২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজা সীমান্তে ইসরাইলের যুদ্ধপ্রস্তুতি, একদিনেই নিহত ২৪

গাজা সীমান্তে মোতায়েনকৃত ইসরাইলের সাঁজোয়া যান - ছবি : এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলায় প্রতিরোধ আন্দোলন ইসলামী জিহাদের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দখলদার বাহিনীর হামলায় বুধবার পর্যন্ত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৯ জন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই হামলা এখনো অব্যাহত আছে। যাতে এখন পর্যন্ত ২৪ ফিলিস্তিনির প্রাণহানিসহ আরো কমপক্ষে ৫৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

যদিও ইহুদি রাষ্ট্রটির গণমাধ্যমগুলো জানায়, গাজা সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছে ইসরাইল। এই সেনাবহরে রয়েছে- আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ইউনিট, সামরিক গোয়েন্দা এবং হোম ফ্রন্ট কমান্ডের সদস্যরা। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের হোম ফ্রন্ট কমান্ডের সেনাদের সাধারণত দেশের গুরুতর সঙ্কট ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মোতায়েন করা হয়।

মঙ্গলবার অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে বোমা হামলা চালিয়ে ইসলামী জিহাদের বাহা আবু আল-আতা নামে এক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করা হয়। ইসরাইলি হামলায় আতার স্ত্রীও নিহত হন। এছাড়া ইসলামী জিহাদের এক কর্মকর্তার দামেস্কের বাড়িতে আরেক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওই কর্মকর্তারা ছেলেসহ দুইজন নিহত হন। তাদের রাজধানীতে এ হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে সিরিয়া, কিন্তু ইসরাইল কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে।

এরপরই ইসরাইল ও গাজার মধ্যে গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র লড়াই শুরু হয়। সারা দিন ধরে ইসরাইলে প্রায় ২০০ রকেট নিক্ষেপ করে ইসলামী জিহাদের যোদ্ধারা। ইসরাইলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ২০টির মতো রকেট প্রতিরোধ করে। গাজা থেকে ছুটে আসা রকেটে প্রায় ২৫ জন ইসরাইলি জখম হন। কিছু রকেট ইসরাইলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত তেল আবিব শহরে গিয়েও পড়ে।

জবাবে ইসরাইলও গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালায়। পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কায় রকেট হামলার আওতায় থাকা এলাকাগুলোর স্কুল বন্ধ রেখেছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় নয় এমন সব ধরনের কাজও বাতিল করেছে তারা। সারা দিন ধরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসরাইল গাজার শাসক দল হামাসের কোনো লক্ষ্যে হামলা করেনি। চলতি লড়াই থেকে হামাসকে দূরে রাখতেই ইসরাইল এ কৌশল নিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদপত্র হারেৎজ।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাসের কোনো অবস্থানে হামলা হলে আর তাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে গোষ্ঠীটি এ লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়বে, কিন্তু চলতি লড়াইয়ে হামাসকে জড়ানোর কোনো আগ্রহ তাদের নেই। এ সঙ্ঘাতে হামাস জড়িয়ে পড়লে লড়াইয়ের চরিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ তাদের সামরিক সামর্থ্য ইসলামী জিহাদের চেয়ে অনেক বেশি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হামাসও নিজেদের এ সঙ্ঘাত থেকে দূরে রেখেছে।

এ দিকে নতুন করে শুরু হওয়া এ সঙ্ঘাত থামানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। এ লক্ষ্যে বিশ্ব সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত মিসরের রাজধানী কায়রোর পথে রওনা হয়েছেন বলে কূটনৈতিক একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement