২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

নিহত ফিলিস্তিনির বাড়িতে ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংসতা

- ফাইল ছবি

ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গতকাল বুধবার এক ফিলিস্তিনির বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের একটি হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতারের চেষ্টাকালে ইসরাইলি পুলিশ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।

গত ৯ ডিসেম্বর ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওফরা বসতির কাছে ইসরাইলি ওই হামলায় সাতজন আহত হয়। আহতদের একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী। পরে তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। সন্দেহভাজন বন্দুকধারী সালাহ বারগুতিকে গ্রেফতার করতে ১২ ডিসেম্বর ইসরাইলি সৈন্যরা অভিযান চালায়। এ সময় গুলিতে তিনি নিহত হন।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর জানায়, বুধবার সীমান্ত পুলিশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রামাল্লাহ পশ্চিম তীর নগরীর উত্তরে অবস্থিত কোবার গ্রামের ওই অ্যাপার্টমেন্টটি ধ্বংস করে। ওই বাড়িটিতে সালাহ বারগুতি বাস করতেন। সীমান্ত পুলিশ ৭ মার্চ বারাগুতির ভাই আসসামের বাড়িও ধ্বংস করেছে। তার বাড়িটিও একই গ্রামে অবস্থিত। ১৩ ডিসেম্বর পৃথক বন্দুক হামলায় দুইজন সৈন্যের নিহতের ঘটনায় আসসাম বারগুতির বিচার চলছে। তার বিরুদ্ধে ওফরা হামলায় ভাইকে সহায়তার অভিযোগও আনা হয়েছে।

মানা হলো বন্দীদের দাবি 
এদিকে টানা অনশন ধর্মঘটের আট দিন পর ফিলিস্তিনি বন্দীদের দাবি মেনে নিয়েছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনের বন্দী বিষয়ক তথ্য কেন্দ্র মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের কারা কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইল শেষ পর্যন্ত বন্দীদের দাবিগুলো মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে কারাগার থেকে নয়েজ ডিভাইস প্রত্যাহার, কারাগার প্রাঙ্গণে টেলিফোন বক্স স্থাপন এবং স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ। গত সপ্তাহে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারের চার শ’র বেশি বন্দী বিভিন্ন দাবিতে অনশন ধর্মঘট শুরু করে। 

টানা অনশনের কারণে ধর্মঘটী ফিলিস্তিনি বন্দীদের অনেকেই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ ছাড়া আরো এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দী অনশন ধর্মঘটে অংশ নেয়ার হুমকি দিয়েছিল। ফিলিস্তিনি বন্দীরা প্রথম থেকেই কারাগারগুলোর অবস্থা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। বন্দীরা বলছেন, ইসরাইলি কারাগারগুলোর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন ক্রমেই বাড়ছে। পশুদের সাথেও এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয় বলে তারা মন্তব্য করেছেন।

 

আরো পড়ুন : পানিও দেয়া হয় না বন্দি ফিলিস্তিনি শিশুদের
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:৩৮

২০১৫ সাল থেকে কমপক্ষে ৬ হাজার ইসরাইলি শিশুকে আটক করেছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি শিশু দিবস উপলক্ষে শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, আটককৃত শিশুদের ৯৮ শতাংশই বন্দী অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। সংস্থাটি জানায়, প্রথমে গুলি করে আহত করার পর শত শত ফিলিস্তিনি শিশুকে আটক করে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

রামাল্লাহভিত্তিক কারাবন্দী বিষয়ক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কমিটির তথ্য অনুযায়ী বর্মানে ইসরাইলের কারাগারে বন্দী রয়েছে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি। এদের মধ্যে ৪৮ নারী ও ২৫৯ জন শিশু রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি অনুযায়ী দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ইসরাইলি বাহিনীর হামলা-নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে এখানকার শত শত শিশু প্রতি মাসে অন্তত একবার গ্রেফতারের ঝুঁকিতে থাকে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাতের বেলা চালানো অভিযানে শিশুদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ ও আটক কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের খাবার ও পানি বঞ্চিত করে রাখা হয়। শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় একজন অভিভাবকের উপস্থিতির অধিকার প্রায়ই লঙ্ঘন করা হয়। এসব শিশুদের প্রায়ই হিব্রু ভাষায় লেখা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়- যদিও ওই ভাষা তারা বোঝে না।

আটক শিশুদের মুক্তি দেয়া হলেও প্রায়ই তারা দুঃস্বপ্ন দেখে, নিদ্রাহীনতায় ভোগে, স্কুলে অমনোযোগী হয়ে যায় আর পরিবার ও সমাজের পরিবেশের যেকোনো ঘটনাতেই অল্পতেই রেগে যায়। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে ফিলিস্তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল