ভারত ও চীন

সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক বসিয়ে ২৪১ মিলিয়ন ডলার আদায় করা শুরু করেছিল মার্কিন প্রশাসন। এবার তার জবাব দিল নয়াদিল্লি। ৩০টি মার্কিন দ্রব্যের উপর ৫০% শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। সেইমতো তালিকা প্রস্তু করে জমা দেওয়া হয়েছে WTO-র কাছে। 

গত মার্চে ভারতীয় স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। যার জেরে ক্ষতির মুখে পড়ে এদেশীয় ব্যবসায়ীরা। উল্টে ২৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লাভ করছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু, এবার পালটা মার্কিন পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক বাড়াল ভারত। 

গতমাসেই আপেল, বাদাম এবং মোটরসাইকেল-সহ ২০টি মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক বাড়িয়েছিল নয়াদিল্লি। যা নিয়ে G7 বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার নয়াদিল্লির এই নতুন সিদ্ধান্তে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া কী হয় দেখার। ২০১৬-১৭ আর্থিকবর্ষে মোট ৪২.২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমেরিকা থেকে রপ্তানি করেছিল ভারত। এবং ২২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল।

মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসেবে চীন আমেরিকার ৬৫৯টি পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শূল্ক বসিয়েছে। এসব পণ্য দিয়ে দু দেশের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়। চীনের কয়েকশ রকমের পণ্যের ওপর মার্কিন সরকার নতুন করে শূল্ক আরোপ করার পর চীন এই পাল্টা ব্যস্থা নিল।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সয়াবিনের মতো তিন হাজার চারশ কোটি ডলার মূল্যের কৃষিপণ্য আমদানির ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শূল্ক আরোপ করা হয়েছে এবং আগামী ৬ জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে।

আমেরিকা থেকে চীন যেসব পণ্য আমদানি করে তার মধ্যে আর্থিক মূল্যে সয়াবিন হচ্ছে প্রধান। এছাড়া, আমেরিকা থেকে চীন যে এক হাজার ছয়শ কোটি ডলারের অপরিশোধিত তেল, প্রকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও কিছু পরিশোধিত তেল আমদানি করে সেসব পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শূল্ক কবে থেকে বাস্তবায়ন করা হবে তার তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।

এর আগে, গত এপ্রিল মাসে চীন ১০৬টি মার্কিন পণ্যের ওপর শতকরা ২৫ ভাগ হারে শূল্ক বসিয়েছে। সে তালিকায় আমেরিকা থেকে বিমান কেনার ওপরও শূল্ক আরোপ করার কথা বলা হয়েছিল তবে নতুন তালিকায় তার নাম উল্লেখ করা হয় নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পাঁচ হাজার কোটি ডলারের পণ্যর ওপর শতকরা ২৫ ভাগ শূল্ক বসিয়েছেন। চীনের এক হাজার তিনশ রকমের পণ্যের ওপর বাড়তি শূল্ক বসানোর জন্য চলতি বছরের প্রথম দিকে আমেরিকা একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল।

চীনা পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করলো আমেরিকা
মেধাস্বত্ত্ব চুরির অভিযোগ তুলে আরোপিত এই শুল্ক আগামী ৬ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। নতুন এই মার্কিন সিদ্ধান্তের কারণে চীনের আটশোরও বেশি প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের ওপর এর প্রভাব পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কারোপের কারণে চীন কোনো পাল্টা ব্যবস্থা নিলে নতুন করে আরও পণ্যের ওপর ১৬ বিলিয়ন ডলার শুল্কারোপের কথাও জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।

যদিও এরই মধ্যে চীন সমপরিমাণ পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে। আর এতে করে বাণিজ্যযুদ্ধের আশংকা বাড়ছে।

ওয়াশিংটন চায়, আমেরিকার পণ্যের ডিজাইন ও ধারণার অনুকরণে পণ্য উৎপাদনের চর্চা বন্ধ করুক বেইজিং।


আরো সংবাদ



premium cement